পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নিচ্ছে না পৌর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। এই অভিযোগে আজ, বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করবেন প্রায় পঞ্চাশ জন অভিভাবক। তাঁদের অভিযোগ, প্রায় এক মাস স্কুলে ক্লাস শুরু হয়ে গেলেও প্রধান শিক্ষিকা তাঁদের মেয়েদের ভর্তি নিচ্ছেন না।
মঙ্গলবার ওই অভিভাবকেরা মেয়েদের নিয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) শরদ দ্বিবেদীর দফতরের সিঁড়িতে অবস্থানে বসেন। পরে জেলা স্কুল সমূহের পরিদর্শক আব্দুল হাই ও অতিরিক্ত জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনায় কোনও সমাধান সূত্র বেরোয়নি বলে জানান অভিভাবকেরা। অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, “ওঁদের বলেছি, জেলা শিক্ষা দফতর ওই স্কুলে ছাত্রী ভর্তির ব্যাপারে ব্যবস্থা নিয়েছে। তাই আলাদা ভাবে আমার কিছু করার নেই।” আব্দুল হাই বলেন, “আমরা রাজ্য সরকারের নির্দেশ হাতে পেয়েছি। তাতে বলা হয়েছিল, ওই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণি উর্ত্তীণ ছাত্রীদের পঞ্চম শ্রেণিতে ও পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণদের ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি নিতে হবে। সেই নির্দেশ আমি প্রধান শিক্ষিকার কাছে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি সরকারি নির্দেশ অগ্রাহ্য করেছেন। এই ঘটনার কথা রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরকে জানিয়েছি।”
এ দিন সকালে ওই স্কুলের চত্বরে থাকা প্রাথমিক বিভাগ থেকে চতুর্থ শ্রেণি উত্তীর্ণ প্রায় ৫০ জন ছাত্রীকে সঙ্গে নিয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসকের (সাধারণ) অফিসের গেট আটকে বসে পড়েন অভিভাবকেরা। অভিজিৎ সরকার, দোলন মোহন্ত, মহম্মদ ইলিয়াসেরা বলেন, “স্কুলে ভর্তি হতে না পেরে মেয়েরা কান্নাকাটি করছে। একমাত্র ওই স্কুলেই চতুর্থ শ্রেণি উত্তীর্ণ ছাত্রীদের ভর্তি করানো হয়নি। প্রধান শিক্ষিকা আমাদের সঙ্গে দুর্বব্যহার করছেন। স্কুলে গেলে পুলিশ ডেকে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যাচ্ছি।”
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য যোগাযোগ করা হলে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা স্বপ্না সিংহ ফোন ধরেননি। তবে স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক মহম্মদ ইজাজ বলেন, “ওই স্কুলের সঙ্গে একই চত্বরে যে অন্য স্কুলটি রয়েছে, সেটি মোটেই প্রাথমিক বিদ্যালয় নয়, নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়। সেখানে পঞ্চম শ্রেণিও রয়েছে। ওই ছাত্রীদের অনায়াসেই সেখানে ভর্তি করাতে পারেন অভিভাবকেরা। কিন্তু স্কুল সমূহের পরিদর্শক এবং ওই অভিভাবকেরা জেদ ধরেছেন, উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতেই ওই ছাত্রীদের ভর্তি করাতে হবে।” তাঁর দাবি, “রাজ্য সরকারের নির্দেশের কথা জানি না। তবে কয়েক দিন আগে কলকাতায় আমরা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের সামনে জানিয়েছি, পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ হওয়ার পরে সব ছাত্রীকে আমাদের স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি নেওয়া হবে।” |