একই দিনে দু’টি পৃথক দুর্ঘটনায় উত্তরবঙ্গের দুই জেলায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। মালদহের গাজল থানা এলাকায় সকাল ৭টা নাগাদ বড় দুর্ঘটনাটি ঘটে। সেখানে তীব্র গতিতে ছুটে আসা একটি ট্রাক আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রী বোঝাই বাসের পেটে ধাক্কা মারলে ঘটনাস্থলেই ৬ জনের মৃত্যু হয়। জখম হয়েছেন ৪৯ জন যাত্রী। তাঁদের মধ্যে ১৮ জনকে মালদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম কমলকান্তি কুমার (৪১), বাবলু দাস (২৭), আলমগির মণ্ডল (৫৫), জিরেন বর্মন (৪৫), সুব্রত সাহা (৪২)। এক জন চল্লিশোর্ধ্ব যাত্রীর পরিচয় রাত পর্যন্ত জানা যায়নি। দুর্ঘটনার পরেই ট্রাকের চালক পালিয়ে যায়। |
সোমবার ভোরে আর একটি ঘটনাটি ঘটে ইসলামপুরের গোয়ালপোখর থানা এলাকায়। সেখানে পিকনিকের গাড়ি রাস্তার ধারে উল্টে থাকা একটি ট্রাকে ধাক্কা মারলে দু’জনের মৃত্যু হয়। জখম হয়েছেন ১৫ জন। পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম সমীর বিশ্বাস (২৭) এবং সুকান্ত হালদার (২৬)। সমীরের বাড়ি বহরমপুরে। তিনি ওই বাসের খালাসি ছিলেন। সুকান্তের বাড়ি ভগীরথপুরে। বহরমপুরের ৬৪ জনের ওই দলটি বাসে কার্শিয়াঙের দুধিয়ায় পিকনিক করতে যাচ্ছিল। |
দুর্ঘটনার খবর পেয়েই মালদহের গাজলে যান রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পরে তিনি মালদহ জেলা সদর হাসপাতালে গিয়ে জখমদের দেখেন। মৃতদের পরিবার পিছু ৫০ হাজার টাকা ও জখমদের চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন তিনি। গাড়ি দুর্ঘটনা রুখতে চালকদের বিরুদ্ধে যাতে আরও কড়া আইন প্রয়োগ করা যায় তার জন্য পরিবহণ আইন (মোটর ভেহিক্যালস অ্যাক্ট) বদলানো হবে বলে পরিবহণমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। মদনবাবু বলেন, “এখন চালকেরা জানেন, যাত্রী কিংবা পথচারীর মৃত্যু হলে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা হবে। এটা বদলাতে হবে। যে গাড়ির ধাক্কায় কারও মৃত্যু হবে তার চালকের বিরুদ্ধে সরাসরি ফৌজদারি দণ্ডবিধি অনুযায়ী অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়েরের ব্যবস্থা করতে হবে। তাই আইন বদলানো জরুরি। শীঘ্রই মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।” |
কিন্তু পুলিশ-প্রশাসন ও পরিবহণ দফতরের অফিসারদের অনেকেই মনে করছেন, নতুন আইন চালুর বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের অবকাশ রয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, বর্তমানে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা করা যায়। তাতে সর্বোচ্চ সাজা ৬ মাসের জেল। এতে দুর্ঘটনা-বিমার টাকা পাওয়া যায়। কিন্তু, খুনের মামলা রুজু হলে মালিক বিমার টাকা আদায় করতে পারবেন না। পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, “সব দিক খতিয়ে দেখেই এগোতে হবে।” |
মালদহের গাজলে মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি। |