ছোট চৌকিরবস গ্রামের গৃহবধূ কবিতা দেবনাথের উপর অত্যাচারের ঘটনার মূল অভিযুক্ত সুভাষ দেবনাথ গ্রেফতার না হওয়ায় এলাকাবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। বর্তমানে তিনি আলিপুরদুয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আজ, মঙ্গলবার ওই গ্রামে গিয়ে ঘটনার সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর নেবে সিপিএমের একটি প্রতিনিধি দল। গত ১০ জানুয়ারি বাড়ির সুপারি বিক্রির অভিযোগে ওই বধূর উপর শ্বশুরবাড়ির লোকজন অত্যাচার চালান বলে অভিযোগ। গাছে বেঁধে মারধরের পাশাপাশি জল খেতে চাইলে ওই বধূর মুখে প্রস্রাব করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর ভাসুর প্রদীপ দেবনাথের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই মহিলাকে উদ্ধার করে। কবিতাদেবী পুলিশে অভিযোগ জানানোর পর তাঁর শ্বশুর, শাশড়ি, ভাসুর এবং জা’কে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু ঘটনার মূল অভিযুক্ত বধূর খুড়শ্বশুর সুভাষ দেবনাথকে পুলিশ ধরতে পারেনি। পুলিশের অনুমান, ঘটনার পর তিনি অসমে পালিয়ে গিয়েছেন। ইতিমধ্যে অসম পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করছে শামুকতলা থানার পুলিশ। এদিকে ঘটনার দুই সপ্তাহ পরেও মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার না করতে পারায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বাসিন্দারা প্রশ্ন তোলা শুরু করেছেন। |
আলিপুরদুয়ারের এএসপি অনুপ জয়সোয়াল বলেন, “মূল অভিযুক্তের খোঁজ চলছে। অসমে সে লুকিয়ে রয়েছে কি না তাও দেখা হচ্ছে।” ইতিমধ্যে ঘটনার সঙ্গে নাম জড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশ নেতারও। প্রথমে পুলিশকে মূল অভিযুক্তকে না ধরার কথা বলা এবং বিষয়টি মিটমাট করার জন্য কবিতাদেবীকে নানা প্রলোভন দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কবিতাদেবী বলেন, “আমি অভিযুক্তদের শাস্তি চাই। কয়েক লক্ষ টাকা নগদ দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। আমি টাকা, জমি চাই না। ছেলেকে নিয়ে সুস্থভাবে বাঁচতে চাই।” যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে কেউ এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। আলিপুরদুয়ার অভিভাবক মঞ্চের সম্পাদক ল্যারি বসু বলেন, “দুই সপ্তাহ হয়ে গিয়েছে। মূল অভিযুক্ত কেন গ্রেফতার হল না, সেটাই বোঝা যাচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রীকে সমস্ত কিছু জানানো হয়েছে। শিশুপুত্র সমেত কবিতাদেবীর কোনও ব্যবস্থা করার জন্য আমরা প্রশাসনকে বলেছি।” বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে বলে আলিপুরদুয়ারের মহকুমা শাসক অমলকান্তি রায় জানিয়েছেন। কুমারগ্রামের বিধায়ক দশরথ তিরকেও বিষয়টি দেখছেন বলে জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, কবিতাদেবী শ্বশুরবাড়ির মধ্যেই একচিলতে ঘরে শিশুপুত্রকে নিয়ে থাকতেন। তাঁর স্বামী ভিন রাজ্যে থাকেন। দিনমজুরি করে তিনি সংসার চালাতেন। ওই বধূর উপর অত্যাচারের ঘটনার অভিযুক্ত প্রদীপ দেবনাথের ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যপদ বাতিল করে দিয়েছে স্থানীয় যশোডাঙা ব্যবসায়ী সমিতি। সংগঠনের সভাপতি ফণীন্দ্রনাথ দাস বলেন, “বর্বর ঘটনা। প্রদীপ দেবনাথকে আমরা আর সংগঠনে রাখব না।” |