সারেঙ্গায় ধসা রোগ, ক্ষতি আলু চাষে
লু চাষে ধসা রোগ দেখা দিয়েছে সারেঙ্গা ব্লকের কিছু এলাকায়। এই রোগের প্রকোপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রচুর জমির আলু। মাথায় হাত পড়েছে প্রায় দেড় হাজার চাষি পরিবারের। তাই স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অবিলম্বে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে সরব হয়েছে তৃণমূল। কৃষি দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন দশেক আগে বৃষ্টিতে সারেঙ্গা ব্লকের গড়গড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মাজুরিয়া, বেলেপাল, মাকড়কোল, দেউলি, পেঁচাড়া, ঠাকুবাড়ি মৌজার বিস্তীর্ণ এলাকার আলু জমিতে জল জমে যায়। পরে সেই জল চাষিরা বের করে দিলেও আলুগাছ নষ্ট হতে শুরু করে। চাষিদের দাবি, প্রায় এক হাজার একর জমির আলু নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
মাজুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা, কৃষিজীবী দুলাল পাত্র, বিশ্বনাথ পাত্রদের দাবি, “সাম্প্রতিক খারাপ আবহাওয়ায় আলুগাছে ধসা রোগ দেখা দেয়। কীটনাশক ছিটিয়েও অবস্থার বিশেষ উন্নতি হয়নি। অধিকাংশ জমিতে গাছ মরে গিয়েছে।” দেউলি গ্রামের বাসিন্দা শ্রীমন্ত পাত্র, বেলেপাল গ্রামের বাসিন্দা রঞ্জিত পাত্রদের মত আলু চাষিদেরও এক অভিজ্ঞতা, “শত চেষ্টা করেও আলুগাছ বাঁচাতে পারিনি। এত কষ্ট করে গাছ লাগিয়ে মাঝপথে তা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আমরা বিপাকে পড়েছি।” এলাকার চাষিদের ক্ষোভ, “একে ধান বিক্রি হয়নি। বহু কষ্টে ধার-দেনা করে জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। লাভ তো দূরের কথা, খরচের টাকাও জলে গেল। এখন মহাজনদের দেনা শোধ করব কী ভাবে?”
ছবি: উমাকান্ত ধর।
এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে, চাষিরা সম্প্রতি স্থানীয় ব্লক প্রশাসনের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবিতে গণস্বাক্ষর সম্বলিত একটি আবেদনও জমা দিয়েছেন।
আলু চাষ করে এই চাষিরা যে বিপর্যয়ের মুখে তা মেনে নিয়ে শাসকদল তৃণমূলের সারেঙ্গা ব্লক সভাপতি ধীরেন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “গড়গড়িয়া পঞ্চায়েতের ওই পাঁচটি মৌজায় আলুচাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত আলুচাষিদের তালিকা তৈরি করে তাঁদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য আমরা বিডিও-র কাছে শুক্রবার একটি স্মারকলিপিও জমা দিয়েছি।” গড়গড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, সিপিএমের বৈশাখী মুদি বলেন, “পাঁচটি মৌজার প্রায় এক হাজার জমির আলু নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে স্থানীয় চাষিরা জানিয়েছেন। আমরা কৃষি দফতরের কাছে আলু চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছি।”
সারেঙ্গা ব্লকের কৃষি আধিকারিক মনোজ সিংহ মহাপাত্র বলেন, “চাষিদের কাছ থেকে অভিযোগ শুনে রবিবার গড়গড়িয়া পঞ্চায়েতের মাজুড়িয়া, বেলেপাল, দেউলি, ঠাকুরবাড়ি, পেঁচাড়া, মাকড়কোল গ্রামের বেশ কিছু জমি পরিদর্শন করে এসেছি। এলাকার অধিকাংশ জমির আলু ধসা রোগের পাশাপাশি জল জমে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা কৃষি দফতরে রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে।” সারেঙ্গার বিডিও হীরকজ্যোতি মজুমদার ছুটিতে রয়েছেন। যুগ্ম বিডিও শঙ্কু বিশ্বাস বলেন, “ওই এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত আলু চাষিরা ক্ষতিপূরণের আবেদন জানিয়েছেন। পাশাপাশি তৃণমূলের তরফেও আলু চাষিদের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে একটি স্মারকলিপি জমা পড়েছে। পুরো বিষয়টি আমরা জেলা কৃষি দফতরকে জানিয়েছি।” বাঁকুড়া জেলার মুখ্য কৃষি আধিকারিক অনন্ত নারায়ণ হাজরা বলেন, “আমি এখন বাইরে রয়েছি। ব্লক কৃষি আধিকারিকের কাছ থেকে পুরো রিপোর্ট পাওয়ার পরেই ক্ষতিপূরণের বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.