|
|
|
|
নিরাপত্তা হারানোর আতঙ্কে বারাসত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বারাসত কি ফিরছে এক বছর আগের সেই ‘দুঃসময়ে’?
এক বছর আগে দুষ্কৃতীদের দাপটে শিরোনামে উঠে এসেছিল বারাসত। গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি এক দল দুষ্কৃতী বারাসতের জেলাশাসকের অফিসের কাছেই ছিনতাই ও শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করেছিল রিঙ্কু দাস নামের এক তরুণীর। বাধা দিতে গিয়ে খুন হয়েছিল ওই তরুণীর ভাই, মাধ্যমিক-পরীক্ষার্থী রাজীব দাস।
গত শনি ও রবিবার বারাসত-মধ্যমগ্রামে পরপর দু’টি ঘটনা ফের সেই ঘটনার আতঙ্কই মনে করিয়ে দিয়েছে। আক্রান্ত দুই যুবকের এক জনকে মারধর করা হয়, অন্য জনের গলায় ছুরি ধরে ল্যাপটপ কেড়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। গ্রেফতার হয়নি কেউ।
পুলিশ সূত্রের খবর, দুর্গাপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পাঠরত এক যুবক শনিবার মধ্যমগ্রামে বাড়িতে ফিরছিলেন। ওই যুবকের কথায়, “সাড়ে ন’টা নাগাদ মোটরবাইকে চড়ে দুই যুবক আচমকা আমাকে থামায়। পরে গলায় ছুরি ধরে যা আছে দিতে বলে। ল্যাপটপ কেড়ে নেয়। মানিব্যাগে ৪০০ টাকা ছিল। সেটাও নেয়।”
দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার রাত দেড়টা নাগাদ। কর্মস্থল কলকাতা থেকে রাতের ডিউটি সেরে বাড়ি ফিরছিলেন বারাসতের মনোরঞ্জনপল্লির এক যুবক। তিনি বলেন, “বাড়ির সামনে এসে দেখি একটা মারুতি ভ্যানে দুু’জন অপরিচিত যুবক। তাঁরা এত রাতে সেখানে কেন, জানতে চাইতেই এক জন আমাকে চড় মারে।” চিৎকার শুনে বেরিয়ে আসেন ওই যুবকের বাবা পীযূষকান্তি ধর। তাঁকেও মারধর করে ওই দুষ্কৃতীরা।
পীযূষবাবু বলেন, “তখনকার মতো ওই দুষ্কৃতীরা চলে যায়। পরে আমার ছেলে পোষা কুকুরটিকে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়েছিল। ওই সময়ে ওরা আবার চার জনকে নিয়ে আসে। তখন ওদের হাতে লোহার রড ছিল। ভয়ে আমার ছেলে ঘরে ঢুকে যায়। ওরা দরজায় ধাক্কা মারতে থাকে। আতঙ্কে আমরা দরজা বন্ধ করে ঘরের ভিতরে বসে থাকি। গালিগালাজ ও হুমকি দিয়ে ওরা চলে যায়।”
এই ঘটনা দু’টিতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন এলাকার মানুষ। বারাসতের বাসিন্দা অনিমা সামন্ত বলেন, “রাতে কোনও নিরাপত্তা নেই।” এলাকাবাসীর অভিযোগ, বারাসতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দুষ্কৃতীরা। জেলা সিপিএমের নেতা অমিতাভ নন্দী বলেন, “পুলিশ ও প্রশাসন একটি দলের হয়ে কাজ করছে। এক দিকে, ঢাক ঢোল পিটিয়ে কমিশনারেট হচ্ছে। অন্য দিকে দুষ্কৃতীদের দাপট বাড়ছে।” শাসকদলের নেতারা অবশ্য এটিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবেই দেখছেন। তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। বারাসত-মধ্যমগ্রামের পরিস্থিতি এখন আগের চেয়ে অনেক ভাল।”
জেলা পুলিশ সুপার চম্পক ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, “পুলিশি নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। দু’টি ঘটনারই তদন্ত চলছে।” |
|
|
|
|
|