প্রাণি-সম্পদ দফতর ঢেলে সাজার উদ্যোগ
প্রাণি-সম্পদ উন্নয়নে অনেক আগে থেকেই জোর দিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু ঠিকঠাক পরিকাঠামোর অভাবে চাহিদা মতো হাঁস, মুরগি উৎপাদন করতে পারেনি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ বিকাশ বিভাগ। এ বার পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দিচ্ছে সরকার। জেলার পদস্থ কর্তাদের জন্য নতুন অফিস করা থেকে শুরু করে হাঁস, মুরগি-পালন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রায় ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সরকার। ইতিমধ্যেই নতুন অফিস তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই বাকি কাজ শুরু হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।
এত দিন প্রাণি-সম্পদ বিকাশ বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টরের নিজস্ব কোনও অফিসই ছিল না। অনেক আগে তৈরি হয়েছিল দফতরের পদস্থ আধিকারিকদের থাকার জন্য বিশ্রামাগার। সেখানেই কয়েক বছর ধরে অফিস চলছিল। এ বার সেই জায়গাটিকেই ঢেলে সাজা হচ্ছে। তার জন্য প্রাণি-সম্পদ বিকাশ বিভাগ ২৫ লক্ষ টাকা দিয়েছিল। জেলা পরিষদের মাধ্যমে এই কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিল পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকার। সেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
তৈরি হচ্ছে নতুন ভবন। ছবি তুলেছেন রামপ্রসাদ সাউ।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই নতুন অফিস চালু হয়ে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।” সেই সঙ্গে হাঁস, মুরগি-পালন, ডিম উৎপাদন ও তা থেকে আরও বাচ্চা উৎপাদন বাড়াতেও বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ করছে সরকার। প্রাণি-খাদ্য থেকে শুরু করে যাবতীয় সরঞ্জাম রাখার জন্য একটি বৃহৎ গুদাম তৈরি করা হবে। যার জন্য প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তৈরি করা হবে মৃত হাঁস, মুরগি মাটিতে পোঁতার জন্য একটি পিটও। ডিম থেকে হাঁস, মুরগির বাচ্চা ফোটানোর জন্য ও সেই বাচ্চা বড় করার জন্য পরিকাঠামো বৃদ্ধি করতে প্রায় ৩ কোটি ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যা দিয়ে বাচ্চা ফোটানোর উপযোগী চারটি ঘর ও বড় করার জন্য ৬ কম্পার্টমেন্ট-যুক্ত একটি শেড তৈরি করা হবে। এ ছাড়াও যে সব হাঁস ও মুরগি ডিম দেয় তাদের রাখার জন্য ১৫ কম্পার্টমেন্ট-বিশিষ্ট দু’টি শেড তৈরি করা হবে। যার জন্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এ ছাড়াও দোতলা অফিস ঘর, একতলা হ্যাচারি ভবন, ল্যাবরেটরি ও পোস্টমর্টেম কেন্দ্র, হাঁস ও মুরগির বাচ্চা বিক্রির কাউন্টার, সীমানা প্রাচীর তৈরি, পানীয় জলের জন্য গভীর নলকূপ খনন, যাতায়াতের রাস্তা নির্মাণ, বিদ্যুৎ সংযোগের পাশাপাশি ৪৫ কিলোভোল্টের ট্রান্সফরমার তৈরিও করা হবে। এই সব মিলিয়ে ৭ কোটি ৮২ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছে সরকার। এই কাজটি করবে পূর্ত দফতরের বিদ্যাসাগর ডিভিসন। দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার তরুণ চক্রবর্তী বলেন, “দরপত্র আহ্বানের কাজ শেষ হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে যে গুটিকয় শেড রয়েছে তাতে দেড় হাজার হাঁস ও দেড় হাজার মুরগি পালন করা যায়। তা দিয়ে যা ডিম হয় সেই ডিম থেকেই বাচ্চা ফোটানোর কাজ করা হয়। সব ডিম থেকে আবার বাচ্চা হয় না। এই উৎপাদন থেকে জেলার সরকারি চাহিদাই মেটানো সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে অন্য জেলা থেকে অনেক সময়েই মুরগি ও হাঁসের বাচ্চা নিয়ে এসে বিতরণ করা হয়। সরকারি ভাবে বিতরণ ছাড়াও বহু সাধারণ মানুষ, যাঁরা প্রাণিপালন করেন, তাঁরাও সরকারি সংস্থা থেকে বাচ্চা নিতে চান। কিন্তু উৎপাদন কম থাকায় সাধারণের চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হয় দফতর। এ বার যাতে এই ধরনের সমস্যা না হয় সে জন্যই পরিকাঠামো উন্নয়নের উদ্যোগ বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.