সৈকত উৎসবের উদ্বোধনে দিঘায় এসে পূর্ব মেদিনীপুরের সমুদ্র উপকুলে দিঘাকে ঘিরে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই অনুযায়ী পর্যটক-পরিষেবার মানোন্নয়নের কথাও বলেছেন মমতাদেবী। এমনকী সেই পরিষেবার প্রশ্নে পরিবেশ-বিধি মেনে চলায় জোর দিয়ে মন্দারমণি, তাজপুরে হোটেল-লজের অবৈধ নির্মাণ বন্ধেরও নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন তিনি।
অন্য দিকে, পর্যটকদের কথা ভেবেই সরকারি খরচে বছর দেড়েক আগে জুনপুটে নির্মিত পর্যটক-আবাস পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। অনেকটা যেন বোধনের আগেই ভাসান! পযর্টকদের জন্য জুনপুটের কাছে ‘বন্যসুন্দরী’ পর্যটন-আবাস নির্মাণ করেছিল মস্য দফতর। কাদুয়ায় ঝাউ-জঙ্গলে ঘেরা মৎস্যভেড়ির পাশেই কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে দুটি সুদৃশ্য পর্যটক-আবাস, কাঠের অতিথিশালা ,স্টাফ কোয়ার্টার বানিয়েছিল রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগম। ২০১০ সালের ১৬ মে রাজ্যের তৎকালীন মৎস্যমন্ত্রী কিরণময় নন্দ ‘বন্যসুন্দরী’র উদ্বোধন করেছিলেন। কিন্তু পরে আর ওই ভবন মৎস্য দফতরে হস্তান্তরিত করা হয়নি। বিধানসভা নির্বাচনের ডামাডোলে বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়। এ দিকে, অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে ‘বন্যসুন্দরী’। এমনকী নজরদারির অভাবে প্রায় গোচারণ ক্ষেত্রে পরিণত হওয়া ‘বন্যসুন্দরী’র স্টাফ কোয়ার্টারের দরজা-জানালা খুলে নিয়ে পালাচ্ছে নিশিকুটুম্বরা। |
মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০-এ রাজ্যের তৎকালীন মৎস্যমন্ত্রী কিরণময় নন্দের ইচ্ছাতেই জুনপুটের সৈকত লাগোয়া শান্ত পরিবেশে ‘বন্যসুন্দরী’ নামে পযর্টন আবাস গড়ে তোলার জন্য মৎস্য দফতরের অধিগৃহীত সংস্থা রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের হাতে দায়িত্ব দেওয়া হয়। নিগম বন্যসুন্দরী নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে শেষ করলে ২০১০ সালের ১৬ মে মৎস্যমন্ত্রী নিজে এর উদ্বোধন করেন। এর পরে প্রকল্পটি মৎস্য দফতরে হস্তান্তরের কথা বলা হয়। এরই মধ্যে বিধানসভা নিবার্চন এসে পড়লে বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়।
এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কাঁথি মৎস্য দফতরের সহ-মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) সুরজিৎ বাগ বলেন, ‘‘প্রকল্পটি বর্তমানে রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের হাতেই রয়েছে। এ ব্যাপারে রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমই যা কিছু বলার বলতে পারবে।” আর রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের সিনিয়র প্রোজেক্ট অফিসার স্বপন মাইতি বলেন, “প্রকল্পটি মৎস্য দফতর না আমাদের হাতে থাকবে তা-ই এখনও ঠিক হয়নি। ওই অতিথিশালা কে চালাবে তাই নিয়ে জট রয়েছে।
এই ধোঁয়াশা পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত চালু করা সম্ভব নয়।” ‘ধোঁয়াশা’ কবে কাটবে, তা ভবিষ্যতই জানে। কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত বন্যসুন্দরী তত দিনে পর্যটকদের বসবাসের উপযোগী থাকবে কি না তা নিয়েই দেখা দিয়েছে গভীর সন্দেহ। |