সরকারের বিরুদ্ধে সিপিএম পরিষদকে ফের ‘পাশে’ চাইল
ন্ধ বাগানের শ্রমিক-মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে আদিবাসী বিকাশ পরিষদকে ‘পাশে’ চাইল সিপিএম।
শনিবার ফালাকাটায়, দলের জলপাইগুড়ি জেলা সম্মেলনে যোগ দিয়ে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, “চরম দারিদ্রের কারণে ডুয়ার্সের বন্ধ ঢেকলাপাড়া চা বাগানের আদিবাসী শ্রমিকদের পর পর মৃত্যু হচ্ছে। চা বাগানের আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের জন্য আমাদের সঙ্গে এক মঞ্চ থেকে আদিবাসী বিকাশ পরিষদেরও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করা উচিত।” আজ, রবিবার সূর্যকান্তবাবু ঢেকলাপাড়া বাগানে যাবেন।
তবে আদিবাসী বিকাশ পরিষদের রাজ্য সভাপতি বিরসা তিরকে বলেন, “বন্ধ বাগানে অনাহার-অপুষ্টিতে মৃত্যুর ঘটনা বামেদের আমল থেকেই ঘটছে। ঢেকলাপাড়া বাগান তো ১০ বছর বন্ধ। বামেরা তা খোলানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হলে, এমন দুরবস্থা হত না। বন্ধ চা বাগান নিয়ে রাজ্য সরকারের উপরে চাপ বাড়ানোর কথা ভাবলেও, বামেদের সঙ্গে হাত ধরে আন্দোলনের প্রশ্ন আপাতত নেই।” তাঁর ব্যাখ্যা, পরিষদ একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। তাই কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি জোট বেঁধে লড়াই করা সম্ভব নয়।
ফালাকাটায় সূর্যকান্ত। ছবি: রাজকুমার মোদক
বস্তুত, ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই পরিষদকে পাশে পাওয়ার নানা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উত্তরবঙ্গের সিপিএম নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই পরিষদ উত্তরবঙ্গের আদিবাসী চা শ্রমিক সংগঠনের সিংহভাগ দখল করেছে। এক সময়ে ‘লাল দুর্গ’ হিসেবে পরিচিত চা-বলয়ে বামেরা কতটা ‘কোণঠাসা’ তা গত বিধানসভা ভোটের ফলেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্মেলনের মঞ্চ থেকে পরিষদের সঙ্গে যৌথ ভাবে আন্দোলনে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাতে অবশ্য পরিষদের সাড়া মেলেনি। তার পরেও ডুয়ার্সে দাঁড়িয়ে সিপিএমের রাজ্য কমিটির অন্যতম নেতা সূর্যকান্তবাবুর পরিষদকে ‘এক মঞ্চে’ আহ্বান জানানোর ঘটনাকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করছেন চা-মহলের অনেকেই। সিপিএমের শ্রমিক নেতাদের অনেকেই মনে করছেন, বন্ধ চা বাগানে শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে আন্দোলনে পরিষদকে সরাসরি আহ্বানের ফলে এক সঙ্গে দু’টি উদ্দেশ্য পূরণ হতে পারে সিপিএমের। প্রথমত, বামেদের প্রতি ‘বিমুখ’ হয়ে পড়া চা শ্রমিকদের কাছে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করা যেতে পারে। দ্বিতীয়ত, বামেদের আহ্বানে সাড়া না দিলেও বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকদের সমর্থন ধরে রাখতে পরিষদ আন্দোলনে নামতে বাধ্য হলে, রাজ্য সরকার ‘চাপে’ পড়বে।
এ দিন ফালাকাটা টাউন ক্লাব ময়দানে দলের জেলা সম্মেলনে সমাবেশে সূর্যকান্তবাবু আলু, ধান, পাট চাষিদের দুরবস্থার প্রসঙ্গ তুলেও রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করেন। তাঁর অভিযোগ, “তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে বাগান-শ্রমিকদের পাশাপাশি কৃষকেরাও ভাল নেই। আলু চাষিরাও দাম পাচ্ছেন না। ধান-পাটের দাম মিলছে না। অথচ মুখ্যমন্ত্রী উৎসব করে বেড়াচ্ছেন।” সমাবেশে উপস্থিত প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেনের টিপ্পনী, “চাষিরা ফসলের দাম না-পেয়ে আত্মহত্যা করছেন। সরকার পাশে দাঁড়াচ্ছে না। উপরন্তু, পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভেঙে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.