|
|
|
|
আয়োজনে অব্যবস্থা স্টেডিয়ামে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
স্টেডিয়ামে ২৫ হাজার জনের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। অথচ বি সি রায় ট্রফি জুনিয়র জাতীয় ফুটবল প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় দিনের ম্যাচে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে দর্শকের সংখ্যা দেখা গেল ৫০- জনেরও কম। উপস্থিতদের মধ্যে কর্মকর্তাই বেশি। শুধু তাই নয়, খেলা শুরুর সময় বেলা ১২টা। বিধি মেনে এক জন চিকিৎসক স্টেডিয়ামে হাজির না-থাকায় খেলা শুরু করতে পারেননি ম্যাচ রেফারি মাধব জি সুবর্ণ। মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সচিব নান্টু পাল-ও চিকিৎসকের হদিস দিতে পারেননি। আধ ঘণ্টা পরে চিকিৎসকের হদিস মিললে খেলা শুরু হয়। তার উপরে ম্যাচের স্কোর বোর্ড লেখার লোকের হদিস না-পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ম্যাচ রেফারি। দ্বিতীয় ম্যাচ শুরুর সময়েও চিকিৎসকের দেখা পাননি ম্যাচ রেফারি। তিনি খোঁজখবর করলে সচিব নান্টুবাবু বলেন, “চিকিৎসক ছিলেন। খেলোয়াড় যখন জখম হয় তখন তিনি খেতে গিয়েছিলেন।” অংশগ্রহণকারী দলের কর্মকর্তারা জানান, চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে চোট-লাগলে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। তাতেও নান্টুবাবুর হেলদোল দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। ম্যাচে পায়ে চোট পেয়ে জখম হন দিল্লির ফুটবলার মানস বোধ। চিকিৎসক না-থাকায় তিনি ছটফট করতে থাকেন। একটি বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স থাকলেও চালককে পাওয়া যাচ্ছিল না। মিনিট দশেক পরে চালককে পাওয়া গেলে মানসবাবুকে শিলিগুড়ি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি কিছুটা সুস্থ হন। ঘটনায় শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষত, ক্রীড়া পরিষদের সচিবের বিরুদ্ধে দায়সারা কাজকর্মের অভিযোগে সরব হয়েছেন অনেকেই। ম্যাচ রেফারির ক্ষোভ, “চিকিৎসক রাখতে আলাদা অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। তার পরেও এমনটা হবে কেন বুঝতে পারছি না।” |
|
দিল্লি ও মণিপুরের খেলা কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক। |
ম্যাচের শেষ পর্যন্ত কোনও চিকিৎসকের দেখা পাওয়া যায়নি। কোন চিকিৎসক দায়িত্বে ছিলেন তা নান্টুবাবু জানাতে পারেননি। নান্টুবাবু বলেন, “দর্শক টানতে শহরে ব্যানার, হোর্ডিং লাগানো হয়েছে। শিলিগুড়ি ব্যবসার শহর। দুপুরে খেলা হওয়ায় কাজ ফেলে খেলা দেখতে আসা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না।” মাঠে দর্শক টানতে আগাম ব্যবস্থা না নেওয়া, মাঠে বিভিন্ন অব্যবস্থা নিয়ে ক্ষুব্ধ ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তাদের একাংশও। ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তা স্বপন দে বলেন, “এমন চললে বাইরে থেকে আসা ফুটবলার, তাদের দলের কর্মকর্তা, ম্যাচ পরিচালনা করতে আসা ব্যক্তি সকলের চোখেই আমারা হেয় হব। ভবিষ্যতে আরও বড় ম্যাচ পাওয়া যাবে না। জাতীয় পর্যায়ের এত বড় ফুটবল ম্যাচ হচ্ছে অথচ সর্বত্রই অব্যবস্থা চোখে পড়ছে। আয়োজনের খুঁটিনাটি বিষয়ে আরও ভাল করে নজর দেওয়া দরকার ছিল।” এ দিন কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে দু’টি ম্যাচের মধ্যে একটিতে কর্ণাটক ২-০ গোলে হারিয়েছে অসমকে। অপর খেলায় মণিপুর ১-০ গোলে হারিয়েছে দিল্লিকে। অন্য দিকে রানিডাঙার এসএসবি মাঠে গোয়াকে ৪-১ গোলে হারিয়ে জিতেছে মিজরাম। উত্তরাখণ্ডকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে ওড়িশা। প্রথমার্ধে গৌরব ভান্ডারি এবং দীপক সিংহর গোলে ২-০ তে এগিয়ে ছিল উত্তরাখণ্ড। দ্বিতীয়ার্ধে খেলার রং দ্রুত বদলায়। ওড়িশার মনোজ কুমার মুর্মু ৫০,৭০ এবং ৮৫ মিনিটে ৩ টি গোল করে দলকে জেতান। আজ, শুক্রবার রানিডাঙায় এসএসবি মাঠে বাংলা দল মুখোমুখি হচ্ছে মহারাষ্ট্রের। বৃহস্পতিবার বিকেলে শিলিগুড়ির উত্তরায়ণ উপনগরীর মাঠে ১ ঘন্টা অনুশীলন করেন বাংলার ফুটবলাররা। গত বুধবার পঞ্জাবের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে ফাঁকা গোল পোস্ট পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে না-পারার মতো ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে না বলে এ দিন কোচ প্রশান্ত চক্রবর্তীকে আশ্বাস দিয়েছেন বাংলার ফুটবলাররা। |
|
|
|
|
|