স্পোর্টিং ক্লুব ২ (কেইটা, কালু)
মোহনবাগান ১
(মাসি) |
ইস্টবেঙ্গলকে টপকে দু’নম্বরে ওঠা তো হলই না, বরং বিশ্রী ফুটবল খেলে খেতাবের দৌড়ে বেশ খানিকটা পিছিয়ে পড়ল মোহনবাগান। লিগ টেবিলে অবশ্য তারা এখনও চার নম্বরেই। ডেম্পো, ইস্টবেঙ্গল, চার্চিলের পর এখন জায়গা ওডাফা-ব্যারেটোদের।
সুব্রত ভট্টাচার্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আগের দু’ম্যাচের স্ট্র্যাটেজি বদলাবেন। অপেক্ষা নয়, জেতার জন্য আক্রমণাত্মক ফুটবলই খেলবে বাগান। আক্রমণ দূরে থাক, বৃহস্পতিবার মারগাওতে ওডাফা-জেলেনি-মাসিরা যা খেললেন তা অনেকটাই হ-য-ব-র-ল গোছের। সংগ্রাম মুখোপাধ্যায় নিশ্চিত গোটা তিনেক গোল না বাঁচালে চরম লজ্জায় পড়তে হত সুব্রতর দলকে। সুব্রত অবশ্য এটা মানতে চান না। ম্যাচের পর মারগাওতে ফোনে ধরা হলে মোহন টিডি বললেন, “সব টিমেরই খারাপ এক একটা দিন যায়। আজ আমাদের সেটা ছিল। রহিম নবি-জুয়েল রাজা না থাকায় টিমের ভারসাম্য অনেকটা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।”
আই লিগে গোয়ার চারটি ক্লাবের মধ্যে স্পোর্টিংই একমাত্র টিম যারা নিজেরাই ম্যাচ সংগঠন করছে। দর্শক টানতে চিয়ার গার্ল থেকে বিরতিতে নানা ভাবে মনোরঞ্জনেরও ব্যবস্থা করেছে খুব পরিকল্পনা করে। মাঠেও একেন্দ্র সিংহের দলের খেলায় ছিল সেই ছাপ। ওডাফাকে বোতলবন্দী করে ফেললে অর্ধেক কাজ শেষ হয়ে যাবে জানতেন স্পোর্টিং কোচ। শ্যামানন্দ এবং কেইটাকে দিয়ে সেই কাজটা করলেন তিনি। নিট ফল, গোলে শট মারা দূরে থাক, নড়তেই পারলেন না মোহনবাগানের গোলমেশিন। পরে বসেও গেলেন। সদ্য চোট সারিয়ে ফেরা হোসে ব্যারেটোও সারাক্ষণ জায়গা খুঁজে বেড়ালেন। শেষ দিকে হাদসন লিমার শটে সবুজ তোতা হেড করলেন বটে কিন্তু সেটা বাইরে উড়ে গেল। ওই গোলটা হলে অন্তত এক পয়েন্ট জুটতে পারত মোহনবাগানের।
ইস্টবেঙ্গল, চার্চিলকে হারানোর পর ওডাফাকে নিয়ে যতই হইচই হোক, এ বারের মোহনবাগান টিমের ধারাবাহিকতার পিছনে তিন বঙ্গসন্তানের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। এরা হলেন রহিম নবি, জুয়েল রাজা ও কিংশুক দেবনাথ। এদের মধ্যে জুয়েলের চোট। ঠোঁট ফেটে আঠাশ মিনিটে নবি বেরিয়ে যাওয়ার পর বাগানের চেহারা হল আরও কঙ্কালসার। পরে নবির ঠোঁটে ১২টি সেলাই হয়েছে। সুরকুমারকে বসিয়ে রাইট ব্যাকে শুভাশিস রায় চৌধুরীকে নামিয়েছিলেন মোহন টিডি। শুভাশিসের পাশ দিয়েই স্পোর্টিং মিডিও অ্যান্টনি সবথেকে বেশি আক্রমণ তুলে আনলেন। মোহনবাগান যে দুটো গোল হজম করল সেগুলো ওই দিক দিয়েই। দুটোই হেডে। এবং দুটোই অ্যান্টনির কর্নার ও তুলে দেওয়া বলে। কেইটা, কালুরা যখন গোল করলেন তখন আনোয়ার, জিলানিরা দর্শক। ফলে মোহনবাগানের রক্ষণ সংগঠন নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল। উঁচু বলে লম্বা ফুটবলারের হেড আটকাতে নিজের বেশি উচ্চতার অস্ত্রকে ব্যবহার করেন কোচেরা। এ দিন তার কিছুই দেখা যায়নি মোহনবাগানে। মাঝমাঠের দখলও কোনও সময় ছিল না সুব্রত-প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়দের টিমের হাতে। ফলে মোহনবাগানের কোনও গোলমুখী শটই সেই অর্থে হয়নি। ১-০ থেকে রাকেশ মাসি দূর থেকে জোরাল শটে ১-১ করলেন। সেটা অবশ্য খেলার গতির বিরুদ্ধেই। কালু পরে নেমে ২-১ করলেন।
এ বারের লিগে ডেম্পো ছাড়া কোনও টিমেরই সেই অর্থে ধারাবাহিকতা নেই। আপাতত সেইদিকেই তাকিয়ে সুব্রত। বলে দিলেন, “লিগ শেষ হলে দেখা যাবে কে কোথায় দাঁড়িয়ে।”
|
মোহনবাগান: সংগ্রাম, শুভাশিস, আনোয়ার, কিংশুক, নবি (ধনরাজন), মণীশ, জেলেনি (লিমা), রাকেশ, স্নেহাশিস, ব্যারেটো, ওডাফা (প্রদীপ)। |