জারদারি কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে হাজিরা দিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি। পাকিস্তানে অবশ্য আগেও আদালতে হাজিরা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। জুলফিকার আলি ভুট্টো ও নওয়াজ শরিফকে আইনি প্রক্রিয়ার মুখে পড়তে হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির বিরুদ্ধে ঘুষের মামলা চালু না করায় গিলানির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিস জারি করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার ওই মামলার শুনানি ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদালত। পরবর্তী শুনানিতে প্রধানমন্ত্রীকে হাজিরা দেওয়ার হাত থেকে রেহাই দিয়েছে বেঞ্চ। ফলে কিছুটা স্বস্তি পেল পাক সরকার। |
প্রধানমন্ত্রীর আদালতে হাজিরা নিয়ে আগ্রহ ছিল সংবাদমাধ্যম ও সাধারণ মানুষের। বুধবার মাঝরাত থেকে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার মূল রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। আদালত ঘিরে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী। হেলিকপ্টারেও নজরদারি চালাচ্ছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরা। সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে নিজে গাড়ি চালিয়ে কোর্টে আসেন গিলানি। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এইতাজ এহসান। প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন করতে হাজির ছিলেন হিনা রব্বানি খার, রেহমান মালিক, চৌধুরি সুজাত হোসেনের মতো নেতা-মন্ত্রীরা।
বাইরে উপস্থিত জনতার দিকে হাত নাড়েন গিলানি। কোর্টের নির্দেশ মেনে গিলানির হাজির হওয়ার সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছে বিচারপতি নাসির-উল-মুলকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। বেঞ্চের মতে, এই ঘটনা থেকে প্রমাণ হল কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন। গিলানি বলেন, তিনি আদালত অবমাননার কথা কল্পনাও করতে পারেন না।
জারদারির বিরুদ্ধে ঘুষের মামলা ফের চালু করতে সুইৎজারল্যান্ডকে চিঠি লেখার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই নির্দেশ পালন করেনি গিলানি সরকার। বেঞ্চের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা শুরু করার পথে সাংবিধানিক বাধা রয়েছে। কোনও দেশের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধেও ফৌজদারি মামলা চালানো যায় না। গিলানির আইনজীবী এহসান বলেন, সাংবিধানিক বাধা থাকলে সুইৎজারল্যান্ডকে চিঠি লিখে হাসির পাত্র হয়ে যাবে পাক সরকার। জবাবে বেঞ্চ জানতে চায়, যদি সাংবিধানিক বাধা না থাকে সেক্ষেত্রে সরকার কোর্টের নির্দেশ মানবে কি না। এহসান জারদারি মামলা খতিয়ে দেখতে এক মাস সময় চান। কোর্ট অবশ্য তাঁকে ১ ফেব্রুয়ারিই এই বিষয়ে একটি বিস্তারিত জবাব পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমে হইচই হলেও ৯০ মিনিটের বেশি চলেনি বৃহস্পতিবারের শুনানি। কোর্টের বাইরে গিলানি-বিরোধী স্লোগান দেন কিছু আইনজীবী। প্রধানমন্ত্রীকে পাশের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা। কিন্তু, গিলানি সামনের দরজা দিয়েই বেরিয়ে যান।
মেমোগেট কেলেঙ্কারির প্রধান সাক্ষী পাক বংশোদ্ভূত মার্কিন মনসুর ইজাজের ভিসা সংক্রান্তআবেদন পাক সরকার হাতে পায়নি বলে জানিয়েছেন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র আব্দুল বাসিত। ইজাজকে সুইৎজারল্যান্ডের পাক দূতাবাস ভিসা দিয়েছে বলে জানিয়েছিল সংবাদমাধ্যম। |