জোটশরিক কংগ্রেসের সঙ্গে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে টানাপোড়েনের প্রেক্ষিতে পঞ্চায়েত ভোটের ‘প্রস্তুতি’ নিতে আজ, বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েতি-রাজ সম্মেলন করছে তৃণমূল। নেতাজি ইন্ডোরের ওই সম্মেলনে প্রধান বক্তা তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত ভোটে জোট গড়া নিয়ে মমতা কংগ্রেসকে কোনও ‘বার্তা’ দেন কি না, সেটাই দেখার। গত এক সপ্তাহ ধরে দু’দলের মধ্যে যে ‘দ্বন্দ্ব’ তৈরি হয়েছে, তাতে আগামী পঞ্চায়েত ভোটে কংগ্রেস-তৃণমূলের জোট থাকবে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ধান, পাটের সহায়ক মূল্য চাষিরা ঠিকমতো পাচ্ছেন না বলে জোটশরিক কংগ্রেস এবং বিরোধী বামফ্রন্ট যে ভাবে পথে নেমে ‘সরব’ হয়েছে, তার ‘জবাব’ও আজ মুখ্যমন্ত্রী দিতে পারেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তৃণমূলকর্মীরা কী ভাবে কংগ্রেস ও সিপিএমের মোকাবিলা করবেন, তার ‘দিশা’ও এ দিন দিতে পারেন দলনেত্রী। তৃণমূলের তরফে বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে, রাজ্য সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রামের তৃণমূল স্তর পর্যন্ত পৌঁছে দিতে সম্মেলন থেকে ‘বার্তা’ দেবেন মমতা। পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলীয় সংগঠনকে মজবুত করতে তাই দলের সব গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যদের এই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ঘটনাচক্রে, দু’মাস আগে, গত ২০ নভেম্বর এই নেতাজি ইন্ডোরেই পঞ্চায়েতি রাজ সম্মেলন করেছিল প্রদেশ কংগ্রেস। পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে সে দিন দলীয় কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন প্রদেশ নেতৃত্ব। পঞ্চায়েতের কাজ দেখভালের জন্য মুখ্যমন্ত্রী যে ‘মনিটরিং কমিটি’ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কংগ্রেসের ওই সম্মেলনে তার কড়া সমালোচনা করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা।
|
কেন রাজ্যে চাষিরা আত্মঘাতী হচ্ছেন তা খতিয়ে দেখতে তাঁরা রাজ্য সরকারের কাছে ‘সর্বদলীয় তদন্ত কমিটি’ গড়ার দাবি করেছেন বলে জানালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। কংগ্রেসের একটি কমিটি গ্রামে-গ্রামে গিয়ে খোঁজখবর করবে বলেও বলে তিনি জানিয়েছেন। এ দিন দুর্গাপুরের সমাবেশে গিয়ে প্রদীপবাবু বলেন, “কেন ২১ জন চাষি আত্মহত্যা করল, সেটা জানতে চাইব না? সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি, বিধানসভার তরফে সর্বদলীয় তদন্ত কমিটি গড়া হোক। তারা গ্রামে গ্রামে গিয়ে চাষিদের সঙ্গে কথা বলুক। তাঁদের সমস্যা খুঁজে বের করুক। কী ভাবে কৃষকদের বাঁচানো যায় দেখুক। কংগ্রেস যদি সরকারকে নেতৃত্ব দিত তা হলে এটা করত।” মবারই মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, তাঁরা বেশ কিছু তদন্ত করে দেখেছেন, মৃতদের অনেকেই ‘চাষি’ নন। প্রদীপবাবুর দাবি, “নিজেদের পিঠ বাঁচাতে কিছু আমলা চাষিদের আত্মহত্যার পরে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিচ্ছেন। ব্যক্তিগত কুৎসা করা হচ্ছে। আর সেই মিথ্যে তথ্যের উপর নির্ভর করেই সরকার বলছে, যাঁরা আত্মহত্যা করেছেন, তাঁরা চাষি নন। সরকারের উচিত ভাল করে খোঁজ নিয়ে দেখা।” পরে বর্ধমানে গিয়ে প্রদীপবাবু বলেন, “ফসলের দর না পেয়ে চাষির আত্মহত্যার কথা আগের বাম সরকার স্বীকার করত না। কংগ্রেস বা তৃণমূলই তাঁদের পাশে দাঁড়াত। নতুন সরকারও আত্মহত্যার দায় কাঁধে নিচ্ছে না। সিপিএমের মতো বিরোধী দলই বরং চাষিদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। জানি না, এতে সরকারের কী লাভ?” চাষিরা আত্মঘাতী হচ্ছেন, জোট শরিক হিসাবে এটা কি কংগ্রেসেরও ব্যর্থতা নয়? প্রদীপবাবু বলেন, “কংগ্রেস একটি কমিটি গড়েছে। তারা গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলবে।” কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পের সফল রূপায়ণ হচ্ছে কি না, কংগ্রেসের ‘মনিটরিং কমিটি’ সে খোঁজও নেবে বলে তিনি জানান। চাষির আত্মহত্যার প্রতিবাদে ২১ জানুয়ারি পূর্বস্থলীতে জনসভার ডাক দেওয়া হয়েছে।
|
মাতৃত্বকালীন ছুটির পাশাপাশি এ বার সন্তানদের পরিচর্যার জন্য অতিরিক্ত ৭৩০ দিনের ছুটি পেতে চলেছেন রাজ্য সরকারের মহিলা কর্মীরা। আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রস্তাব আনা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের ষষ্ঠ বেতন কমিশনের নিয়মমাফিক মহিলা কর্মীদের এই ছুটি পাওয়ার কথা। সেই নিয়ম মেনেই রাজ্যেও একই ব্যবস্থা চালু করতেই এই প্রস্তাব আনা হচ্ছে। ১৮ বছরের অনূর্ধ্ব সর্বাধিক দু’টি সন্তানের জন্য কর্মীরা এই ছুটি পাবেন। এত দিন ১৮০ দিন মাতৃত্বকালীন ছুটি হিসেবে মিলত। এ বার সন্তানের শিক্ষা, পরিচর্যা, অসুস্থতা-সহ নানা প্রয়োজনে মায়েরা এই ছুটি পাবেন। এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকেই এই ছুটি কার্যকর করার মন্ত্রিসভার কাছে প্রস্তাব দিয়েছে অর্থ দফতর।
|
সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল ও পাইপলাইনে পানীয় জল সরবরাহের জন্য কেন্দ্রের কাছে অর্থসাহায্য চাইল রাজ্য সরকার। বুধবার মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘণ্টাখানেক বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সংখ্যালঘু বিষয়ক উপদেষ্টা টিকে এ নায়ার ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ডিরেক্টর রাজীব তপনো। সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের কর্তারা তাঁদের কাছেই এই অর্থের আবেদন জানান বলে মহাকরণ সূত্রে খবর।
|
আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে কয়লার দাম না বাড়ানোর জন্য কোল ইন্ডিয়াকে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। বুধবার কয়লার দাম বৃদ্ধি নিয়ে জনস্বার্থ মামলার শুনানি ছিল আদালতে। কোল ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে হলফনামা দিয়ে জানানো হয়, কয়লার দাম বৃদ্ধি নিতে তাদের কোনও নির্ধারিত নীতি নেই। কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রকের প্রতিনিধি জানান, আগামী শুক্রবার বিশেষ পর্যালোচনা বৈঠক ডাকা হয়েছে। তারপরেই এই বিষয়ে কয়লা মন্ত্রকের বক্তব্য জানা যাবে। মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্ত জানান, ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার কয়লার বি-নিয়ন্ত্রণ করে দিয়েছে। তাই তাদের নতুন কিছু বলার নেই। |