নিতুড়িয়া ব্লকের পাঁচটি পঞ্চায়েত এলাকা রঘুনাথপুর উন্নয়ন পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে এ ব্যাপারে চিঠি পাঠিয়ে রির্পোট চাওয়া হয়েছে।
রঘুনাথপুরের তৃণমূল বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি ডিসেম্বর মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পাঁচটি পঞ্চায়েতকে উন্নয়ন পর্যদে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে ছিলেন। মহকুমাশাসক (রঘুনাথপুর) আবিদ হোসেন বলেন, “জেলা শাসকের নির্দেশ অনুযায়ী সড়বড়ি, শালতোড়, ভামুরিয়া, জর্নাদণ্ডি ও দিঘা পঞ্চায়েতকে উন্নয়ন পর্ষদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কি না তা নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে।”
রঘুনাথপুর ১ ও ২ ব্লক, রঘুনাথপুর পুরসভা ও নিতুড়িয়া ব্লকের ২টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা নিয়ে উন্নয়ন পর্ষদ গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। উন্নয়ন পর্ষদ গড়ার প্রথম ধাপ হিসেবে অক্টোবর মাসে রঘুনাথপুর পরিকল্পনা পর্ষদ গঠনের বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতর। পর্ষদের চেয়ারম্যান করা হয় পুরুলিয়ার জেলাশাসক অবনীন্দ্র সিংহকে। উন্নয়ন পর্ষদের মধ্যে রঘুনাথপুর মহকুমার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নিতুড়িয়ার ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাকে না রাখায় এলাকায় ক্ষোভ ছড়ায়। ক্ষোভ ছড়ায় তৃণমূলের অন্দরেও। পর্ষদ এলাকা থেকে বাদ যাওয়া নিতুড়িয়া ব্লকের ওই ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যেই রয়েছে ইসিএলের দুটি কয়লাখনি- পারবেলিয়া ও দুবেশ্বরী। রয়েছে বেশ কিছু স্পঞ্জ আয়রন এবং হার্ড কোক কারখানা। জেলার মধ্যে কয়লাখনি ও শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত নিতুড়িয়া ব্লকের এই অংশকে উন্নয়ন পর্ষদে ঠাঁই না দেওয়ায় ‘হতাশ’ হয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা। তাঁদের বক্তব্য, “এই এলাকায় যোগাযোগ ও জলের ব্যবস্থা থাকায় আরও শিল্পায়নের সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি গড়পঞ্চকোট পাহাড়কে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্পের বিকাশের সুযোগ রয়েছে। তাই এই ৫টি পঞ্চায়েত উন্নয়ন পর্ষদে এলে এলাকার সার্বিক উন্নয়ন হবে।”
বিধায়ক বলেন, “ওই পাঁচটি পঞ্চায়েতকে উন্নয়ন পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত করার যৌক্তিকতা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছিলাম। তাঁর নির্দেশেই ওই পঞ্চায়েতগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে প্রশাসন উদ্যোগী হয়েছে।” প্রসঙ্গত, বিধায়কও ওই বাদ যাওয়া এলাকার সড়বড়ি গ্রামের বাসিন্দা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি শুভ্র রায় কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন নগরোন্নয়ন দফতরকে। নগরোন্নন দফতর মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়কে জানায়। সেখান থেকে পুরুলিয়ার জেলাশাসকের কাছে নির্দেশ আসে। জেলাশাসক চিঠি পাওয়ার পরে রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসককে এ বিষয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করতে বলেন। অন্য দিকে, উন্নয়ন পর্ষদ এলাকার জন্য চিহ্নিত হওয়া ২৫৬ টি মৌজার জমি সমীক্ষার কাজ শেষ পর্যায়ে। মহকুমাশাসক জানান, ওই এলাকাগুলির ল্যান্ড ইউজ ম্যাপ তৈরি করার পরে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত, ব্লক, পুরসভা ও এসডিও’র কার্যালয়ে রাখা হবে। তারপরে বাসিন্দাদের মতামত নেওয়ার পরেই ম্যাপটিকে চূড়ান্ত করা হবে। মহকুমাশাসক বলেন, “এটি উন্নয়ন পর্ষদ গঠনের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। আমাদের আশা উন্নয়ন পর্ষদ দ্রুত গঠন করা হবে।” |