মেলায় নিখোঁজ ছাত্রের মৃতদেহ মিলল খালে
মেলা দেখতে গিয়ে সোমবার নিখোঁজ হয় নবম শ্রেণির এক ছাত্র। বুধবার বাড়ি থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে একটি খাল থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ। ওই ছাত্রের নাম মাসুদ হোসেন লস্কর (১৪)। বাড়ি ডায়মন্ড হারবারের পঞ্চগ্রামে। তাকে স্থানীয় কংগ্রেস উপ-প্রধানের মদতে অপহরণ করে খুন করা হয়েছে বলে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তার কাকা ইসমাইল লস্কর।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কঙ্করপ্রসাদ বারুই বলেন, “অপহরণের অভিযোগের পর ওই কিশোরের পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেই খোঁজ চালানো হয়েছে। কী ভাবে তার মৃত্যু হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” মৃতের গায়ে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ছিল। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, তাকে পিটিয়ে মারা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসুদ বজবজের মহেশতলার বিবেকানন্দ হাইস্কুলের ছাত্র। স্কুলের কাছে একটি মেসে থেকে পড়াশোনা করত। দিন কয়েক আগে সে বাড়িতে আসে। সোমবার বিকেলে দুই বন্ধুকে নিয়ে মোটর সাইকেলে করে সে পাশের পূর্ব দুর্গাপুর গ্রামে মেলা দেখতে যায়। তার পর থেকেই তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। জেরায় মাসুদের দুই বন্ধু এনামুল লস্কর ও সাবির লস্কর পুলিশকে জানিয়েছে, ঘটনার দিন মেলায় ঢোকার সময় হঠাৎ ১০-১২ জন লোক তাদের ঘিরে ধরে। তার পরে মাসুদকে মারতে মারতে নিয়ে চলে যায়। তাদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র থাকায় তারা বাধা দিতে সাহস পায়নি।
মাসুদ হোসেন লস্কর
মাসুদের বাবা ইলিয়াস আলি পুলিশকর্মী। তিনি সাগর থানায় কর্মরত। ইলিয়াস আলির অভিযোগ, “আমরা সিপিএম করি। সেই অপরাধে স্থানীয় বাসুলডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস উপপ্রধান হাফিজউদ্দিন মোল্লার দলবল মেলা থেকে মাসুদকে অপহরণ করে খুন করেছে।” যদিও হাফিজউদ্দিন মোল্লা এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি জানান, পারিবারিক কারণে ওই ছাত্র খুন হয়ে থাকতে পারে। এর সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। তা ছাড়া ঘটনার দিন তিনি এলাকায় ছিলেন না। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “২০১০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি আমার দাদা অলিউদ্দিন লস্করকে গুলি করে কুপিয়ে খুন করা হয়। সেই ঘটনায় ইলিয়াসের পরিবারের লোকেরাও জড়িত ছিল। এখন বদলা নিতে এই ঘটনায় আমাদের নাম জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।” এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইলিয়াস। তিনি বলেন, “আমি ওই দিন অফিসেই ছিলাম। আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছিল। ওই মামলায় আমার জামিন হয়ে গিয়েছে।” ইলিয়াসের অভিযোগ, ছেলেকে অপহরণ করার সময় উপপ্রধান যে ঘটনাস্থলে ছিলেন তা অনেকেই দেখেছে। আসলে তাঁরা সিপিএম করায় তাঁদের নানা ভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করছেন উপপ্রধান। মাস খানেক আগে ওই উপ-প্রধানের মদতে বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছিল। তার পর থেকে ইলিয়াস এলাকা ছাড়া বলে অভিযোগ তুলেছে সিপিএম। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বিজন পাত্র বলেন, “এই ঘটনায় আমাদের দলে উপ-প্রধান কোনও ভাবে জড়িত নন। ওর বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে।”
সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তী বলেন, “পুলিশি মদতে সন্ত্রাস শুরু করেছে তৃণমূল জোট। একটি কিশোর তিন দিন নিখোঁজ রইল আর পুলিশ কোনও খোঁজ পেল না। পুলিশকে অপহরণের বিষয়ে সব তথ্য জানানো হয়েছিল। তার পরও কিছু করেনি।” এ দিন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র মাসুদের বাড়িতে যাবেন বলে সিপিএমের তরফে জানানো হয়েছে। ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল বিধায়ক দীপক হালদার বলেন, “ছাত্র অপহরণ ও খুনের ঘটনায় আমাদের দলের কেউ জড়িত নন। পুলিশকে এ ব্যাপারে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.