সম্পাদক সমীপেষু...
আদিগঙ্গা কি সোল-এর চোঙ্গিচোন নদী হতে পারবে
গত ৫ ও ৭ জানুয়ারি আনন্দবাজার পত্রিকায় আদিগঙ্গার সংস্কারের জন্য হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির উদ্বেগ ও সে ব্যাপারে আইনি উদ্যোগ জেনে পুরনো দুঃখ ও নতুন আশা দুই-ই জেগে উঠল। কালীঘাটবাসী প্রয়াত রেবতীরঞ্জন ভট্টাচার্যর নিরলস একক উদ্যোগে কলকাতা হাইকোর্ট ১৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭। সরকারকে ১৮ মাসের মধ্যে আদিগঙ্গা (টালিনালা)-কে পরিষ্কার ও ড্রেজিং করার নির্দেশ দেয়। রেবতীবাবুর প্রচেষ্টায় আদিগঙ্গার জন্য গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান প্রথম অর্থ বরাদ্দ করে। এত কিছু করে যখন কাজ কিছুটা এগোচ্ছিল তখন ১৯৯৯-এ জানা গেল মেট্রো রেল সম্প্রসারণ হবে আদিগঙ্গার বুকে তিনশো স্তম্ভ গেঁথে। এই কর্মকাণ্ড আদিগঙ্গার নাব্যতা, পরিবেশ ও নদী পরিবহণের বিশেষ ক্ষতি করবে এবং একটি ঐতিহ্যবাহী নদীকে মৃত্যুমুখে ঠেলে দেবে এই অভিযোগে বসুন্ধরা পরিবেশ সংগঠন এর বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করে।
ব্যবধান
আদিগঙ্গা, কলকাতা। (ডান দিকে) চোঙ্গিচোন, সোল।
এই আহ্বানকে সমর্থন করে ৫ জুন ২০০০ পরিবেশ দিবসে একটি প্রচারপত্রে স্বাক্ষর করেন বিশিষ্ট নাগরিকরা। ২৪ জুন একটি নাগরিক সভা হয় এবং এই বিষয়টি রেল কর্তৃপক্ষ ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে জানানো হয়। এতে কাজ না-হওয়ায় হাওড়া গণতান্ত্রিক নাগরিক সমিতির প্রধান সুভাষ দত্ত কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করেন। ১৮৯০ সালে পুরনো রেল আইনের একটি ধারায় বলা হয়েছিল যে রেল কর্তৃপক্ষ কোনও অনুমতি ছাড়াই পাহাড় নদী সব কিছুকেই পরিবর্তন করতে পারবে। এই অজুহাতে কলকাতা হাইকোর্ট মামলাটি খারিজ করে দেয় ও আদিগঙ্গার মৃত্যুদণ্ড ঘোষিত হয়।
এই হল দুঃখের কাহিনি। আশা জাগিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার চোঙ্গিচোন নদী। ঠিক আদিগঙ্গার মতো সোল-এর এই আপন নদীকে ষাটের দশকে বুজিয়ে ফেলে তার উপর রাস্তা ও ছয় লেনের কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ হাইওয়ে তৈরি করা হয়। ২০০৩ সালে সে সব ভেঙে আবার নদীকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। চোঙ্গিচোন এখন রাজধানী সোল-এর বিশেষ আকর্ষণ। আদিগঙ্গা কি চোঙ্গিচোন হতে পারবে?
প্রশাসন চাইলে চোলাই বন্ধ হবে
সহসা মৃত্যুর স্তূপ দৈনন্দিন জীবন যেমন’ শিরোনামে (২০-১২) অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়ের নিবন্ধে ব্যবহৃত দিলীপ নস্করের তোলা কেঠো-ভ্যানের উপর ‘তিন তলা’ সারির (তিন থাক) লাশগুলির ছবিটি বড় বেদনাদায়ক, ভয়ঙ্কর অসুন্দর কিন্তু বিরলতম।
পথ হারানো নয়পথ দেখানো হোঁচট খেলে পথ-চলায় আরও সাবধান হতেই হবে। কলকাতার বিশেষ কিছু অঞ্চলের দীর্ঘ কালের ভয়ঙ্কর সন্তানদের কী ভাবে ‘টাইট’ দিয়ে সফলতা লাভ করা গিয়েছিল, তৎকালীন সরকার ও
অভিশাপ
বিষাক্ত চোলাই মদের শিকার। ডিসেম্বর, ২০১১। ছবি: দিলীপ নস্কর
প্রশাসনের কিছু কর্তাব্যক্তির সহায়তা ওই সব সন্তানদের/দুষ্কৃতীদের পক্ষে থাকা সত্ত্বেও। জনসাধারণের মিলিত প্রতিরোধে সেই দুর্ধর্ষ সমাজবিরোধীরা সেই সময় ও ভবিষ্যতে কিছুই আর করতে পারেনি শুধু নয়, তাদের ‘দখলি এলাকা’ চিরকালের জন্য ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল। এ তো কয়েক বছর আগের জলজ্যান্ত উদাহরণ। সেই ‘টোটকা’ প্রয়োগ করে চোলাই মদের ঠেক ইত্যাদি খারাপ জিনিস বন্ধে নিশ্চয়ই সাফল্য লাভ করা যাবে। ৩৪ বছরের জগদ্দল পাথরের বামফ্রন্ট সরকারকে যদি মুখ্যত ‘একজন নারী’ ভরাডুবি করতে পারে, তা হলে ‘হয় না-হবে না-পারব না’ ইত্যাদি কথার কোনও যুক্তিই ধোপে টেকে না।
বাঁকুড়া দুর্গাপুর সেতু জরাজীর্ণ
আমরা বাঁকুড়া ও সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের লোকেরা অত্যন্ত উদ্বেগ ও দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করছি, বাঁকুড়া থেকে দুর্গাপুর যাওয়ার একমাত্র যোগাযোগকারী দামোদর ক্যানালের উপর সেতুটির অবস্থা অত্যন্ত জীর্ণ ও ভগ্নদশাগ্রস্ত। সেতুটির প্রবেশ পথে একটি সতর্কতাসূচক বোর্ড দেওয়া আছে “১০ টনের অধিক পণ্য বহন করা চলিবে না”। কিন্তু অনায়াসে ১০ টনের অধিক মালবাহী ট্রাক, ডাম্পার কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে চলছে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, আরামবাগ, মেদিনীপুর ও সংশ্লিষ্ট অঞ্চল থেকে নিত্যদিন হাজার খানেক বাস, লরি এবং অন্যান্য গাড়ি দুর্গাপুর বা দুর্গাপুর সিটি সেন্টার হয়ে আসানসোল, বর্ধমান, কলকাতা যায়। সেতুটির উপরে যা চাপ তাতে যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তখন পুরো সেতুটি সংস্কার না-করা পর্যন্ত দীর্ঘ দিন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকবে। বহু মানুষের জীবন-জীবিকার উপর প্রভাব পড়বে। নিত্য ও সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়বে। তাই কোনও বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য সেতুটির অবিলম্বে সংস্কার হোক।
পার্শ্বশিক্ষক
মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভা নির্বাচনের আগে নানা জনসভায় পার্শ্বশিক্ষক-শিক্ষিকাদের বলেছিলেন, আমরা যদি ক্ষমতায় আসি, আপনাদের আমরা দেখব। ক্ষমতায় আসার সাত-আট মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও পার্শ্বশিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য কোনও ইতিবাচক কথা শোনা গেল না। সবার আগে বিধায়ক ও মন্ত্রীদের ভাতা বাড়িয়ে দেওয়া হল। এ যেন সবার জন্য রান্না করে আগে নিজেরা খেয়ে নেওয়া। স্থায়ী কর্মচারীদের ডি এ ঘোষিত হল, তাঁরা নাকি বর্তমান বাজার দরে সংসার চালাতে পারছেন না। যাঁরা খুব সামান্য ভাতা পেয়ে কাজ করছেন (শিক্ষাবন্ধু, অঙ্গনওয়াড়ি, আশা প্রকল্প, পার্শ্বশিক্ষক ও শিক্ষিকা), তাঁদের কী ভাবে সংসার চলছে?


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.