কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় ছাত্র সংসদ নির্বাচন হল পূর্বস্থলী কলেজে। বুধবার এই কলেজের ১২টি আসনে ভোট হয়। সব ক’টি আসনেই জয়ী হন টিএমসিপি প্রার্থীরা।
সপ্তাহখানেক আগেই এই কলেজে মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে এসএফআই-টিএমসিপি সংঘর্ষ হয়। পূর্বস্থলীর বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে জখম টিএমসিপি সমর্থকদের নবদ্বীপ হাসপাতালে দেখতে গিয়ে গুলিতে খুন হন তৃণমূল নেতা সজল ঘোষ। ওই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে সিপিএমের পূর্বস্থলী ২ লোকাল কমিটির সম্পাদক প্রদীপ সাহাকে। মূল অভিযুক্ত, এসএফআই নেতা লোকনাথ দেবনাথকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ। এমন পরিস্থিতিতে এ দিন ভোটকে কেন্দ্র করে গোটা পারুলিয়া এলাকাতেই ছিল পুলিশি পাহারা। কলেজের ২০০ মিটার এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি ছিল। |
বিধায়ক তপনবাবুর কথায়, “আমাদের ছাত্র সংগঠনের তরফে এই জয় সজলের স্মৃতিতে উৎসর্গ করা হয়েছে। এ দিনের ভোট প্রমাণ করে দিল, সিপিএম নেতা প্রদীপ সাহার অপকর্ম মানুষ ভাল চোখে দেখেননি।” বিধায়ক জানান, “এ দিন বিল বই বা আইডেন্টিটি কার্ড নিয়ে না আসা এবং সময়ে পৌঁছতে না পারার কারণে অন্তত ৫০ জন পড়ুয়া ভোট দিতে পারেননি।” কলেজে কম ভোট পড়ার কারণ হিসেবে তাঁর দাবি, “কিছু দিন আগেই মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার দিন টিএমসিপি কর্মী-সমর্থকদের বেধড়ক মারধর করা হয়। সিপিএমের সন্ত্রাসের ভয়েই এ দিন অনেকে আসেননি।” টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি অশোক রুদ্র বলেন, “পূর্বস্থলীর মানুষ যে সিপিএমকে মুছে ফেলতে চাইছে তার প্রমাণ দিল এই কলেজের জয়।” তাঁর দাবি, “জেলায় মোট ৩০টি কলেজের মধ্যে ২৭টিতেই ছাত্র সংসদ দখল করেছে টিএমসিপি। বর্ধমানে যে এসএফআই এবং সিপিএম কার্যত মুছে যাচ্ছে তা এই পরিসংখ্যানেই প্রমাণ হয়।”
এসএফআইয়ের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়, পূর্বস্থলী কলেজে গণতান্ত্রিক পরিবেশের অভাবের কারণেই এমন ফল হয়েছে। সিপিএমের পূর্বস্থলী জোনাল কমিটির সম্পাদক সুব্রত ভাওয়ালের দাবি, মঙ্গলবারই এসএফআইয়ের তরফে এলাকায় প্রচার করা হয়, তারা কলেজ ভোটে যোগ দিচ্ছে না। তাই এ দিন দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা কলেজে যাননি। তিনি বলেন, “কলেজে মারপিটের ঘটনায় আট এসএফআই প্রার্থীর নামে জামিন অযোগ্য ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। এর পরে কী করে লড়াই করব আমরা!”
পূর্বস্থলীর আইসি রঞ্জন সাহা বলেন, “কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ভোট হয়েছে। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।” |
বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র। |