ছাত্র সংসদের নির্বাচনে অশান্তি এড়াতে অধ্যক্ষের ডাকা বৈঠক ঘিরে যুযুধান ছাত্র সংগঠনগুলির হাতিহাতি উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহারের শীতলখুচি কলেজ। মঙ্গলবার বিকেলে ওই ঘটনায় অন্তত ৫ জন জখম হন। পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে খোদ অধ্যক্ষ-সহ কয়েকজন শিক্ষকও হেনস্থার মুখে পড়েন বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে শীতলখুচি থানা থেকে বিরাট পুলিশ বাহিনী ছুটে গিয়ে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই ব্যাপারে ছাত্র সংগঠনগুলি একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে। শীতলখুচি কলেজের অধ্যক্ষ আফজাল হোসেন বলেন, “৮ ফেব্রুয়ারি কলেজের ছাত্র সংসদের ভোটের দিন ঠিক হয়েছে। তাতে শান্তি বজায় রাখার ব্যাপারে কলেজের চারটি ছাত্র সংগঠনকে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। ওই বৈঠক শেষ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে ছাত্রদের মধ্যে গোলমাল বাধে। পরিস্থিতি সামলাতে গেলে আমিও দু’পক্ষের ধস্তাধস্তির মধ্যে পড়ি।” কোচবিহারের পুলিশ সুপার প্রণব দাস জানান, অধ্যক্ষের সামনেই ছেলেরা ধাক্কাধাকিতে জড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা ছড়ায়। শিক্ষকরাই প্রথমে অবস্থা সামলেছেন। পরে পুলিশ যায়। তিনি বলেন, “এখন সব কিছু নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”পুলিশ ও কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাত্র সংসদ নির্বাচনে শান্তি বজায় রাখতে জেলাশাসক সমস্ত অধ্যক্ষদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে অধ্যক্ষদের ছাত্র সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনার পরামর্শ দেওয়া হয়। তার ভিত্তিতেই এদিন শীতলখুচি কলেজের অধ্যক্ষ বৈঠক ডাকেন। সেখানে টিএমসিপি, ছাত্র পরিষদ, এসএফআই, ডিএসওর প্রতিনিধিরা অংশ নেন। বিকেলে ওই বৈঠক শেষ করে সকলে বার হওয়ার পরেই বাদানুবাদ থেকে উত্তেজনা ছড়ালে হাতিহাতি শুরু হয়। অবস্থা দেখে সামলাতে গিয়ে দু’পক্ষের মাঝে পড়ে যান অধ্যক্ষ-সহ কয়েকজন শিক্ষক। ওই গোলমালের ব্যাপারে পরস্পরের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অরিন্দম দে বলেন, “টিএমসিপি ও এসএফআইয়ের ছেলেরা বৈঠক যাওয়ার অপরাধে আমাদের কর্মীর ওপর একসঙ্গে হামলা চালায়। পরে নিজেদের মধ্যে গোলমালে জড়ায় তারা।” এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক দেবজ্যোতি গোস্বামীর দাবি, ছাত্র পরিষদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। অধ্যক্ষের ডাকা বৈঠক থেকে তাঁরা বার হওয়ার সময়ে ৩ কর্মীকে কলেজ চত্বরে টিএমসিপির বহিরাগত বাহিনী মারধর করে। তাদের মধ্যে কাউজার আলি নামে একজনকে রাত পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ডিএসওর জেলা সম্পাদক মৃনালকান্তি সরকারের অভিযোগ, টিএমসিপির ছেলেদের হামলায় তাঁদের এক জন জখম হন। টিএমসিপি অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সংগঠনের জেলা সভাপতি সাবির সাহাচৌধুরী বলেন, “বৈঠকের পরে শক্তি দেখাতে ডিএসও ও এসএফআই বহিরাগতদের কলেজে ঢোকাতে চাইলে ছেলেরা প্রতিবাদ করলে গোলমাল বাধে।” |