বিদ্যুতের ‘হাইটেনশন’ তারে লেগে হাত পুড়ে পচন ধরেছিল একটি হনুমানের। তাকে বাঁচাতে গড়া হল ‘মেডিক্যাল টিম’। অপারেশন টেবিলে হনুমানটিকে রেখে চার পশু চিকিৎসক দেড় ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করলেন।
মঙ্গলবার দুপুরে সিউড়ি জেলা পশু চিকিৎসাকেন্দ্রের চিকিৎসক সহদেব সাহু, শুখেন্দুবিকাশ সাহা, জয়ন্ত চৌধুরী ও তাপসকান্তি দাস অসুস্থ হনুমানটির পচন ধরা হাতটি অস্ত্রোপচার করে কেটে বাদ দেন। বীরভূমের ডিএফও কিশোর মাঁকড় বলেন, “যে ধরনের অস্ত্রোপ্রচার এ দিন হল, তা এই জেলায় বিরল। এ বার থেকে জেলায় কোনও বন্যপ্রাণী অসুস্থ হলে আর কলকাতায় পাঠানোর কথা ভাবব না। আগে এখানে চিকিৎসার চেষ্টা হবে।” |
অস্ত্রোপচারের পরে। নিজস্ব চিত্র |
অস্ত্রোপচারের শেষে চিকিৎসক শুখেন্দবাবু বলেন, “হনুমানটির পুরো বাঁ হাতেই গ্যাংগ্রিন হয়েছিল। হাত কেটে বাদ দেওয়া ঝুঁকির ছিল। শেষ পর্যন্ত সফল অস্ত্রোপচারই হয়েছে।” পরে এক চিকিৎসক জানান, হনুমানটিকে অচেতন করা হয়। অপারেশন টেবলে শুইয়ে রেখে বাঁ হাতটি কেটে
বাদ দেওয়া হয়। এক্স-রে মেশিন না থাকায়, হনুমানটির হাতের হাড়ের অবস্থা জানা সম্ভব হয়নি। তার উপর হনুমানটির রক্তের প্রয়োজন হলে বিপদ আরও বাড়ত। পশু চিকিৎসকদের কাছে হনুমানের রক্ত ছিল না যে!
সোমবার সকালে বিশ্বভারতীর আনন্দ পাঠশালায় পড়ে থাকা অসুস্থ হনুমানটিকে উদ্ধার করে বন দফতরে খবর দেন শান্তিনিকেতনের পশুপ্রেমী ঊর্মিলা গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বছর চারেকের এই হনুমানটি পাঠশালার দেওয়ালে ঠেস দিয়ে পড়েছিল। বাঁ হাতে পচন ধরেছিল। তখনই ঠিক করি ওর চিকিৎসা করানো দরকার।”
ঊর্মিলাদেবীরই নিজস্ব অ্যাম্বুল্যান্সে করে হনুমানটিকে সিউড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। দিনভর উদ্বেগের মধ্যে থেকে হনুমানটি সন্ধ্যায় ফের নড়াচড়া শুরু করতেই ঊর্মিলাদেবী থেকে জেলার বনকর্তারা স্বস্তির শ্বাস ফেলেন। |