আমাদের চিঠি |
আর একটু মানবিক হওয়া যায় না |
গাইঘাটা ব্লকের সুটিয়া পঞ্চায়েতের পাঁচপোতা এলাকার কালীপদ বৈদ্যের বয়স নব্বই পেরিয়েছে। স্থানীয় মানুষের কাছে তিনি ‘রাধাগোবিন্দ’ নামে পরিচিত। সহায়-সম্বলহীন, নিঃসঙ্গ এবং কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন এই বৃদ্ধের দিন চলে ভ্যানে করে কারও এক বস্তা মাল পৌঁছে দিয়ে বা কখনও ভ্যান ভাড়া দিয়ে, আর স্থানীয় মানুষের দয়া-দাক্ষিণ্যে। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প সম্বন্ধে কিছুই জানেন না প্রাক-স্বাধীনতা যুগের এই মানুষটি। দু-মুঠো অন্নের জন্য গ্রামের মানুষের মুখ চেয়ে বসে থাকেন। রাধাগোবিন্দকে সাহায্য করার জন্য আগের সরকারের মুখ্যমন্ত্রীকে ১৫ জানুয়ারি ২০১০-এ চিঠি দিয়েছিল স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। কিন্তু সাত মাস কেটে গেলেও সরকারি তরফে কোনও হেলদোল দেখা যায় না। ১৬ অগস্ট ২০১০-এ ‘তথ্য সংক্রান্ত আইন-২০০৫’-এর আওতায় মহকুমা শাসকের কাছে জানতে চাওয়া হয়, সরকার এই অসহায় বৃদ্ধের জন্য কী ভাবছে? |
|
অমানবিক। জীবিকার জন্য ভ্যান চালাচ্ছেন কালীপদ বৈদ্য। |
মহকুমা শাসকের দফতর থেকে বিডিওকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয় ২১ অগস্ট ২০১০। সেই চিঠির উত্তর আসে প্রায় দেড় বছর পর। জানানো হয়, তদন্তে জানা গিয়েছে ঘটনা সত্যি। বৃদ্ধকে বিডিও অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়। ঘটনা হল, বিডিও অফিসের দূরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার। নব্বই অতিক্রান্ত এক বৃদ্ধের পক্ষে এতটা পথ পেরিয়ে বিডিও অফিসে যোগাযোগ করা সত্যিই মুশকিল। প্রশাসন যে অসহায় মানুষের কথা ভাবে না, এটি তার নমুনা। নইলে চিঠির উত্তর আসে দেড় বছর পর! নব্বই-অতিক্রান্ত একটি মানুষকে কী ভাবে বলা হয় এতটা দূরে বিডিও অফিসে যোগাযোগ করতে? কর্তৃপক্ষ একটু মানবিকতার পরিচয় দিলে এই বৃদ্ধ মানুষটি শান্তিতে জীবনটা কাটাতে পারেন। |
জ্যোতিপ্রকাশ ঘোষ। গাইঘাটা, উত্তর চব্বিশ পরগনা
|
বিপিএল-এ উচ্চবিত্ত! |
বাদকুল্লা ১নং গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সুরভিস্থান পাটুলি এলাকায় বেশ কিছু উচ্চবিত্ত ও উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারের নাম রয়েছে বিপিএল তালিকায়। এদের মধ্যে সরকারি কর্মচারীর পরিবার যেমন আছে, তেমনই আছে পেনশনভোগী অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীর পরিবারও। এরা দিনের পর দিন বিপিএল-এ থেকে সমস্ত সুযোগ-সুবিধে ভোগ করে চলেছে। আবার এমন অনেক হতদরিদ্র মানুষও রয়েছেন, যাঁরা বিপিএল-এর তালিকায় স্থান পাননি। এমনটাই ঘটছে নদিয়া জেলার অন্তর্গত বাদকুল্লায়। তাই স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, অবিলম্বে যথাযথ তদন্ত করে এই সব উচ্চবিত্ত চাকুরিজীবী ও পেনশনভোগী সরকারি কর্মচারী পরিবারগুলির নাম বিপিএল তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হোক। সঙ্গে বেআইনি ভাবে বিপিএল তালিকায় নাম তুলে সুবিধে নেওয়ার জন্য উপযুক্ত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থাও করা হোক। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, তিনি যদি এ বিষয়ে একটু নজর দেন তবে অসংখ্য দরিদ্র মানুষ উপকৃত হবেন। |
নীলাংশু ধর। বাদকুল্লা, নদিয়া
|
বদলির আর্জি |
আমি স্কুল শিক্ষিকা। আমার স্বামী দুর্গাপুরের একটি স্কুলের শিক্ষক। বর্তমানে তিনি দুরারোগ্য কিডনির অসুখে আক্রান্ত। তাঁর স্কুলের কাছেই কোয়ার্টার ভাড়া করে আমরা থাকি। স্বামীর স্কুল বাড়ির কাছে হওয়ায় এবং সহকর্মীরা সহানুভূতিশীল হওয়ায় তিনি কোনও রকমে স্কুল করেন। আমার স্কুল বিষ্ণুপুরে (বাঁকুড়া)। কিন্তু অসুস্থ স্বামীর দেখাশোনার জন্য আমাকে স্কুল শেষে প্রতি দিনই বাড়ি ফিরতে হয়। বিষ্ণুপুর-দুর্গাপুর ট্রেন লাইন নেই। ভাল বাসের সংখ্যাও কম। লোকাল বাস আছে। সকাল ছ’টা পঁয়তাল্লিশে বেরিয়ে রাত সাড়ে আটটায় বাড়ি ফিরি। যানজট থাকলে আরও ভোগান্তি। এ ভাবে স্বামীর দেখাশোনাও ঠিকমত করতে পারছি না। তাঁর চিকিৎসার জন্য প্রচুর টাকা প্রয়োজন। তাই চাকরি ছাড়তে পারছি না। আমার বিনীত নিবেদন, আমাকে যদি দুর্গাপুরের কাছাকাছি কোথাও বদলির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়, তা হলে বাড়ি থেকে চাকরি করে আমার অসুস্থ স্বামীকে দেখাশোনা করা সহজ হত। |
কৃষ্ণা দাস। দুর্গাপুর, বর্ধমান |
|