দেবতার চড়ুইভাতিতে এ বারও মেতে উঠল বরাবাজারের রথটাঁড়। চার পাশে জঙ্গল ঘেরা এই ছোট্ট মাঠে রবিবার পৌষ সংক্রান্তির দিন চড়ুইভাতি হয়ে গেল। ছিলেন বরাভূম রাজ স্টেটের কুলদেবতা রাধাবৃন্দাবনচাঁদ জীউ। ছিলেন এলাকার অন্তত ১০টি গ্রামের বাসিন্দা।
রথে ছিলেন বরাভূম রাজ স্টেটের কুলদেবতা রাধাবৃন্দাবন চাঁদ জীউ। বাজছিল ঢাকঢোল। বরাবাজার রাজবাড়ি থেকে দু’কিলোমিটার পথ সেই রথ টেনে আনা হল রথটাঁড়ের বনভোজন প্রাঙ্গনে। আগে বলরামপুর, পটমদা, চাণ্ডিল থেকে নিমন্ত্রণ করে আনা হত অন্যান্য দেবদেবীদের। সে জন্য তৈরি করা হয়েছিল একটি মন্দির। সেই মন্দির এখনও রয়েছে। কিন্তু পটমদা ও চাণ্ডিল ঝাড়খণ্ডের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর থেকে রাধাবৃন্দাবনজীকে এখন একাই বনভোজন সারতে হয়। কথিত আছে, ১৩৭৩ সালে রাজ পরিবারের সদস্য গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ দেও দর্প সাহা দেবতার নির্দেশে পৌষ সংক্রান্তির দিন এই বনভোজনের সূচনা করেছিলেন।
বরাবাজার উৎসব কমিটির পক্ষ থেকে বর্তমানে এই বনভোজনের পরিচালনা করা হয়। কমিটির পক্ষে নবগোপাল সরকার, বিশ্বেশ্বর সিংহ মোদক, অজিত প্রামাণিকরা বলেন, “আয়োজনে যাতে কোনও ত্রুটি না থাকে তার জন্য সর্বস্তরের বাসিন্দাদের সাহায্য নেওয়া হয়। আগে রাজকোষ থেকে লক্ষাধিক টাকা খরচ করে এই উৎসব হত। এখন বাসিন্দাদের থেকে সংগৃহীত টাকায় এই উৎসব করা হয়। কয়েক দশক আগেও দেবতার জন্য নয় রকমের ব্যঞ্জন রান্না হলেও ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এখন শুধু খিচুড়ি আর পায়েস রান্না হয়।”
প্রতিবছর বনভোজনে যোগ দিতে আসা স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, “খিচুড়ি আর পায়েসের স্বাদ অপূর্ব। সারাদিন আড্ডা, গল্প, খুনসুটি আর খাওয়াতে কখন যে বিকেল গড়িয়ে যায় টেরই পাওয়া যায় না!” |