|
|
|
|
মিষ্টি-ভোটের টানে জিভে প্রেমের জোয়ার |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
কোলাভেরি ডি! একসঙ্গে তামিল, ইংরেজি থেকে শুরু করে নানা কিসিমের খিচুড়ি-ভাষায় গান যদি লোকের মুখে মুখে ফিরতে পারে, তবে গ্লোবাল চকোলেটের মিশেলে বাংলার মিষ্টি কেন রসিকের দরবারে কল্কে পাবে না?
এই কনকনে ঠান্ডায় শহরের আড্ডায় এমন তর্কই আপাতত উত্তাপ ছড়াচ্ছে। স্রেফ তর্ক নয়, ভোট! যার নাম, ‘ক্যাডবেরি মিষ্টি, সেরা সৃষ্টি’। তীব্র রেষারেষির এই মিষ্টি-যুদ্ধে উত্তর বা দক্ষিণ কলকাতায় সব হেভিওয়েট মিষ্টি-শিল্পীর একটাই ব্রহ্মাস্ত্র। ক্যাডবেরি। ক্যাডবেরির সঙ্গে বাঙালি ময়রার সিগনেচার ছানার পাক বা নলেনগুড়ের মাখো-মাখো প্রেমে জন্ম নিচ্ছে নতুন স্বাদের রসায়ন। |
|
‘মিষ্টি-যুদ্ধের’ ভোট প্রচারে শ্রীলেখা মিত্র। শনিবার, বিডন স্ট্রিটে। ছবি: দেবাশিস রায় |
এই শীতেই তাই বেশ কয়েকটি নতুন উপহার পেয়েছে কলকাতা। সন্দেশের ছানার পাকের কমনীয়তার সঙ্গে ক্যাডবেরির ব্লকের কাঠিন্যে জমে উঠছে ললিতে-কঠোরে ‘সরস’ সংঘাত। শীতের নরম রোদের মতোই সন্দেশ-চমচম-রাবড়ি-ছানার পায়েসকে জড়িয়ে চকোলেটের প্রলেপ। সেরা ক্যাডবেরি-মিষ্টি বাছাইয়ে ভোটাভুটি শুরু হয়েছে দিন সাতেক। প্রিয় দোকানের মিষ্টি চেখে ভোট পড়ছেও লক্ষ লক্ষ। রসিকজনের অনেকের মতেই, এই মিষ্টি-যুদ্ধ বাঙালির স্বাদের ভুবনে নতুন দিক খুলে দিয়েছে।
শনি-রবির দু’দিনই এই নতুন মিষ্টির সমর্থনে প্রচারের ঢল নামল শহরের রাজপথ বা গলিতে। নয়া ঘরানার মিষ্টির ‘সন্দেশ’ দিয়ে মজাদার পোস্টার-হোর্ডিংয়ে শহর ছয়লাপ। শীতলতম দিনেও ফিল্ম-টিভি-র তারকারা দল বেঁধে পাড়ায় পাড়ায় প্রচারে। ম্যাটাডর বা খোলা জিপে নেতা-নেত্রীদের মতোই জমাটি রোড-শো। গত ভোটে একই দিনে কলকাতা ও হাওড়ায় পথে নেমে প্রচারে বেরিয়েছিলেন বুদ্ধ-মমতারা। এ বার লেকটাউনে কে সি দাশের হয়ে আবির চট্টোপাধ্যায়ের মিছিলের সময়েই ভবানীপুরে বলরামের হয়ে মাঠে নামলেন পার্নো মিত্র। শ্যামবাজারে সেন মহাশয়ের হয়ে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের প্রচারের সময়েই যাদবপুরে হিন্দুস্থান সুইট্সকে জেতাতে দৌড়-ঝাঁপ রুদ্রনীল ঘোষের।
সিমলেপাড়ায় নকুড় নন্দীর হয়ে প্রচারে নেমে বাংলা রক গানের শিল্পী রূপম ইসলাম বললেন, “বিশ্ব-নাগরিক বাঙালি রক মিউজিককে যেমন আপন করেছে, তেমনই চকোলেটও বাঙালির পরমাত্মীয়। ক্যাডবেরি মিষ্টি তাই হিট করবেই।” আবার ভীম নাগের ভক্ত জুন মালিয়ার বিশ্বাস, “ভিনদেশিদের কাছেও সন্দেশ-রসগোল্লার খাঁটি বাঙালিয়ানাকে পৌঁছে দিচ্ছে ক্যাডবেরি।”
ভোটারদের চাহিদায় রাত আটটাতেও ট্র্যাঙ্গুলার পার্কে যাদবের দোকানে নতুন ক্যাডবেরি-মিষ্টির অর্ডার পাঠাতে হচ্ছে। এভারেস্ট হাউজে গাঙ্গুরাম বা নিউ আলিপুরের গুপ্ত ব্রাদার্সে রাত ১০টাতেও ভোটারদের থিকথিকে ভিড়। দুঁদে রাজনীতিকদের থেকে মিষ্টি-শিল্পীরাও কম যান না। প্রতিপক্ষের স্ট্র্যাটেজি বুঝতে চুপিচুপি প্রতিদ্বন্দ্বী দোকানের মিষ্টি আনিয়ে চাখাচাখি চলছে। রিয়্যালিটি শো-মার্কা এই উত্তেজনার আঁচেই বঙ্গজীবন অতএব সুমধুর। |
|
|
|
|
|