নিজস্ব সংবাদদাতা • ইলামবাজার |
আনুষ্ঠানিক ভাবে রবিবার বিকেলে উদ্বোধন হল জয়দেব মেলার। জেলার দুই মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, নুরে আলম চৌধুরী, সাংসদ রামচন্দ্র ডোম, জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু সরকারি ভাবে উদ্বোধনের আগেই মেলা শুরু হয়ে যায়। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অজয়ে মকরস্নানের জন্য শনিবার রাত থেকে ভিড় জমিয়েছেন পূণ্যার্থীরা। বরাবরের মতো স্নান সেরে পুজো দেওয়ার জন্য রবিবার রাধাবিনোদ মন্দিরে পড়েছিল লম্বা লাইন। বিভিন্ন আখড়া ও স্থায়ী আশ্রম থেকে ভেসে আসছিল বাউল-কীর্তনের সুর। জয়দেব মেলা কমিটির অন্যতম সদস্য তথা ইলামবাজারের বিডিও অনিরুদ্ধ নন্দী বলেন, “এ বার খুব সামান্য পরিমাণ জল হিংলো জলাধার থেকে ছাড়া হয়েছিল। তবে অজয়ে পর্যাপ্ত জল ছিল। এখনও পর্যন্ত সব কিছু শান্তিপূর্ণ ভাবে চলছে।”
একদা জয়দেবের রাধাবিনোদ মন্দিরের মহান্তদের দায়িত্বে থাকা এই মেলা ১৯৮১ সালে সরকার অধিগ্রহণ করে। বছর দু’য়েক আগে পর্যন্ত রাধাবিনোদ মন্দিরের চার পাশে স্বল্প পরিসরে মেলায় হাজার হাজার স্টল, অস্থায়ী আশ্রম, আখড়া বসত। মানুষের কথা ভেবে ইলামবাজারের জয়দেব সংলগ্ন অজয়ের চরে মেলাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার মেলায় আসা লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় ‘গাইড ম্যাপ’ তৈরি করা হয়েছে। অনুসন্ধান কেন্দ্র থেকে বিলি করা হয়েছে। জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “জয়দেব মেলার ঐতিহ্য রয়েছে। মেলা যাতে সুষ্ঠু ভাবে চলে সে ব্যাপারে প্রশাসন নজর রাখছে।” মেলায় এত মানুষের খাওয়া-দাওয়ার জন্য আখড়ায় আখড়ায় যে বিশাল আয়োজন হয়, তা কতটা বিপজ্জনক প্রতিবারেই কথা ওঠে। তবে এ বার রাস্তা চওড়া রেখে মেলা বসানো এবং মেলার একটা অংশকে অজয়ের চরে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে সে রকম কিছু ঘটবে না বলে আশাবাদী প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এ দিন উদ্বোধনের পরেই খুলে দেওয়া হল বাউল মঞ্চ। সেখানে তিন দিন ধরে চলবে গানের অনুষ্ঠান। তা ছাড়া, আখড়াগুলিতে বাউল, কীর্তনের আয়োজন রয়েছে। এই কনকনে শীতও আনন্দের সব উপকরণই হাজির মেলায়।
|