শুরু হয়েছে এক সঙ্গে। শেষও হবে একই দিনে। কাছাকাছি মাঠে দু’টি মেলাকে ঘিরে শীতে জমজমাট আসানসোল শিল্পাঞ্চল।
বুধা রেল মাঠে শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে বইমেলা। শেষ হবে ২২ জানুয়ারি। প্রতি দিন সন্ধ্যায় থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। খাদ্যমেলা চলছে বইমেলার অদূরেই হাটন রোড সংলগ্ন একটি মাঠে।
শুক্রবার বইমেলার উদ্বোধন করেন সাহিত্যিক সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়। পেরিয়ে গিয়েছে তিন দিন। খুশি বইপ্রেমীরা। বিক্রেতারাও। মোট ৬৪টি প্রকাশনা সংস্থা এ বারের মেলায় স্টল দিয়েছে। আনন্দ পাবলিশার্স-এর ব্যোমকেশ, কাকাবাবু, পাণ্ডব গোয়েন্দা থেকে টিনটিনের রমরমা বাজার। জানা যায়, ভালই বিকোচ্ছে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম আলো, পূর্ব-পশ্চিম। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের দশটি উপন্যাসের সংকলন, তসলিমা নাসরিনের লজ্জা ও সুচিত্রা ভট্টাচার্যের উপন্যাসের সংকলন। একটি প্রকাশনা সংস্থার পক্ষে বাবলু মণ্ডল জানান, শিশু সাহিত্যের বাজার গরম। লিটল ম্যাগাজিনের বাজারেও খুশি সম্পাদকেরা। সুবীর দাস, বিষ্ণুসিংহ রায়, দীপঙ্কর মুখোপাধ্যায়রা জানান, দুর্গাপুজোর থেকেও বেশি প্রাণের স্পন্দন অনুভব করেন এই বই মেলায়। তাই প্রতি বারই ছুটে আসেন। স্থানীয় ও কলকাতার লেখক ও শিল্পীদের মধ্যে একটি মেলবন্ধন গড়ে ওঠে বলেও তাঁরা জানান। বরাকরের বাসিন্দা, চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র অগ্নিশ্বর খাণ্ডাইত বাবার সঙ্গে মেলায় এসে খুব খুশি। সে বলে, “এক সঙ্গে এত বই দেখতে পেয়ে খুব ভাল লাগে। তাই প্রতি বারই আসি।” আসানসোলের মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী শর্মিলাদেবী বলেন, “এই বইমেলায় এসে ভারী আনন্দ হয়। ৩১ বছর ধরেই আমি আসছি মেলায়।” |
খাদ্যমেলায় স্টলের সংখ্যা ৪২। তার মধ্যে ২০টিতে পাওয়া যাচ্ছে খাবার। ভাজা পুলি, পাটিসাপটা, চুষি পিঠে, দুধ পুলি, মালপোয়ার সমারোহ দেখে খুশি বার্নপুর রিভার সাইডের সোমা মাজি, বন্দনা মাজিরা। পাশেই ফিস ফিঙ্গার, তন্দুর পমপ্লেট-সহ মাছের নানা পদ সাজানো। একই সঙ্গে মেলায় পাওয়া যাচ্ছে মটন, চিকেন ও পনিরের ঘুগনি। মেলায় আসা অনন্যা মজুমদার জানান, বরাবরই এই খাদ্যমেলা তাঁকে টানে। প্রায় পাশাপাশি একই সঙ্গে বই মেলা ও খাদ্যমেলা হওয়ায় ভীষণ আনন্দও হয় বলে জানান তিনি। আমলকি, উচ্ছে, ক্যাপসিকাম, তেঁতুল, সবজি, লঙ্কার মতো মোট ৪০ ধরনের আচার মিলছে মেলায়। পাশেই আছে নানা রকমের পানের বাহার। ব্যান্ডেল থেকে আসা বিক্রেতা উত্তম সাহা বলেন, “আমি প্রতি বারই আসি। খাদ্যরসিক আসানসোলকে দেখে আমি মুগ্ধ।” বইমেলার আয়োজক যুব শিল্পী সংসদের সম্পাদক হিতেন সেনশর্মা ও খাদ্য মেলার আয়োজকদের পক্ষে মনোজিৎ ঘোষরায় বলেন, “আমাদের মেলা এখন আসানসোলের ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। মানুষকে আনন্দ দিতে পেরে আমরা খুশি।” |