লোকালয়ে ঢুকে পড়েছিল সে। স্থানীয় গ্রামবাসীদের টাঙি-বল্লমের ঘা থেকে তাকে বাঁচাতে জাল দিয়ে ধরে চিতাবাঘটিকে বৈকণ্ঠপুর উদ্ধার কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছিল। কিন্তু জলপাইগুড়ি বনাঞ্চলের ওই ঠিকানায় পৌঁছনোর আগে পথেই মারা গেল বছর দেড়েক বয়সের ওই স্ত্রী-চিতাবাঘটি।
শুধু ওই চিতাটিই নয়, শুক্রবার আপালচাঁদ রেঞ্জের মালহাটি বিটেও পাওয়া গিয়েছে একটি মৃত চিতাবাঘের দেহ। তার পিঠে স্পষ্ট ক্ষত চিহ্ন থেকে বন বিশেষজ্ঞদের অনুমান তির ছুড়ে মারা হয়েছিল মাস ছয়েক বয়সের চিতাবাঘটিকে। একই দিনে দু-দুটি চিতাবাঘের মৃত্যুতে উদ্বিগ্ন বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন বলেন, “ধরা পড়েও ওই চিতাবাঘটি কেন মারা গেল তা বনকর্তাদের কাছে জানতে চাওয়া হবে। আপালচাঁদে চিতাবাঘটির মৃত্যু নিয়েও রিপোর্ট চাইব।” ক্ষুব্ধ স্থানীয় প্রকৃতিপ্রেমী সংগঠনগুলিও। ডুয়ার্সের নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার সোসাইটির সম্পাদক সুজিত দাস যেমন এ ব্যাপারে যাবতীয় দায় চাপিয়েছেন বন বিভাগের উপরে। তিনি বলেন, “বনকর্মীদের অপেশাদারিত্ব এবং টহলদারির অভাবই এ জন্য দায়ী।” |
বৈকণ্ঠপুরে চিতাবাঘ দু’টির দেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে বন্যপ্রাণ (২) বিভাগের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক কল্যাণ দাস বলেন, “আপালচাঁদের বাঘটি সম্ভবত তির বিদ্ধ হয়েই মারা গিয়েছে। তবে মালবাজারের ওই চিতাটি কী কেন মারা গেল তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পেলে বোঝা সম্ভব নয়।” তবে সে’টি আগে থেকেই অসুস্থ ছিল বলে মনে করছেন বনকর্মীদের একাংশ। মালবাজারের ১৪ নম্বর ওয়ার্ড লাগোয়া নিউ গ্লাঙ্কো চা বাগান এলাকায় গত কয়েক দিন ধরেই চারটি শাবক-সহ একটি চিতাবাঘ ঘোরাফেরা করছিল। তা নিয়ে শহরে কিঞ্চিৎ আতঙ্কও ছিল। স্থানীয় বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার চা বাগানের ঝোপে শাবকগুলিকে বার কয়েক দেখা গেলেও মা চিতাবাঘটিকে দেখা যায়নি। তবে, যে চিতাবাঘটি ধরা পড়ে সেটি ওই চিতাটিই কিনা তা নিয়ে অবশ্য সংশয় রয়েছে। এ দিন সকালে বৈকুন্ঠপুর ডিভিশনের কাঠামবাড়ি রেঞ্জের উত্তর বারোঘরিয়া এলাকায় ওই স্ত্রী চিতাবাঘটি ঢুকে পড়ে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের চেঁচামেচিতে ঘাবড়ে গিয়ে সে’টি আলু খেতে লুকোনোর চেষ্টা করে। সেখানেই স্থানীয় এক কৃষকের উপরে হামলাও করে বসে সে। এই সময়ে জখম হন তিন জন। খবর শুনে ঘটনাস্থলে আসেন বনকর্মীরা। তাঁরাই চিতাবাঘটিকে জাল-বন্দি করেন। |