ব্রিটিশ অধ্যাপক খুনে জড়িয়ে গেল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক শিক্ষকের নাম। বুধবার রাতে স্টিভেন রলিং নামে ওই অধ্যাপক খুন হন। দেহ উদ্ধার হয় তাঁরই বন্ধু দেবেন্দ্র সিভিয়ার বাড়ি থেকে। দেবেন্দ্রই খুন করেছেন সন্দেহে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। পরে অবশ্য জামিনে মুক্তি পান দেবেন্দ্র। ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত তাঁর জামিন বহাল থাকবে।
কী ঘটেছিল বুধবার রাতে?
অক্সফোর্ডের অ্যাবিংডনে সাউথমোর গ্রামে রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ চিকিৎসা-কর্মীদের ডেকে পাঠানো হয়। তাঁরা গিয়ে দেখেন, স্থানীয় এক বাসিন্দা কৃত্রিম ভাবে রলিংয়ের শ্বাস ফেরানোর
চেষ্টা করছেন। কিন্তু তার পরে চিকিৎসাকর্মীদের সামনেই মারা যান রলিং। পুলিশের কাছে দেবেন্দ্র দাবি করেন, তিনি আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছিলেন মাত্র। কিন্তু রলিংয়ের বোন লিন্ডা বলছেন, “তিরিশ বছর ধরে ওঁদের বন্ধুত্ব। ঝগড়া হয়েছিল বলে মনে হয় না।”
|
স্টিভেন |
|
দেবেন্দ্র |
বছর ৪৯-এর দেবেন্দ্র অক্সফোর্ডের সেন্ট জন্স কলেজের অঙ্কের শিক্ষক। স্টিভেন ছিলেন জ্যোতিঃপদার্থবিদ্যার (অ্যাস্ট্রোফিজিক্স) অধ্যাপক। তিনি পড়াতেন অক্সফোর্ডের সেন্ট পিটার্স কলেজে। সম্প্রতি জ্যোতিঃপদার্থবিদ্যারই বিশেষ পাঠ্যক্রম দু’জনে মিলে পড়াচ্ছিলেন। এক দশকেরও বেশি সময় তাঁরা বিভিন্ন গবেষণার কাজও একসঙ্গে করেছেন। ‘ফাউন্ডেশনস অফ সায়েন্স ম্যাথামেটিক্স’ এবং ‘ফাউন্ডেশনস অফ সায়েন্স ম্যাথামেটিক্স: ওয়ার্কড প্রব্লেমস’ নামে যৌথ ভাবে দু’টি বইও লিখেছেন তাঁরা।
অক্সফোর্ডের জ্যোতিঃপদার্থবিদ্যার বিভাগের সহকারী গবেষক টনি লাইনাস-গ্রে বলছেন, “সিভিয়া তো
স্টিভেন রলিংয়ের অসম্ভব ভাল বন্ধু।” একই মত সিভিয়ার বাড়ির উল্টো দিকের বাসিন্দা ডানকান লোগানের। তাঁর
কথায়, “বিশ্বাসই করতে পারছি না, দেবেন্দ্র কাউকে আঘাত করতে পারে। ওঁকে কখনও উঁচু গলায় কথা বলতে শুনিনি। স্টিভেন-দেবেন্দ্র দু’জনেই ভদ্র, বিনয়ী এবং পরিশ্রমী মানুষ। কোনও দিন ওঁদের ঝগড়া হয়েছে বলে শুনিনি।”
লোগানই আরও জানালেন স্টিভের সম্পর্কে। “স্টিভকে এক বার হঠাৎ বিদেশ যেতে হবে। কিছুই গোছানো হয়নি। সে দিন ওঁদের বাড়িতে ছিলাম। ওঁর বোন লিন্ডা ছুটোছুটি করে টিকিট বুক করছে, জিনিস গোছাচ্ছে। স্টিভের হেলদোল নেই। ও মজা করে বলত, ফ্রিজ থেকে বের করে ঠান্ডা পানীয়ের ক্যানটা ফুটো করে দেবেন্দ্রই আমাকে দেয়!” দু’জনে পরস্পরকে শ্রদ্ধাও করতেন বলে জানাচ্ছেন লোগান। |