সকাল থেকে কুয়াশায় ঢাকা মেঘলা আকাশ। দুপুরের পরে কনকনে হাওয়ার সঙ্গে কিছুক্ষণ ঝলমলে রোদ। রোদ্দুর-মেঘের এমন লুকোচুরির মাঝেই বৃহস্পতিবার কাটল উত্তরবঙ্গবাসীর। ৩ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যেই ঘোরেফেরা করল ছয়টি জেলার বিভিন্ন এলাকার তাপমাত্রা। স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম সার্ধ শতবর্ষের জন্য সমস্ত সরকারি দফতর, স্কুল কলেজ ছুটি থাকায় বহু বাসিন্দাই এদিন পিকনিকে মেতে ওঠেন। অনেকে পরিবার, বন্ধুদের সঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে যান। সন্ধ্যার পর ঠান্ডা হাওয়া বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে তাপমাত্রাও।
দার্জিলিঙে এদিন নতুন করে তুষারপাত হয়নি। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুগোল বিভাগের প্রধান তথা আবহাওয়াবিদ সুবীর সরকার বলেন, “একটি বড়মাপের পশ্চিমী ঝঞ্ধা উত্তরবঙ্গের দিকে ধেয়ে আসছে। এর দাপটে আবহাওয়ার হঠাৎ করে পরিবর্তন হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাপমাত্রা আরও কমবে বলেই মনে হচ্ছে।” |
আবহাওয়াবিদেরা জানিয়েছেন, পশ্চিম হিমালয় থেকে একটি শক্তিশালী পশ্চিমী ঝঞ্ঝা উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের দিকে আসতে শুরু করেছে। সে কারণে আগামী ২৪ ঘন্টায় উত্তরবঙ্গ জুড়ে বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। এর জেরেই দিনের তাপমাত্রা আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি, সিকিম-সহ দার্জিলিঙের পাহাড়ি এলাকায় তুষারপাতের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এদিন গ্যাংটক লাগোয়া কিছু এলাকায় তুষারপাত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তুষারপাত হয়েছে উত্তর সিকিমেও।আবহাওয়া দফতর সুত্রে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় গোটা উত্তরবঙ্গের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে। দার্জিলিঙে ০.৬, কালিম্পঙে ৬, শিলিগুড়িতে ১০.৫, গ্যাংটকে, ৩.৬, মালদায় ৯, কোচবিহারে ১২ এবং জলপাইগুড়িতে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “পশ্চিমী ঝঞ্ধার জন্য দিনের তাপমাত্রাতো কমবেই। পাহাড়ি এলাকায় তুষারপাতের সম্ভবনাও প্রবল হয়ে উঠেছে। অন্তত আরও দুই দিন আকাশ মেঘলা থাকবে, শীত বাড়বে।” শিলিগুড়িতে দিনভর কনকনে হাওয়ার জেরে ঠান্ডার বেড়েই চলেছে। প্রায় সকাল ১০টা অবধি শহর কুয়াশায় মোড়া থাকলেও পরে বেলা বাড়তে রোদ ওঠে। বিকালের পর থেকে ফের তাপমাত্রা কমেছে। দার্জিলিং শহর এবং লাগোয়া এলাকায় দিনের তাপমাত্রা ৪-৫ ডিগ্রি সেলিসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। সন্ধ্যায় তা আরও কমে যায়। |
তবে পাহাড়ে এদিন কোথাও নতুন করে তুষারপাত হয়নি। গত বুধবার টাইগারহিল, ঘুম, জোরবাংলো-সহ কয়েকটি এলাকায় বরফ পড়ে। কিন্তু সকালের পর থেকে রোদের জন্য তা পুরোপুরি জমতে পারেনি। জলপাইগুড়ির-সহ লাগোয়া এলাকার আকাশ মেঘে ঢেকে যায়। সেই সঙ্গে ছিল কনকন হাওয়া। একই ভাবে সকাল থেকে কনকনে ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিল গোটা কোচবিহার। দুপুরে সূর্যের দেখা মিললেও তাপমাত্রা খুব বেশি বাড়েননি। ঠান্ডা আবহাওয়া ও ছুটির দিন থাকায় জরুরি কাজ ছাড়া অনেকেই ঘুরতে যান। বিভিন্ন বাসেও অন্যান্য দিনের তুলনায় ভিড় কম ছিল। সন্ধ্যায় নামতেই ঠান্ডার দাপটে কোচবিহার, দিনহাটা, তুফানগঞ্জের বিভিন্ন বাজারে লোকজনের ভিড় কমতে শুরু করে। মালদহ ও দুই দিনাজপুরের আবহাওয়াও ছিল একই রকম। |