আপ ব্রহ্মপুত্র মেল দুর্ঘটনার পরে ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। এ বার বিপত্তি ডাউন ব্রহ্মপুত্র মেলে। বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ মালদহের আদিনা স্টেশনের কাছে ঘটনাটি ঘটে। তবে বুধবারের মতো প্রাণহানি কিংবা ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। রেল সূত্রের খবর, অসমগামী ট্রেনটির ইঞ্জিন লাগোয়া লাগেজ ভ্যানের পাশের যাত্রী-কামরার কোনও যন্ত্রাংশ ভেঙে যাওয়ায় বিপত্তি ঘটে। ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবারের দুর্ঘটনার তদন্তে নেমে গাফিলতির অভিযোগে ৬ জন রেলকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। |
এই দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম ভূষণ পাটিল বলেন, “ব্রহ্মপুত্র মেলের ইঞ্জিন লাগোয়া লাগেজ ভ্যান ও লাগোয়া সাধারণ কামরার যন্ত্রাংশ কোনও কারণে ভেঙে যায়। আদিনা স্টেশন পার হওয়ার পরই ব্রহ্মপুত্র মেলের চালক অনুভব করেন, প্রচণ্ড ঝাঁকুনি এবং বিকট শব্দ হচ্ছে। চালক ট্রেনটি সঙ্গে সঙ্গে থামিয়ে দেন। না হলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। ট্রেনের অ্যাক্সেলের স্প্রিং ভেঙে যাওয়ার জন্য ইঞ্জিন লাগোয়া যাত্রী-কামরাটি আদিনা স্টেশনে কেটে রেখে ট্রেনটি গুয়াহাটির উদ্দেশে রওনা হয়। কেন এমন হল, তা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” ট্রেনটি প্রায় ১২ ঘণ্টা দেরিতে চলছিল। চালক বিপুলকুমার নন্দী বলেন, “হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দে ট্রেন কেঁপে ওঠে। ভেবেছিলাম কোনও কামরা লাইনচ্যুত হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে জরুরি ব্রেক কষে ট্রেন থামাই। পড়ে দেখি লাগেজ ভ্যানের পাশের কামরার যন্ত্রাংশ ভেঙে গিয়েছে।” প্রায় ৪ ঘণ্টা ট্রেনটি ওই এলাকায় আটকে থাকে।
বুধবার করণপুরাতোতে আপ ব্রহ্মপুত্র মেলের সঙ্গে মালগাড়ির ধাক্কায় ৫ জন মারা যান। রেলের মালদহ ডিভিশনের ডিআরএম হর্ষ কুমার বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে সাহেবগঞ্জে ব্রহ্মপুত্র মেল দুর্ঘটনায় যে ৬ জনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে।” রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, সাসপেন্ড হয়েছেন মালগাড়ির চালক আর কে পাসোয়ান, সহকারী চালক এ কে সিংহ, গার্ড অজয় কুমার, করণপুরাতো স্টেশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট স্টেশন ম্যানেজার অনিরুদ্ধ কুমার, সাহেবগঞ্জের লোকো ইন্সপেক্টর এ এন যাদব ও স্টেশনকর্মী নীরজ কুমার। মালদহ ডিআরএম জানান, উত্তর-পূর্ব রেলের চিফ সেফটি কমিশনার দলবীর সিংহ করণপুরাতো স্টেশনে ব্রহ্মপুত্র মেলের তদন্ত শুরু করেছেন।রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মালগাড়িটি বাকোডি স্টেশন থেকে ছেড়েছিল। রাত ১২টা ৯ মিনিটে মালগাড়িটির করণপুরাতো স্টেশনে ঢোকার পরেই খারাপ হয়ে যায়। মালগাড়ির চালক, সহকারী চালক ও গার্ড মালগাড়ি রেখে সাড়ে চারটা নাগাদ শিয়ালদহ-বারাণসী এক্সপ্রেসে সাহেবগঞ্জ চলে যান। ডিআরএম বলেন, “বিকল মালগাড়িকে স্টেশনে ফেলে চালক, সহকারী চালক, গার্ডের সাহেবগঞ্জে যাওয়া উচিত হয়নি। সেই কারণেই তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে। ট্রেনটি ঠিক মতো না রাখা ও ইঞ্জিনের গণ্ডগোলের জন্যও করণপুরাতো স্টেশনের কর্তব্যরত এএসএম অনিরুদ্ধ কুমারও ও স্টেশনকর্মী নীরজ কুমার এবং সাহেবগঞ্জের লোকো ইন্সপেক্টরকেও সাসপেন্ড করা হয়েছে।” |