পরিষেবায় অবহেলার অভিযোগ তুলে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কে ভাঙচুর চালাল এক দল ফরওয়ার্ড ব্লক কর্মী-সমর্থক। ভাঙা হল ব্লাডব্যাঙ্কের কাউন্টারের কাচ, চেয়ার-বেঞ্চ। হাসপাতাল কর্মীদের সঙ্গে ওই ফব কর্মী-সমর্থকদের বচসাও বাধে। ক্রমে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুকুমার মাইতি। পরে পুলিশ এসে অবস্থা সামাল দেয়। ফব-কর্মীদের এই আচরণে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের পরিজনেরা বেজায় অসন্তুষ্ট। তাঁদের বক্তব্য, সামান্য অজুহাতে এ ভাবে ভাঙচুর চালানো অত্যন্ত গর্হিত কাজ। হাসপাতালের সহকারী সুপার শ্যামল পট্টনায়কেরও মন্তব্য, “এমন ঘটনা অনভিপ্রেত।”
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার রাতে মেদিনীপুর শহরের কালেক্টরেট মোড়ে পথ দুর্ঘটনায় আহত হন প্রকাশ চক্রবর্তী নামে ফরওয়ার্ড ব্লকের সর্বক্ষণের এক কর্মী। সাইকেলে যাওয়ার পথে একটি অটো তাঁকে ধাক্কা মারে। রাস্তায় পড়ে মাথায় আঘাত পান প্রকাশবাবু। স্থানীয়রাই উদ্ধার করে তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন ফব-র জেলা সম্পাদক সুকুমার ভুঁইয়া। আহত প্রকাশের রক্তের প্রয়োজন হয়। রক্ত দিতে দেরি হয়েছে, এই অভিযোগ তুলেই হাসপাতালে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেন ফব কর্মীরা। হাসপাতাল কর্মীদের সঙ্গে বচসা শুরু হয় তাঁদের। ক্রমে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এর পরেই কয়েকজন ফব-কর্মী ব্লাডব্যাঙ্কের কাউন্টারের কাচ ভেঙে দেন। ভাঙা হয় আশপাশের চেয়ার-বেঞ্চ। |
ভাঙচুরের ঘটনার কথা মেনে নিয়ে ফব-র জেলা সম্পাদক সুকুমারবাবুর দাবি, “শুরুতে অন্য গ্রুপের রক্ত দেওয়া হয়েছিল। সেই থেকেই গোলমালের সূত্রপাত।” তাঁর সাফাই, “দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তাঁদের কয়েক জনই ক্ষোভে ফেটে পড়েন। উত্তেজনার বশে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি।” রাতে সুকুমারবাবু নিজেই হাসপাতালে এসেছিলেন। হাসপাতাল কর্মীদের বক্তব্য, তাঁর উপস্থিতিতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। যদিও ঘটনার সময়ে তিনি হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না বলে দাবি করে ফব-সম্পাদক বলেন, “আমি ওখান থেকে চলে আসার পরেই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।” হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবশ্য বক্তব্য, অন্য গ্রুপের রক্ত দেওয়া হয়নি। রক্ত দিতে অযথা দেরি হচ্ছে, মিথ্যে এই অভিযোগ তুলেই বিশৃঙ্খলা তৈরি করা হয়। হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, “পর্যাপ্ত পরিকাঠামো নেই। সেই পরিস্থিতিতেই কাজ করতে হচ্ছে। তার মধ্যে সামান্য অভিযোগ তুলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হলে তো অন্য রোগীরাও সমস্যায় পড়েন। এটা সকলেরই ভেবে দেখা উচিত।” পুলিশ জানিয়েছে, এ ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট অভিযোগ করলে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। |