|
|
|
|
বাস থেকে উদ্ধার হল প্রাচীন মূর্তি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
নেপালের পাচারের আগে বাসে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা মূল্যের প্রাচীন কষ্টিপাথরের মূর্তি উদ্ধার করল শুল্ক দফতরের গোয়েন্দা শাখা। বুধবার ভারত-নেপাল সীমান্তের দেবীগঞ্জ এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। একটি বাসের পিছনের অংশের সিটের নিচে বস্তায় ওই পাঁচটি মূর্তিগুলি রাখা ছিল। নবম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর ওই মূর্তিগুলি দেবীগঞ্জ-পানিট্যাঙ্কি এলাকা দিয়ে নেপালের কাঁকরভিটা এলাকায় পাচারের পরিকল্পনা ছিল বলে শুল্ক দফতরের সূত্রের খবর। তবে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে কাউকে অবশ্য ধরতে পারেনি গোয়েন্দারা। শুল্ক দফতরের অ্যাডিশনাল কমিশনার (উত্তরবঙ্গ এবং সিকিম) আর মনগাবাবু বলেন, “আমাদের দফতরের প্রিভেনটিভ এবং গোয়েন্দা শাখার অফিসারেরা গোপন সূত্রে খবর পেয়ে নকশালবাড়ি, দেবীগঞ্জ এলাকার বিভিন্ন বাসে তল্লাশি শুরু করেন। দীর্ঘক্ষণ তল্লাশির পর একটি বাস থেকে বস্তায় মোড়া মূর্তিগুলি উদ্ধার করা হয়েছে। নেপালে মূর্তিগুলি পাচারের চেষ্টা করা হচ্ছিল। কাউকে ধরা যায়নি।” ইতিমধ্যে ওই বাসের চালক, খালাসিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে অ্যাডিশনাল কমিশনার জানিয়েছেন। কষ্টিপাথরের মূর্তিগুলি উদ্ধারের পর তা পরীক্ষার পর উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রধান বিজয় কুমার সরকার জানিয়ে দেন, প্রতিটি মূর্তি নবম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর। শুল্ক দফতরের অফিসারেরা জানিয়েছেন, উদ্ধারকরা মূর্তিগুলির মধ্যে সবচেয়ে মূল্যবান নবম শতাব্দীর একটি বিষ্ণু মূর্তি। আন্তর্জাতিক বাজারে এর দাম কমপক্ষে ২৫ লক্ষ টাকা। প্রায় ১৬ ইঞ্চি লম্বা এবং ৯ ইঞ্চি চওড়া দাঁড়ানো মূর্তির ওজন প্রায় ১২ কেজি। চারটি হাতে যথাক্রমে পদ্ম, গদা, চক্র এবং শঙ্খ রয়েছে। মূর্তির ডানদিকে একটি মহিলার এবং বামদিকে একটি পুরুষ দাঁড়ানো অবস্থায় রয়েছে। পদ্মফুলের উপর বিষ্ণু দাঁড়িয়ে রয়েছে। একই ভাবে ১০ কেজি ওজন বিশিষ্ট দুই ফুট লম্বা এবং ১০ ইঞ্চি চওড়া আরেকটি বিষ্ণু মূর্তি উদ্ধার হয়েছে। এটির বাজার মূল্য প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা। এ ছাড়া ১৮ ইঞ্চি লম্বা এবং ১২ ইঞ্চি চওড়া ২০ কেজি ওজনের একটি সূর্য মূর্তির নিচের অংশ, ২৫ কেজি ওজনে শিব মূর্তি এবং ১৫ কেজি ওজনের একটি মহিলা দেবীর মূর্তি উদ্ধার হয়েছে। দেবীর মূর্তিটি ভাঙাচোরা অবস্থায় থাকায় সেটি কোন দেবীর তা বোঝা যাচ্ছে না। শুল্ক দফতরের গোয়েন্দা শাখার অফিসারেরা জানান, চিন, ইউরোপের চোরাবাজারে নবম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মূর্তির লক্ষাধিক টাকা দাম মেলে। এক সময়কার পূর্ববঙ্গ, বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন ভগ্নপ্রায় মন্দির থেকে ওই মূর্তিগুলি এক চুরি করা হয়েছে। রায়গঞ্জ, মালদহ, হিলি সীমান্ত দিয়ে চোরাপথে এপারে আনা হয়। তার পরে সুযোগ বুঝে সব মূর্তিই নেপালে পাঠানো হয়। এর পরে গ্রাহক, দাম ঠিক হওয়ার পর ফের তা নির্দিষ্ট গন্তব্যে পাঠানো হয়। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, বাজারে ওই পাঁচটি মূর্তির দাম ৫০ লক্ষ টাকা ধরা হলেও তা চোরা বাজারে ১ কোটি টাকাও ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ওই অফিসারদের অনুমান। |
|
|
|
|
|