অশান্তির আশঙ্কা বিকাশ পরিষদে
বন্ধ ঢেকলাপাড়া বাগান খোলাতে মোর্চার হুমকি
দার্জিলিং থেকে ডুয়ার্সের ঢেকলাপাড়ায় গিয়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার এক নেত্রী চা বাগান খোলানোর আত্মহত্যার হুমকি দেওয়ায় অশান্তির আশঙ্কা করছে আদিবাসী বিকাশ পরিষদ। পরিষদের অভিযোগ, ডুয়ার্সে পায়ের তলায় মাটি খুঁজতেই বন্ধ ঢেকলাপাড়া চা বাগানে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে মোর্চা। আজ, শুক্রবারের মধ্যে বাগান খোলা না হলে সুমিত্রা রাই নামের ওই মোর্চা নেত্রী বাগানের গেটের সামনে আত্মহত্যা করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। ফুটপাতে চাদর বিক্রেতা ওই মহিলা নিজেকে টাউন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক বলেও দাবি করেছেন। আদিবাসী অধ্যুষিত চা বাগানে পায়ের নিচে মাটি শক্ত করতেই মোর্চা দলীয় নেত্রীকে দিয়ে আত্মহত্যার হমকি’র নাটক করছে বলে অভিযোগ বিকাশ পরিষদের। সংগঠনের রাজ্য কমিটির নেতা বৈরাগী মিনজ বলেন, “পাহাড় থেকে মহিলা নেত্রীকে পাঠিয়ে আত্মহত্যা হুমকি দিয়ে নাটক করা হচ্ছে। প্রশাসনের বিষয়টি দেখা উচিত। মোর্চার নেতৃত্বের বোঝা উচিত সস্তার এই রাজনীতি করেও আদিবাসীদের মন পাওয়া যাবে না। বন্ধ বাগান খোলার জন্য আমরা সরকারে বলেছি।” হঠাৎ পাহাড় থেকে ডুয়ার্সে এসে আদিবাসী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়ে রীতিমত আত্মহত্যার হুমকি দেওয়ার বিষয়টি রাজনীতি ছাড়া কিছু নয় বলে অভিযোগ করেছে পরিষদের মতই অন্য চা শ্রমিক সংগঠনগুলিও। আরএসপি চা শ্রমিক নেতা প্রাক্তন বিধায়ক নির্মল দাস বলেন, “প্রশাসন দ্রুততার সঙ্গে বিষয়টি দেখতে হবে। কারও প্ররোচনায় যদি কেউ এমন হুমকি দেয় তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আইনি জটিলতা কাটিয়ে বাগান খোলা দরকার।” চা শ্রমিক সংগঠন এনইউপিডব্লু’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাবলু মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই ভাবে রাজনীতি করে নিজেদের ভিত শক্ত করা যায় না। মোর্চা নেতৃত্বের বিষয়টি বোঝা দরকার।” ঘটনার জেরে যথেষ্টই অস্বস্তিতে পড়েছেন মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতারা। দলের সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, “দলের তরফে সুমিত্রা তো বটেই কাউকেই এই ধরণের কোনও কিছু করতে বলা হয়নি। পুরোটাই মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আমরা দলীয় স্তরে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।” ৪০ বছর বয়সী সুমিত্রা রাই তাঁর স্বামী, ছেলে, মায়ের সম্মতি নিয়েই আত্মাহুতির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার দাবি করেছেন। দার্জিলিঙে তিনি ফুটপাতে চাদর বিক্রির ব্যবসা করেন। দল অবশ্য তাঁকে কিছু বলেনি বলে তাঁর দাবি। বন্ধ বাগানের গেটের সামনে দাড়িয়ে সুমিত্রা রাই বলেন, “শ্রমিকদের দুর্দশা শুনে আর থাকতে পারিনি। বাগান না খুললে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মাহুতি দেব।” রাজ্য সরকারের তরফে বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর শুরু হয়েছে। রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু বলেন, “সম্প্রতি ওই বাগানের শ্রমিকেরা অনুদানের টাকা পেয়েছেন। তবে বাগানে কে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “বিষয়টি দেখার জন্য জেলা শাসককে বলেছি। ওই মহিলার বিষয়টি আমি কিছু জাননি না।” সন্ধ্যায় বিস্তারিত খোঁজখবর নিতে বাগানে পুলিশ গিয়েছে বলে জানিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের এসডিপিও বিশ্বচাঁদ ঠাকুর। ২০০২ সালের অগস্ট মাস থেকে ঢেকলাপাড়া চা বাগান বন্ধ হয়ে রয়েছে। সেই থেকে সমস্যায় পড়েছেন ৬০৪ জন শ্রমিক ও তাদের পরিবারের লোকজন। এই বাগানের ১৫২০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছে বলে শ্রমিকদের দাবি। বহু শ্রমিক কাঁচা পাতা তুলে দুবেলা খেয়ে সংসার চালালেও টানা ছয় মাস অনুদান না মেলায় ডিসেম্বর মাসে ব্যাপক অনটন দেখা দেয়। ডিসেম্বর মাস থেকে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে বাগানের পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে শ্রমিকেরা জানিয়ছেন। এর মধ্যে গত চার দিন আগে মোর্চা নেত্রী সুমিত্রা বাগানে যান। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেছেন, “এই ভাবে কাউকে আত্মহত্যা করতে দেওয়া হবে না। পুলিশকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে দ্রুত বাগান খোলার চেষ্টা চলছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.