অধ্যক্ষকে আটকাতে আন্দোলন, ব্যতিক্রম জলপাইগুড়ির ছাত্রেরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
অধ্যক্ষের বদলি রুখতে বৃহস্পতিবার থেকে রিলে অনশন শুরু করেছেন জলপাইগুড়ি পলিটেকনিক কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। কলেজের অধ্যক্ষ শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ের বদলির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গত সোমবার থেকেই আন্দোলন শুরু করেছে কলেজের ছাত্র সংসদ। সম্প্রতি রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা কাউন্সিল থেকে জলপাইগুড়ি পলিটেকনিক কলেজের অধ্যক্ষ শুভাশিস মুখোপাধ্যায়কে কলকাতার জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ পলিটেকনিক কলেজে বদলির নির্দেশ জারি করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে একই কলেজে থাকা অধ্যক্ষদের অন্যত্র বদলির বিষয়ে সম্প্রতি রাজ্য কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নেয়। ওই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতেই শুভাশিসবাবু-সহ রাজ্যের মোট ৭ জন অধ্যক্ষকে বদলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অধ্যক্ষ শুভাশিসবাবু প্রায় ৬ বছর ধরে জলপাইগুড়ি কলেজের দায়িত্বে থাকায় তাঁরও বদলির নির্দেশ জারি হয়। বদলির নির্দেশের পরেই প্রতিবাদ শুরু করেন ছাত্রছাত্রীরা। গত সোমবার বদলির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পথ অবরোধ করার পরে মঙ্গলবার ও বুধবার কলেজে ক্লাস বয়কট করে প্রতিবাদ জানান ছাত্ররা। প্রতিবাদের পরেও রাজ্য কাউন্সিল বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ না করায় বৃহস্পতিবার থেকে কলেজের সামনে মঞ্চ তৈরি করে রিলে অনশন শুরু করেন কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। |
|
বৃহস্পতিবার ছবিটি তুলেছেন সন্দীপ পাল। |
তাঁদের দাবি, সর্বক্ষণ কলেজ ক্যাম্পাসে থাকা অধ্যক্ষ শুভাশিসবাবু ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকের ভুমিকা পালন করেন। কলেজের পঠনপাঠনও শুভাশিসবাবুর আমলে উন্নতি হয়েছে বলে ছাত্রছাত্রীদের দাবি। তাঁদের প্রতিবাদের জেরে কলেজের অচলাবস্থা কাটাতে রাজ্য কাউন্সিল থেকে দু’জন প্রতিনিধি জলপাইগুড়িতে আসবেন বলে জানা গিয়েছে। আজ, শুক্রবার তাঁরা কলেজে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ শুভাশিসবাবু বলেন, “ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের আবেগের থেকে আন্দোলন শুরু করেছেন। এ বিষয়ে আমি আর কী বলব! তবে সরকারি নির্দেশ আমাকে মানতে হবে। আমি চাইছি দ্রুত কলেজের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক।” সম্প্রতি রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন কলেজে অধ্যক্ষদের হেনস্থা হওয়ার একের পর এক ঘটনার সময়ে জলপাইগুড়ি পলিটেকনিক কলেজের ঘটনা ব্যতিক্রমী বলে জেলার শিক্ষানুরাগীরা মনে করছেন। কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিত পাল বলেন, “স্যার আমাদের অভিভাবকের মতো। তিনি রাতেও কলেজ ক্যাম্পাসেই থাকেন। যখন প্রয়োজন তখনই স্যারকে পাওয়া যায়। ছাত্রছাত্রীদের যে কোনও সমস্যা তিনি সমাধান করে দেন। প্রয়োজনে ছাত্রছাত্রীদের হয়ে প্রতিবাদও করেন।” আরেক ছাত্র প্রণব কুমার দেব বলেন, “স্যার আমাদের যথেষ্ট শাসন করেন। কলেজে সুসংহত পঠনপাঠন হয়। প্রতি ক্লাসের পাঠক্রমেও স্যারের নজর থাকে। স্যারকে আমরা কলেজ থেকে যেতে দেব না।” |
|