|
|
|
|
এক দিনে শহরে তাপমাত্রা কমল ৫ ডিগ্রি |
দ্বিতীয় ইনিংসে শীতের ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ে কাঁপন বাংলায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ইঙ্গিত ছিল, বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা নামবে। কিন্তু এক ধাক্কায় যে শৈত্যপ্রবাহের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে, কে জানত!
হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় বুধবার রাতে সেই শৈত্যপ্রবাহই শুরু হয়েছে। সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে ৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে! যা কিনা এ সময়ের স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ ডিগ্রি কম। দমদম, শ্রীনিকেতন, পানাগড়, খড়্গপুর, কৃষ্ণনগরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের ৪ ডিগ্রি নীচে চলে গিয়েছে। খাস কলকাতায় এক রাতের মধ্যে তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি কমে স্বাভাবিকের তিন ডিগ্রি নীচে নেমে গিয়েছে। এ দিন পূর্ব ভারতে সবচেয়ে কম তাপমাত্রা ছিল ঝাড়খণ্ড-রাজধানী রাঁচিতে ৪ ডিগ্রি।
আর পরিষ্কার আকাশ পেয়ে ঝাড়খণ্ড-বিহার থেকে যে ভাবে হিমেল উত্তুরে হাওয়া ঢুকছে, তাতে আজ, শুক্রবার দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রা আরও নামবে বলে জানিয়ে দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। তাদের সতর্কবার্তা: সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এতটাই নামার সম্ভাবনা যে, শুক্রবার থেকে কলকাতা-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গে শৈত্যপ্রবাহ বইতে পারে।
অথচ এই দক্ষিণবঙ্গেই গত ১১ দিন ধরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তিন-চার ডিগ্রি উপরে ঘোরাফেরা করছিল। বঙ্গোপসাগর থেকে রাশি রাশি জলীয় বাষ্প ঢোকায় আকাশ ছিল মেঘে ঢাকা। লাগোয়া বিহার-ঝাড়খণ্ডের কিছু জায়গায় তিন দিন আগে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলেও দক্ষিণবঙ্গে উত্তুরে হাওয়ার পথে পাঁচিল তুলে দাঁড়িয়েছিল কালো মেঘ। ফলে শীতটাই হারিয়ে গিয়েছিল এ তল্লাট থেকে। এবং বৃহস্পতিবার তা ফিরে এল রীতিমতো হইহই করে। কলকাতার আশপাশের আকাশ পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল বুধবার রাতেই। মেঘের বাধা সরে যাওয়ায় উত্তুরে হাওয়া ঢুকতে শুরু করেছিল। এ দিন সকাল থেকে তার তীব্রতা বেড়েছে। হু হু কেঁপেছেন মানুষ। শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে ১১.৪ ডিগ্রিতে। প্রায় দু’সপ্তাহ বাদে চড়া রোদে পিঠ দিয়ে শীত উপভোগের সুযোগ পেয়েছে কলকাতা। |
নামল পারদ |
এলাকা |
সর্বনিম্ন* |
বুধবার |
বৃহস্পতিবার |
আলিপুর |
১৬.৩ (+২) |
১১.৪ (-৩) |
দমদম |
১৬.০ (+৩) |
০৯.২ (-৪) |
শ্রীনিকেতন |
১৪.২ (+২) |
০৭.৭ (-৪) |
উলুবেড়িয়া |
১৪.৩ (+২) |
০৭.২ (-৫) |
কৃষ্ণনগর |
১৪.৫ (+৩) |
০৭.৩ (-৫) |
পানাগড় |
১৩.৩ (+১) |
৮.২ (-৪) |
বাঁকুড়া |
১৪.০ (+২) |
৮.৬ (-৩) |
* তাপমাত্রা, ডিগ্রি সেলসিয়াসে |
|
চলতি মরসুমে কলকাতার তাপমাত্রা ১০.৮ ডিগ্রিতে নেমেছিল গত ২২ ডিসেম্বর। তার আগে ক’দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করেছে ১২ ডিগ্রির আশপাশে। বর্ধমানের শিল্পাঞ্চল, বীরভূম, বাঁকুড়া, নদিয়া ও হাওড়ায় বইছিল শৈত্যপ্রবাহ। কিন্তু উত্তর ভারত থেকে আসা পরের পর দু’টো পশ্চিমী ঝঞ্ঝা গত বছরের শেষ সপ্তাহে শীতটাকে তাড়িয়ে ছেড়েছিল। নতুন বছরের প্রথম দশ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করেছে ১৭-২০ ডিগ্রিতে। দার্জিলিঙের পাহাড়ে বরফ পড়লেও মেঘের দাপটে ঠান্ডায় বঞ্চিত ছিল দক্ষিণবঙ্গের মানুষ।
অবশেষে দক্ষিণবঙ্গের শীত-ভাগ্য ফিরেছে। কিন্তু ক’দিন থাকবে এই কড়া শীত? আলিপুরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ জানাচ্ছেন, “শুক্র ও শনিবার শৈত্যপ্রবাহ থাকতে পারে। তার পরের অবস্থা নির্ভর করবে উত্তর ভারতের পরিস্থিতির উপরে। তবে মধ্য ও পূর্ব ভারতে যে ভাবে তাপমাত্রা কমছে, এবং উত্তুরে হাওয়ার যা তীব্রতা, তাতে দিন কয়েক কড়া শীত থাকবে বলেই মনে হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|