|
|
|
|
ভিক্ষা ‘ভুলে’ পিকনিকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • লালবাগ |
কপালে চন্দনের ফোঁটা। কাপড়ের ঝোলা কাঁধে ছেঁড়া-ময়লা-সেলাই করা পোশাক। রোজকার ঠিকানা ছেড়ে ওঁরা আজ পিকনিকে।
বৃহস্পতিবার লালবাগের একটি পার্কে বনভোজনে মাতল শহরের অন্তত ৫০ জন ভিক্ষাজীবী। তাঁদের ঠিকানা মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন গ্রামে। লালগোলা থেকে ভগবানগোলা, কেউ আবার খোদ বহরমপুরের রাস্তায় দিনভর পেট ভরানোর উপায় খোঁজেন। |
|
নিজস্ব চিত্র। |
বহরমপুর জজ কোর্ট এলাকার ব্যবসায়ী আর ‘চেতনা’র সদস্যরা মিলে ভিক্ষুকদের নিয়ে এক বনভোজনের আয়োজন করেন। উদ্যোক্তাদের পক্ষে নিতাই ভৌমিক বলেন, “গোরাবাজার জজকোর্ট এলাকায় এক দম্পতি ভিখারি দোকান ঘুরে ভিক্ষা করছিলেন। গত বছর এই শীতের সময়ে তাঁদের পাশ দিয়ে গাড়ি নিয়ে মাইকে গান বাজাতে বাজাতে পিকনিক পার্টি যাচ্ছিল। তা দেখে আমাদের খুব খারাপ লেগেছিল। সেই সময়ে আমরা ঠিক করি, এদের নিয়ে পিকনিকে যেতে হবে।”
এ দিন সকালে জজকোর্ট মোড় থেকে ওই ভিক্ষাজীবীদের চারটি গাড়িতে করে লালবাগের পার্কে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁদের নিয়ে চলে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। ছিল টয় ট্রেনে ঘুরে বেড়ানো। মনের সুখে তারা নাগরদোলায় দোলও খেতে দেখা যায় অনেককে। আমিষ ও নিরামিষ দু রকমের মেনুও তৈরি ছিল তাদের জন্য। ভাত, পনির, মুগ ডাল, আলুর দম, পাঁপড়, চাটনি, দই, মিষ্টি, স্যালাড। আর মুরগি কষা।
খেতে বসে বালিকা বৈরাগ্য, রাধারানি বৈরাগ্য, পারুলা বিবি, বিধান বৈরাগ্য, তারকেশ্বর বৈরাগ্যদের মত অনেকেরই চোখের জল বাগ মানেনি। এ দিনের ‘বনভোজন’ অবশ্য তাঁদের কাছে ‘চড়ুইভাতি’। তাঁদের কথায়, “কাল থেকে ফের আগের জীবনে আমাদের ফিরে যেতে হবে ঠিকই। সেই খালি পেটে বাড়ি-দোকান ঘুরে আট আনা-এক টাকার জন্য মানুষের কাছে হাত পাতা। কিন্তু এ দিনটা তো মজায় কাটল!” |
|
|
|
|
|