দুষ্কৃতীদের হাত ফস্কে শেষ পর্যন্ত পালিয়ে যাওয়া ‘অপহৃত’ কিশোরই বৃহস্পতিবার দিনভর ঘুরে চিনিয়ে দিল তার অপহরণকারীকে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ধুলিয়ানে ওই অপহরণকারীকে পুলিশের হাতে তুলে দেন গ্রামবাসীরা। ধৃত নাজিবুল শেখ স্থানীয় রতনপুরের বাসিন্দা। পুলিশের জেরায় সে কবুলও করেছে অপহরণের ঘটনাটি।
বুধবার মহাদেবনগরের আকাশ শেখকে (১৩) ধুলিয়ান স্টেশন লাগোয়া ছাইগাদার রাস্তা দিয়ে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল চার যুবক। আকাশ সেই সময় তাদের হাত থেকে পালিয়ে এক ছুটে পিরে আসে বাড়িতে। বানি ফিরে গোটা ঘটনাটি জানায় সে। পানা-প্রতিবেশীরা এর পরেই শুরু করে তল্লাশি। কিন্তু বুধবার খোঁজ মেলেনি কোরারই।
রাতেই অবশ্য ধুলিয়ান রেল পুলিশের কাছে অপহরণের চেষ্টার ওই ঘটনাটি জানিয়ে রাখেন ওই কিশোরের পরিবার। আকাশের দাদা মোসারফ বলেন, “ভাই অপহরণকারীকে চিনতে পারবে বলে জানায়। আমরাও শুধুই পুলিশের ভরসায় ব্যাপারটা ফেলে না শুরু করি তল্লাশি।” তিনি জানান গত সপ্তাহেই এলাকায় এক কিশোর নিখোঁজ হয়েছেন। এরপরেই আকাশের অপহরণের চেষ্টা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। তবে গ্রামের বাসিন্দারা বসে না থেকে শুরু করেন অপহরণকারীর খোঁজ।
বৃহস্পতিবার আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় আকাশকে নিয়ে খোঁজাখুঁজির সময়ে দুপুর নাগাদ ধুলিয়ান ডাক বাংলোর সামনে আকাশ এক জনকে দেখেই চেঁচিয়ে ওঠে, “ওই তো ওই লোকটা ছিল।” মোসারফেরা সবাই মিলে ছুটে গিয়ে তাকে ধরে ফেলেন। তাকপর তাকে তুলে দেওন পুলিশের হাতে। গাজীনগর-মালঞ্চা পঞ্চায়েতের প্রধান কংগ্রেসের সঞ্জয় মাহারা বলেন, “শনিবার স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয় আমার ভাইপো রাহুল মাহারা (১২)। এখনও তার খোঁজ মেলেনি। এরপর থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। বুধবার আকাশের ঘটনা এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। গ্রামবাসীরা এ দিন আকাশকে নিয়েই খুঁজতে বেরিয়েছিল।”
সমশেরগঞ্জ থানার ওসি উৎপল সাহা বলেন, “ধৃত যুবক আপাতত পুলিশ হেফাজতে থাকলেও যেহেতু ঘটনাটি হয়েছে ধুলিয়ান রেল পুলিশ এলাকায় তাই রেল পুলিশই তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করবে।” অন্য দিকে ধুলিয়ানের জি আর পির ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সঞ্জীব মিত্র বলেন, “অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ রাতেই পেয়েছি। কিন্তু যেহেতু আরো একটা অপহরণের ঘটনায় সে জড়িত সন্দেহ করা হচ্ছে তাই তাকে সামশেরগঞ্জ পুলিশ হাজতে আপাতত রাখা হয়েছে। জেরায় সে যে আকাশকে অপহরণের চেষ্টা করেছিল তাও সে মেনে নিয়েছে। উদ্দেশ্য ঠিক কী ছিল তা জানার চেষ্টা চলছে।” |