প্রশাসনিক পদক্ষেপে বন্ধ হয়ে গেল কংগ্রেসের শিক্ষক সংগঠন ডব্লিউ বি টি এ-এর জেলা কার্যালয়ের অবৈধ নির্মাণ। বহরমপুর শহরের ওয়াই এম এ মাঠ লাগোয়া ধোপঘাটির পাড়ে সরকারি খাস জমিতে ওই নির্মাণ চলছিল। এ দিন দুপুরে খবর পাওয়ার পরই মুর্শিদাবাদ জেলাশাসক পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলেন। জেলাশাসক বলেন, ‘‘ওই এলাকার সরকারি জমিতে ডব্লিউ বি টি এর কার্যালয় করার অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তারপরও অবৈধ ভাবে কোনও নির্মাণ কাজ করায় তা ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” নির্দেশ পেয়েই ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের বহরমপুর ব্লক আধিকারিক (বি এল এল আরও) কল্যাণ রায় পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। ডব্লিউ বি টি এ-এর মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি মহফুজ আলম ডালিম বলেন, “সংগঠনের জেলা কার্যালয় করার জন্য ওই এলাকায় আড়াই কাঠা জায়গা লিজ দেওয়ার জন্য বেশ কয়েক মাস আগে জেলাশাসক এবং বি এল এল আরও-এর কাছে আবেদন করা হয়েছিল। লিজের অনুমোদন পাওয়া যায়নি। কিন্তু অন্য কোনও সংস্থা যাতে জবরদখল করে না নিতে পারে সে জন্য প্রস্তাবিত ওই জায়গায় পাঁচিল তোলা হচ্ছিল। কোনও স্থায়ী ভবন তৈরি করা হচ্ছে না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ দিন ওই চৌহদ্দি ঘিরে দেওয়ার ব্যাপারে আপত্তি তোলা হলে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”
ধোপঘাটির ওই এলাকায় ইতিমধ্যেই স্বল্প মেয়াদি লিজে সরকারি জায়গায় দু’টি বেসরকারি সংস্থার কার্য়ালয় গড়ে উঠেছে। কল্যাণবাবু বলেন, “এ ছাড়াও একটি মানবাধিকার সংগঠন, একটি সংগীত সংস্থা, সেনা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত জওয়ানদের একটি সংগঠন এবং শিক্ষক সংগঠন-সহ মোট চারটি সংস্থার কার্যালয় করার জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির পক্ষ থেকে লিজ চেয়ে আবেদন করা হয়। আগে সরকারি জমি বেসরকারি সংস্থাকে লিজ দিতেন জেলাশাসক। তার খাজনা ও লিজের টাকার পরিমাণ ধার্য করা হত মহাকরণ থেকে। আবেদনগুলি বিবেচনাধীন।”
লিজের অনুমোদন পাওয়ার আগেই ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করে দেওয়ার নিন্দা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি তথা পূর্ত দফতরের প্রতিমন্ত্রী সুব্রত সাহা। তিনি বলেন, “সরকারি জায়গা জবর দখল করে কোনও সংস্থার কার্যালয় গড়ে তোলা একেবারেই অনুচিত। সরকারি আধিকারিকেরা সরজমিনে দেখে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নিয়েছেন।”
ডব্লিউ বি টি এ-এর নিমীর্য়মাণ ভবনের পাশেই অন্য তিনটি বেসরকারকি সংস্থার একটি ‘বহরমপুর ইয়ুথ কয়্যার’-এর জবরদখল করা জায়গা রয়েছে। তাদের সম্পাদক মলয় গুপ্ত বলেন, “সংস্থার কার্যালয় করার জন্য ২০০৮ সালে সরকারি এক খণ্ড জায়গা চেয়ে আবেদন করেছিলাম। ওই প্রস্তাবিত জায়গা অন্যরা জবরদখল করে নিয়েছে। জবরদখলের সময় প্রশাসনকে জানিয়ে প্রতিকার পায়নি। এ বারও যাতে প্রস্তাবিত জায়গা কেউ দখল না নিতে পারে তার জন্য চৌহদ্দি ঘিরে দেওয়া হয়েছে।” |