বুধবার বিকেল থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায় কুকুরের কামড়ে জখম হয়েছেন অন্তত ৩৭ জন। জখম ব্যক্তিদের ডেবরা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু প্রথমে অ্যান্টি-র্যাবিজ ভ্যাকসিন (এআরভি) না থাকায় জখমদের চিকিৎসায় দেরি হয়। পরে স্থানীয় বিধায়ক রাধাকান্ত মাইতি বিষয়টি জেলার মুখ্য-স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানান। তার পরেই জেলা থেকে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়া হয় ডেবরায়। বিধায়কের বক্তব্য, “প্রত্যেককেই যাতে ভ্যাকসিন দেওয়া হয় সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে।” হাসপাতাল সুপার রজত পালও বলেন, “প্রত্যেককেই ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।”
বুধবার বিকেল থেকে একটি কুকুরের উৎপাত শুরু হয় ডেবরার বৈচা, বাড়কোতাই, কোতাই, ধানতুরিয়া, শ্যামচক, বামুনিয়া এলাকায়। এক জায়গা থেকে অন্যত্র ছুটে বেড়ানো কুকুরটি নাগালের মধ্যে যাকে পেয়েছে তাকেই কামড়ে, আঁচড়ে জখম করেছে। বেশ কয়েক জনক গুরুতর ভাবে জখম হন। তাঁদের অনেকেরই পা থেকে মাংস পর্যন্ত তুলে নেয় সারমেয়টি। চিকিৎসকদের অনুমান, কুকুরটি রোগাক্রান্ত। তাই এই ধরনের আচরণ করেছে। সুস্থ হলে কোনও কুকুর এমন আচরণ করতে পারে না। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শুধু নাগালের মধ্যে পেয়েই আক্রমণ করেছে তাই নয়, অনেককেই দৌড়ে গিয়েও কামড়েছে কুকুরটি। গ্রামবাসীরা অনেক চেষ্টা করেও কুকুরটিকে মারতে পারেননি। মারার চেষ্টা করলে কুকুরটি ছুটে পালিয়েছে। কামড়ের ভয়ে মানুষও খুব বেশি ঝুঁকি নিতে পারছেন না। ডেবরা হাসপাতাল সুপার বলেন, “কুকুরের কামড়ে জখম ৩৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের প্রত্যেকেই এআরভি নিলেও আর একটি প্রতিষেধকের মাত্র একটি ডোজ নিয়েছেন। কেবলমাত্র ইমিউনোগ্লোবিউলিন নিয়ে চলে গিয়েছেন। কিন্তু বেশি জখম থাকলে ক্ষত স্থানের জীবাণু নাশ করতে ইন্ট্রামাসকুলারও প্রয়োজন। বেশিরভাগই তা নেননি। তাঁরা যাতে ইন্ট্রামাসকুলারও নেন সেই আবেদন জানানো হয়েছে।” স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে ‘অসুস্থ’ চহ্নিত করে তোর্কো গ্রামে একটি কুকুরকে মেরে ফেলেন স্থানীয় মানুষজন। কিন্তু সেটিই যে রোগাক্রান্ত কুকুর, তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। ফলে রোগাক্রান্ত কুকুরটি কোথায় রয়েছে তা নিয়ে সংশয় থেকেই গিয়েছে। এ ছাড়াও ওই কুকুরটি রোগগ্রস্ত অবস্থায় অন্য কুকুরকে কামড়েছে কি না, ফলে সেই সব কুকুরও রোগে আক্রান্ত হয়েছে কি না--সেই প্রশ্নও থেকে যাচ্ছে। ফলে আরও অঘটনেরও আশঙ্কা থাকছে। ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে। |