সেন্ট্রাল জু অথরিটির রক্তচক্ষুর হাত থেকে বাঁচতে চিতাবাঘ তুফানকে দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় পাঠাল বন দফতর। সম্প্রতি কোচবিহারের রসিকবিল চিতাবাঘ উদ্ধার কেন্দ্র থেকে তুফানকে দার্জিলিঙে পাঠানো হয়। সেন্ট্রাল জু অথরিটির নিয়ম হল, উদ্ধার কেন্দ্রে প্রজনন চলবে না। অথচ তুফানকে নিয়ে সেই সমস্যায় পড়তে হয়েছে বন দফতরকে। তুফানের সংস্পর্শে এসে স্ত্রী চিতাবাঘ কাজল একটি শাবকের জন্ম দেয়। তুফানকে দার্জিলিঙে পাঠানোয় রসিকবিলে এখন পুরুষ চিতাবাঘের সংখ্যা দাঁড়াল ২। তার মধ্যে রাজা নামের প্রজননে অক্ষম একটি পুরুষ চিতাবাঘ ছাড়াও একটি শাবক রয়েছে। ফের এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে নির্বীজকরণ পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হবে বলে ঠিক করেছেন বন দফতরের কর্তারা। রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন বলেন, “সেন্ট্রাল জু অথরিটির নিয়ম মেনে আমরা সমস্ত উদ্ধার কেন্দ্র চালাতে চাইছি। সেজন্যই রসিকবিলের একটি পুরুষ চিতাকে সরিয়ে নেওয়া হল।” |
বন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, ওই উদ্ধার কেন্দ্রে চিতাবাঘ পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ব্যয়ও বেড়েছে। ৮টি চিতাবাঘের মাংস, ওষুধ, দেখভাল-সহ যাবতীয় খরচ মিলিয়ে মাসে প্রায় ৬০ হাজার টাকার বন্দোবস্ত করতে গিয়ে বন কর্তাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে। তার উপর উদ্ধার কেন্দ্রে বার বার নিয়ম ভঙ্গ করে সেন্ট্রাল জু অথরিটির রোষের মুখে পড়তে চাননি বনকর্তারা। তুফানকে দার্জিলিংয়ে পাঠানোর জন্য সেন্ট্রাল জু অথরিটির অনুমোদন চেয়ে আর্জি জানায় বন দফতর। অনুমোদন মিলতেই দেরি না-করে পুরুষ চিতাবাঘটিকে দার্জিলিংয়ে পাঠানো হয়। কোচবিহারের ডিএফও পিনাকী মিত্র বলেন, “রসিকবিলের ওই উদ্ধার কেন্দ্রে চিতাবাঘের বংশবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগে ছিলাম। তুফানকে দার্জিলিঙে পাঠানোয় আপাতত সেই চিন্তা কমেছে।” রসিকবিলে ওই উদ্ধার কেন্দ্র চালুর সময় ২০০৬ সালে মাদারিহাট থেকে দুইটি স্ত্রী চিতাবাঘ আনা হয়েছিল। পরের বছর পুরুষ সঙ্গীর অভাবে কালী ও গৌরি নামের ওই দুটি স্ত্রী চিতাবাঘ মনমরা হয়ে পড়ে। তা দেখেই মাদারিহাট থেকে শঙ্কর নামের একটি পুরুষ চিতা সেখানে আনা হয়। ওই পুরুষ সঙ্গীর সান্নিধ্যে বছর ঘুরতেই কালি ও গৌরী দুটি করে শাবকের জন্ম দেয়। তার মধ্যে পুরুষ শাবক তুফান ছাড়াও তিনটি মাদি শাবক রয়েছে। ওই ঘটনার পরে শঙ্করকে দার্জিলিংয়ে পাঠিয়ে তার বদলে রাজা নামের প্রজননে অক্ষম পুরুষ চিতাকে রসিকবিলে আনা হয়। ইতিমধ্যে তুফান বড় হয়ে ওঠায় সমস্যায় পড়তে হয় বনকর্তাদের। |