বিবেকানন্দ-জয়ন্তীতে নানা অনুষ্ঠান দুই জেলায় |
রাজ্য সরকার ছুটি ঘোষণা করেছে। রোদ ঝলমলে বৃহস্পতিবারে হাওড়া-হুগলি দুই জেলাতেই নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে পালিত হল স্বামী বিবেকানন্দের জন্মজয়ন্তী। এ বার তাঁর জন্মের সার্ধ শতবর্ষ। সেই কারণে সর্বত্রই দেখা গিয়েছে বাড়তি উৎসাহ-উদ্দীপনা।
সকালে হুগলি পুলিশ লাইনে বিবেকানন্দের ছবিতে মাল্যদান করেন পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মিশন মাল্টি-পারপাস স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বামী শিবপ্রদানন্দ। জেলাশাসকের দফতরেও একই অনুষ্ঠান হয়। মাল্যদান করেন জেলাশাসক শ্রীপ্রিয়া রঙ্গরাজন। চুঁচুড়া-রথতলা বিবেকানন্দ মঠ ও মিশনের পক্ষ থেকে প্রভাতফেরি বের করা হয়। অন্য একটি প্রভাতফেরি বের হয় কামারপাড়া থেকে। দু’টি ক্ষেত্রেই ছোটরা ‘বিবেকানন্দ’ সেজে সামিল হয়। ছিল আদিবাসী নাচ, ছৌ নাচ, রণপা-নৃত্য। রাস্তার দু’ধারে ভিড় জমে ওঠে।
আরামবাগের গড়বাড়িতে বিবেকানন্দ স্পোর্টিং ক্লাবের পরিচালনায় তিন দিনের মেলা বসেছে। |
|
|
আরামবাগে প্রভাতফেরি |
পাঁচলায় প্রভাতফেরি |
|
ওই মেলায় বিবেকানন্দকে নিয়ে আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে। আজ, শুক্রবার থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শনিবার ‘দরিদ্র নারায়ণ সেবা’ ও বিনামূল্যে চক্ষু ও ডায়াবেটিস পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে আরামবাগ বাসস্ট্যান্ডের ধারে এবং গৌরহাটি মোড়ে বিবেকানন্দের মূর্তির সামনে আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। খানাকুল-গোঘাট-পুড়শুড়াতেও নানা স্কুল-কলেজ ও ক্লাবের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠান হয়। সিঙ্গুরের বিদ্যাসাগর এডুকেশন ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষ থেকে ঘনশ্যামপুরে রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমকে অ্যাম্বুল্যান্স প্রদান করা হয়। গাড়িটি তুলে দেন কৃষিমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। |
|
|
চুঁচুড়ায় প্রভাতফেরি |
হরিপালে বিবেকানন্দ এক্সপ্রেস |
|
তারকেশ্বর লাইন প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিশেনের পক্ষ থেকে হরিপাল স্টেশনে বিশেষ অনুষ্ঠান করা হয়। ওই অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৮৮৬ সালের ১৯ ডিসেম্বর স্বামী বিবেকানন্দ ও তাঁর ৮ গুরুভাই হরিপাল স্টেশন হয়ে আঁটপুরে যান। এ দিন ওই স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ‘বিবেক এক্সপ্রেস’-এ উপচে পড়ে ভিড়। হরিপালের বিবেকানন্দ কলেজে স্বামী বিবেকানন্দের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করা হয়। হয় বৃক্ষরোপণও। উপস্থিত ছিলেন কামারপুকুর মঠ ও মিশনের সহ-সম্পাদক স্বামী অদ্রিজানন্দ, আঁটপুর রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সন্ন্যাসী স্বামী প্রাণময়ানন্দ এবং বিধায়ক বেচারাম মান্না। হরিপালের জামাইবাটি হাইস্কুল এবং বাসুদেবপুর রামকৃষ্ণ সেবাকেন্দ্র যৌথ ভাবে শোভাযাত্রা বের করে। বৈদ্যবাটি বিবেকানন্দ স্মৃতি রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে সকালে দু’টি প্রভাতফেরি বের করা হয়। গভর্নমেন্ট কোয়ার্টারের সামনে বিবেকানন্দের মূর্তির সামনে গান, আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছিল। ‘বৈদ্যবাটি উৎসব ও মেলা’ চলছে ১ জানুয়ারি থেকে। উদ্যোক্তার বিবেকানন্দের প্রায় ৮০টি ছবি সংবলিত একটি স্টল করেছেন। এ দিন মূল মঞ্চে ছিল বিবেকানন্দকে নিয়ে আলোচনসভাও। শ্রীরামপুর পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ড কমিটি শোভাযাত্রা করে। হাওড়ার শ্যামপুরের অনন্তপুর সিদ্বেশ্বরী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রভাতফেরি দেখতে ভিড় উপচে পড়ে। বাগান্ডা জটাধারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও শোভাযাত্রা করে। আমতার রসপুর অগ্রগতি প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষণ সংস্থায় স্বামী বিবেকানন্দের পূর্ণাবয়ব মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেন মুন্সিরহাট শ্রীরামকৃষ্ণ সারদা সেবাশ্রমের সম্পাদিকা ব্রহ্মচারিণী অসীমা। ছিল আলোচনাচক্রও। আমতা-১ ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ বিভাগের উদ্যোগে এবং আমতা সেবাব্রতী সঙ্ঘের সহযোগিতায় শোভাযাত্রা হয়। সকালে মহিলারা শঙ্খধ্বনি করেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি মাধ্যমিকের কৃতীদের পুরস্কৃত করা হয়। তৃণমূলের পক্ষ থেকেও স্মরণ করা হয় স্বামী বিবেকানন্দকে। এ ছাড়াও, পাড়ায় পাড়ায়, স্কুল-কলেজে ছিল।
|