উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব-সহ পাঁচ রাজ্যে ভোটের জন্য আদর্শ আচরণবিধি প্রয়োগ শুরু হয়ে গিয়েছে। ফলে কেন্দ্রে মনমোহন সিংহ সরকারের পক্ষে এখন কোনও নতুন ঘোষণা করা সম্ভব নয়। অভিযোগ উঠেছে, এই অবস্থায় দিল্লিতে বসেইকংগ্রেসের হয়ে পরোক্ষে ভোট প্রচার শুরু করে দিলেন সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব।
কী ভাবে? শীতকালীন অধিবেশনে সরকার কী কী বিল সংসদে পাশ করাতে চেয়েছিল, আর বিরোধীদের বাধায় কোন কোন বিল পাশ করানো সম্ভব হয়নি, তা জানাতে সংবাদমাধ্যম সংক্রান্ত মন্ত্রিগোষ্ঠী এ দিন সাংবাদিক বৈঠক করেন। মন্ত্রিগোষ্ঠীর দুই সদস্য, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী পবন বনশল জানান, শীতকালীন অধিবেশনে অর্থ, দুর্নীতি দমন ও শিক্ষাব্যবস্থা সংক্রান্ত ২৬টি বিল সরকার পেশ করেছিল। যার অর্থ, নীতি নির্ধারণের প্রশ্নে সরকার পঙ্গু হয়ে যায়নি। কিন্তু মন্ত্রীদের অভিযোগ, সেগুলি সংসদে পাশ করাতে গেলেই ছুতোনাতায় বিরোধিতা করছে বিরোধীরা।
এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, সংসদের অধিবেশন শেষ হওয়ার প্রায় দু’সপ্তাহ পরে কেন এ সব কথা নতুন করে বলা হচ্ছে? তা ছাড়া অধিবেশন শেষ হওয়ার পরের দিনই এ ব্যাপারে এক দফা সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন পবন বনশল। তা হলে কি সরকার এই অজুহাতে দিল্লিতে বসেই পরোক্ষে ভোট প্রচারের কাজ করেছে? কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবশ্য বলেন, “এ রকম কল্পনা করলে ভুল হবে।”
অনেকেই অবশ্য বলছেন, মুখে এ কথা বললেও আজ চিদম্বরম ও পবন কিন্তু আখেরে কংগ্রেসের হয়ে প্রচারের কাজটাই দিল্লিতে বসে করলেন। কারণ, সংখ্যালঘু সংরক্ষণ প্রশ্নে কেন্দ্রের নীতি থেকে শুরু করে ভোট প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব তাঁরা দেন। বলেন, সংখ্যালঘু সংরক্ষণের নীতি কেন্দ্র ঘোষণা করার পরে নির্বাচন কমিশন ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেছিল। অর্থাৎ কেন্দ্র নীতি ঘোষণার সময় আদর্শ আচরণ বিধি প্রয়োগ শুরু হয়নি। কমিশন অবশ্য সংখ্যালঘু সংরক্ষণ নীতি প্রয়োগে আপাতত স্থগিতাদেশ জারি করেছে। তবে সরকার এ নিয়ে কোনও সংঘাতের পথে যাবে না। কারণ নীতি নির্ধারণ হয়ে গিয়েছে। তা ছাড়া শিক্ষাবর্ষ বা নিয়োগের মরশুম শুরু হবে এপ্রিল নাগাদ। তত দিনে ভোট হয়ে যাবে এবং সংশ্লিষ্ট নীতির প্রয়োগ শুরু হবে বলে সরকার পক্ষের বক্তব্য।
এ সবের পাশাপাশি লোকপাল বিল পাশ না হওয়া-সহ বিভিন্ন বিষয়ে আজ প্রধান বিরোধী দল বিজেপির সমালোচনা করেন চিদম্বরম-বনশল। পরে সরকারি সূত্রে বলা হয়, কেন্দ্রের তরফে এমন কিছু বলা হচ্ছে না, যা আদর্শবিধি লঙ্ঘন করছে। সরকারি শিবিরের পাল্টা বক্তব্য, কংগ্রেসের মন্ত্রীরা সীমার মধ্যে থেকে প্রচার করলে, ক্ষতি কোথায়?
|
বিধানসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে মায়াবতী এবং বসপার প্রতীক হাতির মূর্তি ঢেকে দেওয়ার যে নির্দেশ নির্বাচন কমিশন দিয়েছে, তা পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাল বসপা। আজ দলের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক সতীশচন্দ্র মিশ্র দাবি করেছেন, কমিশনের এই নির্দেশ সংবিধান স্বীকৃত সমান অধিকারের পরিপন্থী। নির্দেশটিকে অন্যায্য ও একতরফা বলেও বর্ণনা করেছেন তিনি। এই ব্যাপারে কমিশনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান সতীশচন্দ্র। তাঁর বক্তব্য রাষ্ট্রপতি ভবন, নর্থ ব্লক ও সাউথ ব্লকেও হাতির মূর্তি রয়েছে। এমনকী হাতির মূর্তি রয়েছে সংসদে স্পিকারের চেয়ারের উপরেও। সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে সতীশচন্দ্র মিশ্র বলেন, কমিশনের যদি ‘আমাদের হাতি’তে আপত্তি থাকে, তা হলে তাদের সপার প্রতীক সাইকেল, বিজেপির পদ্ম ও আরএলডি-র নলকূপেও আপত্তি থাকা উচিত। |