টিভি-ইন্টারনেটের যুগে বইয়ের প্রতি টান কমার আশঙ্কা থাকলেও মনের মতো বই পাঠকদের হাতে তুলে দেওয়াটাও জরুরি। আর তাতেই বই পড়ার অভ্যাস বজায় থাকে। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে আনন্দ পাবলিশার্স-এর নতুন পুস্তক বিপণির উদ্বোধন করে এ কথা বললেন মেদিনীপুর রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী সুনিষ্ঠানন্দ।
স্বামী বিবেকানন্দের সার্ধশত জন্মজয়ন্তীর দিনে তিনি বলেন, “স্বামীজি বলেছিলেন কারও কাছে পৌঁছতে হলে তার নিজের ভাষায় কথা বলতে হবে। বইয়ের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একই। যে যে-রকম বই চান তাঁকে সেই রকম বই জোগানোর ব্যবস্থাটাও সুনিশ্চিত করতে হবে।” তাঁর আশা, “এই শহরে সেই চাহিদা অনেকটাই মেটাতে পারবে আনন্দের এই বিপণি।” |
উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গেই উপচে পড়ে ভিড়। কেউ ফেলুদা, কেউ শীর্ষেন্দু আবার কেউ বা উপন্যাস সঙ্কলনে মন দিলেন। অধ্যাপক জয়জিৎ ঘোষের মতে, “বইয়ের তালিকা দেখলেই বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে আনন্দ পাবলিশার্সের দীর্ঘকালীন যোগসূত্র বেশ বোঝা যায়। এই শহরে এই রকম একটি বইয়ের দোকানের দরকার অনেক দিন ধরেই ছিল।” তাঁর সঙ্গে আসা কলেজ অধ্যাপক সৈকত সরকারের বক্তব্যও একই। |
ক্লাস নাইনের অহনার হাতে শীর্ষেন্দুর ভূতুড়ে ঘড়ি, পাশে রমিতার হাতে পঞ্চাশটি ভূত, মানে পঞ্চাশটি ভূতের গল্পের সংকলন। রমিতার মা মেয়েকে বলেন, “কী রে, গোঁসাইবাগানের ভূত কিনবি না কি?” তাঁর মা নিজে কিনেছেন, ‘ঘরোয়া রান্না’। অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক বিশ্বনাথ দাস, কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ দিলীপ কুমার নিয়োগী, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক চপল ভট্টাচার্য, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুরজিৎ ঘোষ বা মেদিনীপুর কলেজের অধ্যাপক তনুশ্রী ঘোষ প্রত্যেকেই একই কথা বললেন। প্রত্যেকের মতে, এই শহরে এই ধরনের বিপণির খুব দরকার ছিল।
আনন্দ পাবলিশার্স-এর ম্যানেজিং ডাইরেক্টর সুবীর মিত্র জানালেন, এটা তাঁদের ১৮ তম বিপণি। প্রায় ২৫০০ টাইটেলের বই এখানে মিলবে। সিগনেট প্রকাশিত নানা বইও আনন্দ-বিপণি থেকে পাওয়া যাবে। মেদিনীপুর বিপণির পক্ষে কুমারকান্তি নাথ জানান, শুধু বই না, মিলবে ফেলুদা বা প্রোফেসর শঙ্কুর ছবি দেওয়া টি-শার্টও। |
এই দিন দেখা গেল ছোট্ট রূপাঞ্জনার হাতে অ্যাস্টেরিক্সের কমিকস। ভিড়ের মধ্যেই সে বই পড়তে ব্যস্ত। আর তার পাশে মেদিনীপুর শহরের তিন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কংগ্রেসের শম্ভু চট্টোপাধ্যায়, সিপিএম নেত্রী পাপিয়া সিংহ, প্রাক্তন পুরপ্রধান নাজিম আহমেদ। প্রত্যেকেই ব্যস্ত বই দেখতে। আলাপচারিতাও বই নিয়ে। সৌজন্যে এই নতুন বিপণি। |