রাজ্য সরকার ছুটি ঘোষণা করেছে। বেশ কয়েক দিন টানা বৃষ্টির পরে মিলেছে রোদের দেখাও। সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার সারা রাজ্যের সঙ্গে স্বামী বিবেকানন্দের সার্ধশত জন্মজয়ন্তী মহা সমারোহে উদযাপন করল খনি ও শিল্পাঞ্চল। সরকারি উদ্যোগ ছাড়াও রামকৃষ্ণ মিশন, বিভিন্ন ক্লাব, সংগঠন, রাজনৈতিক দল দিনটি উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এ দিন সকালে দুর্গাপুর মহকুমা তথ্য সংস্কৃতি দফতরের পক্ষ থেকে সিটি সেন্টারে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। এর পরে সৃজনী প্রেক্ষাগৃহে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে স্কুলের কচি-কাঁচারা। ডিপিএলের বি-জোন আদিবেদীর পক্ষ থেকে সাইকেল মিছিলের আয়োজন করা হয়। সূচনা করেন বাঁকুড়ার রামহরিপুর রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী নিরন্তরানন্দ। প্রথমে মিছিলটি যায় আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনে। সেখানে স্বাগত জানান অধ্যক্ষ স্বামী বলভদ্রানন্দ। এর পরে সেটি যায় কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে। ১২ জন মহিলা-সহ মোট ১৬৮ জন ওই মিছিলে যোগ দেন। |
দুর্গাপুর বিবেকানন্দ ভাব সমাজের পক্ষ থেকে ধর্মীয় অনুষ্ঠান ছাড়াও নাটক, নৃত্যনাট্যের আয়োজন করা হয়। স্বামী বিবেকানন্দ সার্ধশতবর্ষ জন্মোৎসব উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে এমএএমসি এলাকায় বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজিত হয়। পানাগড়ের দার্জিলিং মোড়ের রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি স্বপন ঘোষ ও দোমড়া রামকৃষ্ণ মিশনের সম্পাদক নির্মল বন্দ্যোপাধ্যায়। পাণ্ডবেশ্বরের স্বামী বিবেকানন্দ জীবন ও বাণী চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে বিবেকানন্দের জন্মক্ষণ স্মরণ করতে এলাকার বাসিন্দারা সকাল ৬টা ৩৩ মিনিটে শঙ্খধ্বনি দেন। বুদবুদের মারো সবুজ সঙ্ঘ দিনটি যথোচিত মর্যাদায় পালন করে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে দুর্গাপুর শহরে বিভিন্ন সমাজ কল্যাণমূলক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বিজেপি-র দুর্গাপুর ৩ নম্বর মণ্ডল কমিটির পক্ষে দিনটি উপলক্ষে সুসজ্জিত ‘ট্যাবলো’ নিয়ে শোভাযাত্রা বের হয় স্টেশন বাজার থেকে।
আসানসোলে এ দিন সকালে রামকৃষ্ণ মিশনের উদ্যোগে আয়োজিত একটি শোভাযাত্রা শহর পরিক্রমা করে। এটি শুরু হয় আশ্রম মোড় থেকে। শেষ হয় রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে। আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান স্বামী বলভদ্রানন্দ শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেন। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের আইন ও বিচারমন্ত্রী মলয় ঘটক, আসানসোলের মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। আসানসোলের একাধিক স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, ক্লাব, গণ সংগঠনের সদস্যেরাও শোভাযাত্রায় যোগ দেন। স্বামীজির সুরারোপিত রামকৃষ্ণ বন্দনা গেয়ে শোভাযাত্রাটি শেষ হয় রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে। সেখানে স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শবাণী শোনান স্বামী বলভদ্রানন্দ। ছাত্রদের একটি করে বিবেকানন্দের জীবন ও কর্ম সম্বলিত বই উপহার দেওয়া হয়। |
আসানসোল গ্রামের বিবেকানন্দ ক্লাবের উদ্যোগে এ দিন সকালে একটি শোভাযাত্রা গোটা অঞ্চল পরিক্রমা করে। বিকেলে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। যুব তৃণমূলের পক্ষ থেকে দিনটি যথোচিত মর্যাদায় পালিত হয়। বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও আদিবাসী নৃত্য-সহ শোভাযাত্রাটি শহর পরিক্রমা করে। বার্নপুরের ডিহিকা গ্রামের বিবেকানন্দ আশ্রমের উদ্যোগে এ দিন বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে একটি শোভাযাত্রা ইস্পাত শহর পরিক্রমা করে। বারাবনির ব্লক যুব তৃণমূলের উদ্যোগে দিনটি উদযাপিত হয়। সকালে প্রভাতফেরি ও সালানপুরে নান্দনিক প্রেক্ষাগৃহে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন দলের ব্লক যুব সভাপতি অসিত সিংহ ও বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়। বারাবনির বিবেকানন্দ গ্রামীণ গ্রন্থাগারের উদ্যোগেও দিনটি বিশেষ মর্যাদায় পালিত হয়। জামুড়িয়ার চিচুঁড়িয়া গ্রামে বিবেকানন্দের জন্মদিন উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অমনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। নৃত্য, গীত, আবৃত্তি পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পীরা। চিচুঁড়িয়া পঞ্চায়েত এলাকার ৪০ জন মাধ্যমিকের কৃতীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বীরকুলটি গ্রামে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বিবেকানন্দ সেবা কেন্দ্রের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রানিগঞ্জ টিডিবি কলেজে জাতীয় সেবা প্রকল্পের আওতায় এ দিন শোভাযাত্রা বের করা হয়। বল্লভপুরে বিবেকানন্দ ব্যায়াম সমিতি দিনটি যথাযথ মর্যাদায় উদ্যাপন করে। |