প্রতীক্ষা বোধ হয় শেষ হতে চলেছে। মাঝ-পৌষে হতাশ করে মকরসংক্রান্তিতে আশা দেখাচ্ছে শীত। পরশু, শনিবার পৌষ সংক্রান্তিতে কলকাতা-সহ সারা দক্ষিণবঙ্গে জাঁকিয়ে শীত পড়বে বলে বুধবার আশ্বাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সে-দিন ১১-১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যাবে বলে আশা করছেন আবহবিদেরা।
হাওয়া অফিসের আশ্বাসের সঙ্গে তাল রেখেই যেন এ দিন ফের তুষারপাত শুরু হয়েছে দার্জিলিঙে। ওই পাহাড়ি শহরের বাজার এলাকা, জোড়বাংলো, টাইগার হিল, ঘুম, ডালি এবং রংবুলের সঙ্গে সঙ্গে বরফ পড়ছে পশ্চিমবঙ্গের লাগোয়া উত্তর সিকিমের বিভিন্ন প্রান্তেও। স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সঙ্গে মেতে উঠেছেন পর্যটকেরাও। চার-পাঁচ দিন ধরে আবহাওয়ার মেজাজমর্জি যা দাঁড়িয়েছে, তাতে চলতি মাসেই ‘কুইন অফ হিলস’ বা পাহাড়রানি দার্জিলিং পুরোপুরি বরফের চাদরে মুড়ে যাবে বলে পাহাড়বাসীর আশা। |
দার্জিলিং থেকে টাইগার হিল যাওয়ার রাস্তায় তুষারপাত। বুধবার। |
১১ দিন পরে, বুধবার সূর্যের মুখ দেখতে পেয়ে আশায় বুক বাঁধছে কলকাতাও। একটানা অকালবৃষ্টির অসোয়াস্তি কেটেছে অনেকটাই। মহানগরী এবং সংলগ্ন এলাকায় এ দিন সকাল থেকে উত্তুরে হাওয়ার দাপটও ছিল কমবেশি। এখনও কিছু মেঘ থেকে যাওয়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রির বেশি উঠতে পারেনি। আবহবিদেরা জানান, আজ, বৃহস্পতিবার আকাশ পরিষ্কার থাকবে। তাই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বাড়বে। আকাশ পরিষ্কার হওয়ায় বিহার-ঝাড়খণ্ডে আটকে থাকা কনকনে উত্তুরে হাওয়া ঢুকে পড়বে দক্ষিণবঙ্গে। ফলে কমবে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
গত ১১ দিন ধরে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭ থেকে ২০ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করছিল। বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ বলয় একেবারে দুর্বল হয়ে যাওয়ায় এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে যায় ১৬.৩ ডিগ্রিতে। চলতি সময়ের স্বাভাবিকের থেকে এখনও তা দু’ডিগ্রি বেশি। তবে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নিম্নমুখী হওয়াতেই মঙ্গলবার বিকেল থেকে শীত-শীত ভাবটা অনুভূত হচ্ছিল। বুধবার সেটা আরও প্রকট হয়েছে। সেটা আরও বাড়বে বলে ইঙ্গিত দিচ্ছে পাহাড়ের তুষারপাত। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, ৮ জানুয়ারির পর থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে একটি বড় মাপের পশ্চিমী ঝঞ্ধা ঢুকে পড়েছে। তার প্রভাবে পাহাড় এবং সমতলের আবহাওয়া অনেকটাই বদলে গিয়েছে। উত্তর সিকিম, টাইগার হিলের মতো উঁচু এলাকায় হাল্কা বরফ পড়ছে। আর সমতলে রোদ তো আছেই। সেই সঙ্গে রাতে ও সকালে কুয়াশা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “এ বার পশ্চিমী ঝঞ্ঝার বড় মাপের হওয়ায় এই পরিস্থিতি আরও কয়েক দিন থাকবে। ঠান্ডা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
তবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে বৃহস্পতিবার থেকে শীত ফিরলেও তা ক’দিন থাকবে, সেই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি আবহবিদেরা। কলকাতায় সাধারণত জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই শীত বিদায় নিতে শুরু করে। ইতিমধ্যেই মাসের প্রথম সপ্তাহ শেষ। দ্বিতীয় সপ্তাহের মাঝামাঝিতে ফিরে আসা শীত ক’দিন থাকে, সেটাই এখন দেখার। |