দুই সিন্ডিকেটের গোষ্ঠী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হলেন এক যুবক। মঙ্গলবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ শহরতলির বিষ্ণুপুর থানার জুলপিয়ার আন্ধারমানিক গ্রামে। আহত সঞ্জয় নস্কর আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি।
এই ঘটনার পরে এলাকায় শৃঙ্খলা বজায় রাখার দাবিতে বুধবার সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বারুইপুর-আমতলা রোড অবরোধ করা হয়। বন্ধ রাখা হয় দোকান-বাজারও। পুলিশ এসে এই ঘটনায় জড়িতদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ধরার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। বিকেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তৃণমূলের মদতপুষ্ট দুই সিন্ডিকেটের সংঘর্ষে এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ ও প্রশাসন নির্বিকার বলেও অভিযোগ বাসিন্দাদের।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে জুলপিয়া মোড়ের কাছে একটি বেসরকারি স্কুলবাড়িতে এক সিন্ডিকেটের কয়েক জন পিকনিক করছিল। অন্য সিন্ডিকেটের লোকেরা সেখানে হামলা করে। কয়েক রাউন্ড গুলি চলে। পুলিশ জানায়, তখনই সঞ্জয়ের ডান হাঁটুতে গুলি লাগে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ওই গ্রামেরই বাসিন্দা পূর্ণ ঘোষাল নামে এক যুবক সঞ্জয়কে গুলি করেছিল। সঞ্জয় তাকে চিহ্নিত করেছে বলে পুলিশের দাবি। তবে ঘটনার পর থেকে পুর্ণ পলাতক বলে জানায় পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বারুইপুর-আমতলা রোডের দু’ধারে বেআইনি ভাবে জলা বুজিয়ে জমি বিক্রি করা হচ্ছে। চাষিদের জমি জোর করে কিনে নিয়েও প্রোমোটারদের বিক্রি করা হচ্ছে। এই কাজে দু’টি সিন্ডিকেট বিষ্ণুপুর ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি শ্যামল মণ্ডল এবং বিষ্ণুপুর ১ নম্বর তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুফল সর্দারের মদত পাচ্ছে বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ।
বাসিন্দারা জানান, এলাকার দখল এবং জমি ব্যবসা নিয়ে মাঝেমধ্যেই দুই সিন্ডিকেটের মধ্যে বোমা-গুলির লড়াই হচ্ছে। শ্যামলবাবু অবশ্য মদতের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমার কাছে অনেকেই আসে। তবে এতে আমার মদত রয়েছে বলা ঠিক নয়। পুলিশকে কড়া হতে বলেছি।” প্রায় একই বক্তব্য সুফলবাবুরও। তাঁর কথায়, “সিন্ডিকেটের লোকেরা মারামারি করছে জানি। ওরা এমনই করে। আমরাও বিষয়টি রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করার চেষ্টা করছি। পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেছি। এতে আমার কোনও মদত নেই।”
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, বারুইপুর-আমতলা রোডের পাশে জেলা সদর অফিস হবে বলে বছর দু’য়েক আগে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। তার পরেই ওই এলাকায় জমি দখলের জন্য একাধিক সিন্ডিকেট মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষীদের গ্রেফতার করা হবে।” |