নদিয়া সিপিএম
‘গতি’ আনতে রাতারাতি জেলা সম্পাদক পরিবর্তন
জেলা সম্মেলনের তিন সপ্তাহের মধ্যে নদিয়ার সম্পাদক বদল করল সিপিএম। সত্তরোর্ধ্ব আশু ঘোষের জায়গায় নতুন জেলা সম্পাদক হলেন মধ্য চল্লিশের সুমিত দে। দলীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, জেলায় দলের কাজকর্মে ‘গতি’ আনতেই এই পরিবর্তন। তবে জেলা সম্মেলনের এত অল্প দিনের মধ্যে সিপিএমের জেলা কমিটির বৈঠক করে সম্পাদক পরিবর্তনের নজির সাম্প্রতিক কালে বিশেষ নেই।
আশু ঘোষ
সুমিত দে
এর আগে পুরুলিয়া এবং কোচবিহারে দলের দুই প্রবীণ জেলা সম্পাদক নকুল মাহাতো এবং চণ্ডী পাল সরে দাঁড়িয়েছেন। তবে বয়স এবং শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁদের ‘অব্যাহতি’ দেওয়া হয়েছে জেলা সম্মেলনেই। আর নদিয়ার ক্ষেত্রে আশুবাবুকে সম্মেলন থেকে ‘অন্তর্বর্তী সম্পাদক’ করে কিছু দিন পরেই সরিয়ে দেওয়া হল। সিপিএম সূত্রের ব্যাখ্যায়, দল পরিচালনায় ‘ব্যর্থতা’-সহ আরও কিছু অভিযোগ আশুবাবুর বিরুদ্ধে আগেই ছিল। কিন্তু গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বে দীর্ণ নদিয়া জেলায় সম্মেলনে ‘সমস্যা’ এড়াতে তখন সম্পাদক বদল না-করে পরে পরিবর্তন করা হল। জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুমিতবাবু নতুন জেলা সম্পাদক হওয়ার পরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু বুধবার বলেছেন, “সংগঠনে এখন শুধু গতি চাই। জেলায় এমন এক জন নেতাকে দরকার, যিনি সারা জেলা ছুটে বেড়াতে পারবেন। সে জন্যই সর্বসম্মতিক্রমে সুমিত দে’র নাম ভাবা হয়েছে।” তিন সপ্তাহের মধ্যেই পরিবর্তনের প্রয়োজন হল কেন? বিমানবাবুর জবাব, “দলে তারুণ্যকে প্রধান্য দেওয়া হচ্ছে। সুমিতকে নির্বাচনের সেটাই মূল কারণ।
জেলা সম্পাদক নির্বাচন সংক্রান্ত এ দিনের বৈঠকে বিমানবাবুর সঙ্গেই কৃষ্ণনগরে এসেছিলেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির দুই সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র এবং মৃদুল দে। বৈঠকে আশুবাবুই সুমিতবাবুর নাম প্রস্তাব করেন। প্রস্তাব সমর্থন করেন জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা প্রাক্তন জেলা সভাধিপতি রমা বিশ্বাস। এর পরেই ‘সর্বসম্মতিক্রমে’ সুমিতবাবুর নাম সম্পাদক হিসাবে ঠিক হয়।
দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, “গত জেলা সম্মেলনেই শারীরিক অক্ষমতার কারণে আশুবাবুকে ওই পদে না-রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তাঁর আমলে দলীয় কর্মীদের মধ্যে কেমন জড়তা এসে গিয়েছিল। সম্মেলনের আগে থেকেই সুমিতবাবুর পাশাপাশি সম্পাদকমণ্ডলীর দুই সদস্য রমা বিশ্বাস এবং এস এম সাদির নাম উঠতে থাকে।” তবে শেষ পর্যন্ত গোষ্ঠী-কোন্দল এড়াতে সম্মেলনে কোনও ‘ঝুঁকি’ নিতে চাননি বিমানবাবুরা। পরে ‘গ্রহণযোগ্যতা’র ভিত্তিতে সুমিতবাবুকেই বাছা হয়েছে।
সুমিতবাবু দলীয় সদস্যপদ পান ১৯৮৪ সালে। জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে এসেছেন বছর পাঁচেক আগে। এত অল্প সময়ে ও এত কম বয়সে জেলা সম্পাদকের ভার নেওয়ার নজিরও দলে বিশেষ নেই। কল্যাণীর বাসিন্দা, দলের সর্বক্ষণের কর্মী সুমিতবাবু বলেন, “দল যে দায়িত্ব দেবে, তা-ই মেনে নেব। আমার প্রধান লক্ষ্য করিমপুর থেকে কল্যাণীসব জায়গার সকলকে নিয়ে কাজ করা।”
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রনেতা হিসেবেই সুমিতবাবুর আত্মপ্রকাশ। দু’বার এসএফআইয়ের জেলা সভাপতিও হয়েছেন তিনি। ২০০২ সালে কল্যাণী জোনাল কমিটির সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার আগেই তিনি অবশ্য জেলা কমিটির সদস্য হয়ে গিয়েছিলেন। সেই সময় দলের ‘দাপুটে নেতা’ অলোকেশ দাসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কে ‘চিড়’ ধরে। ২০০৭ সালে জেলা সম্মেলনে সুমিতবাবুর নাম সম্পাদক হিসেবে উঠতেই বিরোধিতা করেছিলেন অলোকেশবাবু। পাল্টা প্যানেল দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ওই বছরই ‘উপদলীয় কার্যকলাপের’ অভিযোগে অলোকেশবাবুকে রাজ্য কমিটি এবং সম্পাদকমণ্ডলী থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত বৃত্ত সম্পূর্ণ হল এখন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.