ষোলো ঘন্টার মধ্যেই বিক্ষোভের ছায়াছবি শেষ। ওই একই মাঠে মেহতাব, পেন, টোলগেরা বেশ নিশ্চিন্তেই প্র্যাক্টিস করে গেলেন বুধবার সকালে। ধারেকাছে তেমন সমর্থক ছিল না। যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা শান্ত।
ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের মুখেই শুধু ক্ষোভ। হাবভাবে বুঝিয়ে দিলেন, সমর্থকরা তাঁর গায়ে থুতু দেওয়ার ঘটনায় তিনি প্রচণ্ড বিরক্ত।
তিনি মনে করছেন, একটা জয় পেলেই সব কিছু আবার আগের মতো হয়ে যাবে। এবং অবিলম্বে চাইছেন এক মনোবিদ। তাঁর কথায়, “আত্মবিশ্বাস বাড়াতে ছ’সাত জন ফুটবলারকে মনোবিদের কাছে নিয়ে যাওয়া দরকার।”
বুধবার সকালে অনুশীলনের পরে লাল-হলুদের ব্রিটিশ কোচ বললেন, “সমর্থকেরা জয় ছাড়া আর কিছুই বোঝে না। কিন্তু হার-জিত তো ফুটবলের একটা অঙ্গ। এই দল নিয়েই যখন ট্রফি জিতেছি, তখন মাথায় তুলে রেখেছে। আমার বিশ্বাস একটা ম্যাচ জিতলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। তবে মাঠে বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে, যা একেবারেই হওয়া উচিত ছিল না।”
মর্গ্যানের মতোই বিরক্ত মেহতাব হোসেন। তবে থুতু ছোঁড়ার জন্য নয়, মঙ্গলবার ম্যাচের পরে তাঁকে নিয়ে বিশ্বাসঘাতকের স্লোগান ওঠায়। এ দিন মেহতাব বলছিলেন, “মোহনবাগানের থেকে টাকা নিয়ে খেলেছি, এ সব অভিযোগের কোনও মানে হয় না। ভীষণ কষ্ট পেয়েছি।” যদিও মেহতাব মেনে নিলেন, “খারাপ খেলেছি বলেই হেরেছি। কোনও ছোট দলের কাছে চার গোল আগে কখনও খাইনি। মাঝমাঠের ব্যর্থতায় ভুগছে গোটা দল। চোট সারিয়ে আমি দলে তো ফিরেছি তবে এখনও পুরোপুরি ফিট হইনি।” পাশেই দাঁড়িয়ে অধিনায়ক সঞ্জু প্রধান আবার বললেন, “মা যদি সন্তানকে কখনও বকাবকি করে, তা হলে সন্তান কি মায়ের উপর রেগে যায়? সমর্থকেরা আমাদের ভালবাসে। ওদের আবেগকে আমরা সম্মান করি। খুব তাড়াতাড়ি এই খারাপ সময় কেটে যাবে।” |
আগের দিন ফুটবলারদের যখন মাঠে আটকে রাখা হয়েছিল, তখন এক জন বড় কর্তাকেও দেখা যায়নি তাঁদের দ্রুত বের করে আনতে। তাঁরা সবাই তখন তাঁবুর ভিতরে। পরে ড্রেসিংরুমে ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলেন সচিব। এ দিনও প্র্যাক্টিস শেষে প্রত্যেক ফুটবলারের সঙ্গে আলাদা আলাদা আলোচনা করতে দেখা গেল ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম কর্তা দেবব্রত সরকারকে। কখনও মাঠে, কখনও আবার ড্রেসিংরুমের ভিতরেও। সারাক্ষণ পেন-টোলগেদের ‘ভোকাল টনিক’ দিয়ে গেলেন। দীর্ঘক্ষণ কথা বললেন মর্গ্যানের সঙ্গেও। বাদ গেলেন না গোলকিপার কোচ অতনু ভট্টাচার্য এবং সহকারী কোচ রঞ্জন চৌধুরী এবং অ্যালভিটো ডি’কুনহা। জয়ের রাজপথে ফিরতে পুণে এফ সি ম্যাচকেই পাখির চোখ করেছে ইস্টবেঙ্গল। মর্গ্যান বললেন, “শনিবারের ম্যাচটা যে করেই হোক জিততে চাই। পুণে এফ সি ম্যাচে পুরো শক্তি নিয়ে নামব।” |