ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষীকে সঙ্গে নিয়েই মঙ্গলবার রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজে গেলেন সদ্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শত্রুঘ্ন সিংহ। এই কলেজেই রসায়নের শিক্ষক ছিলেন শত্রুঘ্নবাবু। এ বার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পাওয়ার পরে কেন নিরাপত্তা রক্ষী চাইলেন? শত্রুঘ্নবাবু বলেন, “আগের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপ দে সরকার নিগৃহীত হওয়ার পরে নিরাপত্তার অভাব বোধ হচ্ছেই। তাই কিছুদিনের জন্য ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী চেয়ে জেলা পুলিশের কাছে আবেদন করেছিলাম।” |
গত বৃহস্পতিবার দিলীপবাবুর অফিস ভাঙচুর করে তাঁকে লাঠি-রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। নিগৃহীত অধ্যক্ষ লিখিতভাবে এফআইআর করেন, তৃণমূলের স্থানীয় নেতা তিলক চৌধুরী ও তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক প্রিয়ব্রত দুবের নেতৃত্বে তাঁকে প্রাণে মারার চেষ্টা হয়েছে। অথচ তিলকবাবুদের বিরুদ্ধে পুলিশ ‘লঘু’ ধারায় মামলা রুজু করে বলে অভিযোগ। দু’জনেই জামিন পান। তারপর থেকে ওই ঘটনার আতঙ্ক এখনও কলেজ থেকে যায়নি। কলেজে পুলিশ মোতায়েন হয়েছে। রায়গঞ্জে অধ্যক্ষ নিগ্রহের ঘটনায় ক্ষোভ বাড়ছে উত্তরবঙ্গের বিদ্বজ্জনদের মধ্যে। শিলিগুড়ি কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়ে চিঠি পাঠান পরিবর্তনপন্থী বিদ্বজ্জন হিসেবে পরিচিত সৌমেন নাগ। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব সৌমেনবাবু ইস্তফা পত্র প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করেছেন।
তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ ছিল, দিলীপবাবু তাঁদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছেন। শত্রুঘ্নবাবু কলেজ মহলে পরিবর্তনপন্থী শিক্ষক হিসেবে পরিচিত। ছাত্র পরিষদের কলেজ ইউনিটের কার্যকরী সদস্য সুভাষ ঘোষ বলেন, “নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ। তিনি একটি স্কুল পরিচালন সমিতির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তাই কলেজ পরিচালনার ক্ষেত্রে তাঁর নিরপেক্ষতা নিয়ে সংশয় রয়েছে।” তবে এ দিন রায়গঞ্জ কলেজে গিয়ে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অরুণাভ বসু মজুমদার বলেন, “একটি ছাত্র সংগঠন অধ্যক্ষ পক্ষপাতিত্ব করবেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। আমি তাঁদের আশ্বস্ত করেছি।” শত্রুঘ্নবাবু এ দিন বলেছেন, “আমার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক পরিচয় থাকতেই পারে। তবে, শিক্ষার স্বার্থে নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ ভাবেই কলেজ পরিচালনা করব।” |