বিয়ে ভাঙতে চাপ এবং হুমকি দম্পতিকে, অভিযুক্ত ২ বিধায়ক
প্রাপ্তবয়স্ক তরুণ-তরুণীর বিয়েতে ফের রাজনীতির নাক গলানোর অভিযোগ! এবং অভিযুক্ত শাসক দলেরই দুই বিধায়ক।
দক্ষিণ দিনাজপুরের চোপড়ার কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল বিধায়ক হামিদুর রহমান এবং তপনের তৃণমূল বিধায়ক বাচ্চু হাঁসদার বিরুদ্ধে তাঁদের বিয়ে ভাঙার জন্য হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন সন্দীপ সরকার ও তাঁর স্ত্রী নাসিমা ইয়াসমিন। দুই বিধায়কই হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে ওই দম্পতি জানিয়েছেন, মাসখানেক আগে তাঁরা আইন মেনে বিয়ে করেন। তার পর থেকেই মেয়ের বাপের বাড়ির লোকজন বিয়ে ভাঙার চাপ দিচ্ছেন। নাসিমার পরিবারের পক্ষে সন্দীপের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগও হয়েছে। থানার অভিযোগে দুই বিধায়কের নামোল্লেখ না করলেও মঙ্গলবার রাজ্য মহিলা কমিশনের কাছে দায়ের করা অভিযোগে হামিদুর রহমান ও বাচ্চু হাঁসদার নাম দিয়েছেন নাসিমা। এমনকী বাচ্চুবাবু সন্দীপের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে চোপড়া থানায় আত্মসমর্পণের পরামর্শও দিয়েছেন বলেও অভিযোগ। শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি মোবাইল সংস্থার কর্মী, বছর ছাব্বিশের সন্দীপ ওই ঘটনার জেরে বাড়ি থেকে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন। মঙ্গলবার নাসিমা গোটা ঘটনা রাজ্য মহিলা কমিশনকেও জানিয়েছেন। কমিশনের সদস্য জ্যোৎস্না অগ্রবাল বলেছেন, “চেয়ারপার্সনের সঙ্গে আলোচনার পরে অভিযোগ খতিয়ে দেখে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিয়ের পর ঘরবন্দি সন্দীপ-নসিমা। তপনে অমিত মোহান্তের তোলা ছবি।
সন্দীপের সঙ্গে চোপড়া থানার আশারুবস্তি এলাকার বাসিন্দা, স্নাতক নাসিমার সঙ্গে মোবাইল ফোনের সূত্রে আলাপ ও ঘনিষ্ঠতা। গত ২১ নভেম্বর তাঁরা গোপনে বিয়ে করেন এবং ২৮ ডিসেম্বর ‘স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট’-এ ওই বিয়ে নথিভুক্ত হয়। সম্প্রতি সন্দীপ স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। এ দিন তপনের সেই সালাস গ্রামের বাড়িতে বসেই সন্দীপ ও নাসিমা অভিযোগ করেছেন, “আমাদের বিবাহিত জীবনে কিছু রাজনৈতিক নেতা ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করে চলেছেন। হুমকি দিচ্ছেন। তাতে আমরা প্রাণনাশের আশঙ্কা করছি।” জেলা পুলিশ সুপার চিরন্তন নাগ বলেন, “আমরা ঘটনার দিকে নজর রেখেছি। সমস্যা হলে ওই দম্পতিকে তপন থানার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।”
তার পরেও ওই দম্পতির উদ্বেগ কাটছে না। আর তা যে খুব অমূলক নয়, সেটা স্পষ্ট হয়েছে চোপড়ার নির্দল বিধায়ক হামিদুর রহমানের কথায়। যিনি বলছেন, “কোনও হুমকি দিইনি। তবে ওই ছেলেটি আমাদের মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছে। চোপড়া থানায় মামলা হয়েছে। ওকে আগে আদালতে এসে নথিপত্র জমা দিয়ে প্রমাণ করতে হবে, মেয়ে স্বেচ্ছায় ওকে বিয়ে করেছে। তার পর অন্য কথা!” আর তপনের তৃণমূল বিধায়ক তথা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক স্কুল সংসদের চেয়ারম্যান বাচ্চু হাঁসদার দাবি, “মেয়েটির বাবা এবং হামিদুর সাহেব আমাকে বলায় ওঁদের (সন্দীপ ও নাসিমা) সঙ্গে দেখা করেছিলাম। ছেলেটির নামে অভিযোগ হয়েছে, সেটাও উল্লেখ করেছিলাম। ওই সময়ে মেয়েটি প্রকাশ্যে আত্মহত্যার হুমকি দিলে আমরা সরে আসি। বিষয়টি নিয়ে আর মাথা ঘামাতে রাজি নই।”
স্থানীয় বিধায়কের কাছে দ্বারস্থ হয়েও হতাশ ওই দম্পতি। বছর পঁচিশের নাসিমার কথায়, “কিছুদিন আগে বাচ্চু হাঁসদার কাছে শ্বশুরবাড়ির সকলকে বাঁচানোর আর্জি জানাই। আর্জি খারিজ করে উনি আমাকে বাড়ি ফিরে যেতে জোরাজুরি করেন। আত্মহত্যার হুমকি দেওয়ায় পিছু হটেন। কিন্তু, আড়ালে চাপ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।” নাসিমার বাবা মহম্মদ ফারাজুল ইসলাম বলেন, “মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। কিছু বলতে পারব না।”
দম্পতির পাশে কেন দাঁড়ালেন না? বাচ্চুবাবুর জবাব, “এটা ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমরা কেন নাক গলাব?” সে ক্ষেত্রে মেয়ের বাপের বাড়ির হয়ে কেন সওয়াল করতে গিয়েছিলেন, তার উত্তর তপনের বিধায়কের কাছে মেলেনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.