কোথাও অভিযোগ, গাইড ওয়াল তৈরির জন্য বরাদ্দ টাকা নয়ছয় হয়েছে। কোথাও অভিযোগ, কংক্রিটের রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রে ‘দলবাজি’ হচ্ছে। শিলিগুড়ির অদূরে মাটিগাড়ার শিমুতলায় শিলিগুড়ির মহকুমা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ বিকাশকলি বিশ্বাসের নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়ন নিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভ বাড়ছে। ইতিমধ্যেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে তদন্তের দাবি তোলা হয়েছে। দলের মাটিগাড়া ব্লক সভাপতি বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “গ্রামের লোকেরা যে গাইড ওয়াল তৈরি করেছে সেটাও প্রকল্পের কাজের মধ্যে জুড়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। আমাদের দলের সমর্থকদের বাড়ির সামনে কংক্রিটের রাস্তা তৈরি হচ্ছে না। তদন্ত না-হলে লাগাতার আন্দোলনে নামা হবে।” তদন্তের দাবি তুলেছেন মাটিগাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা কংগ্রেস নেতা অর্ধেন্দু বিশ্বাসও। তিনি বলেন, “গ্রাম পঞ্চায়েতকে না-জানিয়েই একের পর এক প্রকল্পের নামে টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ পাচ্ছি। বাসিন্দারা গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরে এসে ক্ষোভ জানাচ্ছেন। শীঘ্রই মহকুমা পরিষদে সমস্ত অভিযোগ জানানো হবে।” অভিযুক্ত পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের অবশ্য দাবি, নিয়ম মেনে সমস্ত কাজ করানো হয়েছে। এই ব্যাপারে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের অতিরিক্ত কার্যনির্বাহী আধিকারিক সুবল রায় বলেন, “এই বিষয়ে বাসিন্দারা এখনও কোনও অভিযোগ জানাননি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।” মহকুমা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর বালাসন সেতু লাগোয়া ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে শিমুলতলায় যাওয়ার কাঁচা রাস্তার দু’পাশে গাইড ওয়াল তৈরির জন্য দ্বাদশ অর্থ কমিশনের ৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়। জাতীয় সড়ক থেকে এলাকার বাসিন্দা কার্তিক ঠাকুরির বাড়ি পর্যন্ত ওই গাইড ওয়াল তৈরি করা হবে। মঙ্গলবার এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, বেশির ভাগ বাসিন্দা বর্ষার জল আটকাতে নিজেরাই গাইড ওয়াল তৈরি করে নিয়েছেন। প্রকল্পের টাকা কোথায় খরচ হল? পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের বক্তব্য, “অনেকে গাইড ওয়াল তৈরি করে নিয়েছেন সে কথা ঠিক। সেই জন্য কার্তিক ঠাকুরির বড়ির পরেও আরও অনেকটা এলাকা জুড়ে গাইড ওয়াল তৈরি করা হয়েছে।” পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের ওই যুক্তিও মানতে রাজি নন বাসিন্দারা। এলাকার তৃণমূল অঞ্চল যুব সভাপতি দুলাল রায় বলেন, “সরকরি টাকায় কতটা গাইড ওয়াল তৈরি হয়েছে তা মেপে দেখা হলেই তো কে সত্যি বলছেন স্পষ্ট হয়ে যাবে।” ওই এলাকাতেই দ্বাদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ ৭ লক্ষ টাকায় বালাসন নদীর বাঁধের উপরে কংক্রিটের ৮ ফুটের রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। সেখানেও ‘রাজনীতি’ করার অভিযোগ উঠেছে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোথাও রাস্তা ৭ ফুট চওড়া। কোথাও ৯ ফুট। এমনকী, দীপক বায়েন এবং ক্ষিতীশ বিশ্বাসের বাড়ির সামনে প্রায় দৈর্ঘ্যে প্রায় ১০ ফুট পরিমাণ জায়গা কংক্রিট না-করেই পরের অংশে ঢালাই করা হয়েছে। ক্ষিতীশবাবু বলেন, “৮ ফুট জমি ছেড়ে দেওয়ার পরেও আমায় বাড়ি ভাঙতে বলছে। রাজি না-হওয়ায় ঢালাই করেনি। আসলে তৃণমূল করি বলে বাড়ির সামনে রাস্তা তৈরি করা হয়নি।” পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের পাল্টা যুক্তি, “ওই এলাকায় কংক্রিটের কাজ নিয়ে তৃণমূলই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অপপ্রচার করছে। ক্ষিতীশবাবু এবং দিলীপবাবু প্রথমে জমি ছাড়তে রাজি হননি। পরে ওই দুটি বাড়ির সামনে ঢালাই হবে।” |