প্রবীণ-নবীন সমন্বয় দাবি ডিওয়াইএফে
প্রবীণদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে অপেক্ষাকৃত তরুণদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেওয়ার দাবি উঠল সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই-র দার্জিলিং জেলা সম্মেলনে। গত শনিবার এবং রবিবার শিলিগুড়ি লাগোয়া শালুগাড়া এলাকায় সংগঠনের ১৬-তম সম্মেলন হয়েছে। সেখানে পাহাড় তো বটেই, সমতলের নেতারা সাম্প্রতিক রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রসঙ্গ তুলে এনে ওই দাবি তোলেন। রাজ্যের জেলায় জেলায় সিপিএমের জেলা সম্মেলন চলছে। পুরুলিয়া এবং কোচবিহার জেলা বাদ দিলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুরানো ‘মুখ’দের ফের দায়িত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। এতে দলের নতুন করে বিরোধী হিসাবে মানুষের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকজন যুব নেতা। তাঁরা জানিয়েছেন, ৭০ দশকে বাম আন্দোলনকে শক্তিশালী করার মাধ্যমেই রাজ্যে বাম সরকার প্রতিষ্ঠা হয়। তার পরে ৩৪ বছর কেটে গিয়েছে। সরকার এবং দলের নানা ভুল, ত্রুটি জেরে আজ বামপন্থীরা বিরোধী আসনে। নতুন করে দল এবং সংগঠনকে সাজা’র কথা বলা হচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে নেতৃত্বে তুলে আনার কথাও উঠে এসেছে। কিন্তু আদতে তা পুরোপুরি হচ্ছে না। বর্তমান তৃণমূল-কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন করতে তরুণ প্রজন্মকেই দরকার। এই ক্ষেত্রে প্রবীণদের অভিজ্ঞতা বা ‘গাইড’ হিসাবে পেতে চাইছেন ওই নেতারা। এবারের সম্মেলনে তৃতীয়বারের জন্য জেলা সম্পাদক নির্বাচন হয়েছেন শঙ্কর ঘোষ। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সম্মেলনে রাজ্য রাজনীতির বর্তমান অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নতুন রাজ্য সরকার সামান্য কয়েক মাসে সর্বক্ষেত্রে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে ফেলেছে। মানুষের স্বার্থে এখন বামপন্থীদের টানা আন্দোলনে নেমেছেন। এই ক্ষেত্রে প্রবীণদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তরুণ প্রজন্ম অবশ্যই সামনের সারিতে রাখতে হবে।” দলীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্মেলন শেষ হয়েছে। তাতে পঞ্চমবারের জন্য জেলা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন প্রবীণ সাঙ্গোপাল লেপচা। ওই পদের জন্য অপেক্ষাকৃত তরুণ বেশ কয়েকজনের নাম উঠে এলেও পাহাড়ের বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ঝুঁকি নেয়নি সিপিএম। একই ভাবে মালদহে জীবন মৈত্র এবং উত্তর দিনাজপুরে বীরেশ্বর লাহিড়ী ফের জেলা সম্পাদক হয়েছেন। জলপাইগুড়িতে মানিক সান্যালকে ফের দল ওই পদে বসাবে তা মোটামুটি ঠিক। এই অবস্থায় দলের নতুন কোনও ‘মুখ’ মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে কী না তা নিয়ে সন্দিহান দলের একাংশের পাশাপাশি যুব নেতারা। এই সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে সম্মেলনে। এবারের ডিওয়াইএফআই-র জেলা সম্মেলনে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক দাঁড়িয়েছেন সংগঠনের সদস্য সংখ্যা। গত এক বছরে সংগঠনের সদস্য সংখ্যা প্রায় ২৩ হাজার কমে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। মূলত পাহাড়ের সিপিএমের সংগঠন কার্যত শেষ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি জেলার গ্রামীণ এলাকায় যুবক যুবতীদের মধ্যে নতুন সরকারের ‘প্রভাব’, চাকরির ‘প্রতিশ্রুতি’ এর অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন যুব নেতারা। পাশাপাশি, ব্যক্তিগত লাভ, চাকরির আশায় বেশ কিছু সদস্য সংগঠনে নাম লেখালেও তাঁরা নতুন সরকার ক্ষমতায় আসতেই আর সদস্যপদ নবিকরণ করায়নি। যুব নেতারা জানিয়েছেন, জেলার পাহাড়ের শিক্ষিত শ্রেণির তরুণ-তরুণীদের মধ্যে মোর্চার কাজকর্ম সম্পর্কে ধীরে ধীরে বিরূপ মত পোষণ করছেন। অনেক ক্ষেত্রে তাঁরা সরবও হচ্ছেন। সম্মেলনে মোর্চার হুমকির পরেও ৬৫ জন তরুণ-তরুণী পাহাড় থেকে প্রতিনিধি হিসাবে এসেছিলেন। নতুন পরিস্থিতি মোকাবিলায় টানা আন্দোলন এবং সংগঠনে পাহাড়ের নেতাদের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। বিজনবাড়ির যুব নেতা রমেশ কাটারিয়াকে সংগঠনের জেলা সভাপতি করা হয়েছে। দ্রুত সাংবিধানিক স্বীকৃতি সম্পন্ন ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ) গঠনের দাবিও সম্মেলনে তোলা হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.