রাত পোহালেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত ত্রিপুরা। মুজিবকন্যার বহু প্রতীক্ষিত এই সফর ঘিরে আবেগ যতখানি, তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তাও ততটাই। যেখানে যেখানে হাসিনার যাওয়ার কথা সর্বত্রই নেওয়া হচ্ছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ঢাকা থেকেও হাসিনার জন্য এসেছে বিশেষ বাহিনী। আসছেন ভারতের উপরাষ্ট্রপতি এম হামিদ আনসারিও।
হাসিনা থাকবেন আগরতলায় সরকারি অতিথিশালায় । উপরাষ্ট্রপতি আনসারি রাজভবনে। দু’টি ভবনের আনাচে কানাচে এ দিন মেটাল ডিটেক্টর ও স্নিফার ডগ নিয়ে তল্লাশি চালানো হয় বার বার। বিমানবন্দরের লাউঞ্জ, অসম রাইফেলসের মাঠ যেখানে হাসিনাকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়ার কথা, ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর সর্বত্রই বিস্ফোরক সন্ধানী সারমেয়রা প্রতিটি ইঞ্চি শুঁকে বেড়িয়েছে। হাসিনা ও আনসারির কনভয় যাবে রাজ্য অতিথিশালা থেকে শুরু করে, ভিআইপি রোড, নর্থ গেট, কর্ণেল চৌমুহনি, বটতলা হয়ে সূর্যমণিনগরে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত।
শেখ হাসিনা ও হামিদ আনসারির ছবি-সহ বাংলাদেশ এবং ভারতের জাতীয় পতাকায় মুড়ে দেওয়া হচ্ছে যাত্রাপথ। দুই অতিথিকে স্বাগত জানিয়ে প্রতিটি তোরণেই জ্বলজ্বল করছে দু’দেশের মৈত্রী দীর্ঘজীবী হওয়ার বার্তা। কয়েকটি তোরণে হাসিনা ছাড়াও শেখ মুজিবর রহমানের ছবিও রয়েছে। হাসিনার কর্মসূচি-কেন্দ্রিক জায়গাগুলিকে সর্বত্রই ঝাঁ ঝকঝকে করে তোলা হচ্ছে। এমনকী পথের সেতু, বিদ্যুতের পিলারে পড়ছে নতুন রঙের প্রলেপ। রাস্তা মসৃণ ও পরিচ্ছন্ন রাখতে নাওয়াখাওয়া ফেলে কাজ করছে পুরসভা।
মহাকরণ সূত্রে খবর, সফরকালে শেখ হাসিনার দেখভালের দায়িত্বে থাকছেন রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী জিতেন্দ্র চৌধুরী। আর উপরাষ্ট্রপতির দেখভালের দায়িত্ব পেয়েছেন অর্থমন্ত্রী বাদল চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য ঢাকা থেকেও এসেছে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী। দিল্লি থেকে আগরতলায় উড়ে এসেছে বিশেষ নিরাপত্তারক্ষীর দল। এ ছাড়া, আগরতলার বাইরেও অতিরিক্ত নিরাপত্তার দায়িত্বে রাজ্য পুলিশ ও টিএসআর বাহিনি। সাদা পোশাকের পুলিশও টহল দিচ্ছে শহরে বিভিন্ন প্রান্তে। বসানো হয়েছে ওয়াচটাওয়ার, বিশেষ বিশেষ জায়গায়।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ‘গার্ড অফ অনার’ দেওয়া হবে রাজ্য অতিথিশালায়। আগামিকাল বিকেল ৫টায় প্রজ্ঞাভবনে ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সঙ্গে হাসিনার বৈঠক হওয়ার কথা। পরদিন সকাল সাড়ে ১০টায় ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে হাসিনাকে সাম্মানিক ডি লিট উপাধি দেওয়া হবে। দুপুর দুটোয় আসাম রাইফেলসের ময়দানে রাজ্য সরকারের তরফে শেখ হাসিনাকে দেওয়া হবে নাগরিক সংবর্ধনা। উপরাষ্ট্রপতিও সমাবর্তন অনুষ্ঠানে থাকছেন। |